এএফসি কাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। শুরুতে গোল হজম করেও প্রতিবেশী ভারতের ক্লাব ওড়িশা এফসিকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা।
মালদ্বীপের ক্লাব মাজিয়ার কাছে ৩-১ গোলের হার দিয়ে এএফসি কাপ শুরু হয়েছিল কিংসের। সেই ম্যাচ খেলে ফেরার পথে শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধ করেন তপু বর্মণ, আনিসুর রহমান জিকো, শেখ মোরসালিন, তৌহিদুল আলম সবুজ ও রিমন হোসেন। এ কারণে আজকের ম্যাচের ২৩ জনের স্কোয়াডে রাখা হয়নি তাদের।
কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই বামদিক থেকে বল ধরা দোরিয়েলতন গোমেজ একজনকে কাটিয়ে শট নিলেও ওড়িশা গোলরক্ষক আমরিন্দার সিংকে পরাস্ত করতে পারেননি। ১৯ মিনিটে সংঘবদ্ধ প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল করে ওড়িশা। ডানদিকে লালদিনলিয়ানা রেন্থলেইয়ের বাড়ানো বল ধরে মরিসিও দিয়েগো বল জালে পাঠান (১-০)। গোলের পরই মিগুয়েল-দোরিয়েলতন-রবসনের সমন্বয়ে দারুণ এক সুযোগ এসেছিল বসুন্ধরা কিংসের সামনে। রবসন বক্সের মধ্যে একজনকে কাটিয়ে পোস্টে শট নিয়েছিলেন, ওড়িশার প্রথম গোলের নেপথ্য কারিগর লালদিনলিয়ানা সেটা রুখে দিয়েছেন। অবশ্য ৩৯ মিনিটেই সমতায় আসে বসুন্ধরা কিংস। ডানদিক থেকে আক্রমণে যাওয়া রবসন গোললাইনের কাছ থেকে বক্সে চীপ করেন, সামনে থাকা মিগুয়েল ফেরেইরার হেড ফাঁকা পোস্টে বল পাঠান (১-১)। ৪৫ মিনিটে ডানদিক থেকে রকিব হোসেনের ক্রস থেকে দোরিয়েলতন গোমেজের হেড বসুন্ধরা কিংসকে ২-১ গোলের লিড এনে দেয়।
বিরতির পর ওড়িশার শুরুটা ছিল দারুণ। কিংসের রক্ষণে চাপ তৈরি করলেও সুফল তুলতে পারেনি ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ক্লাবটি। বিপরীতে ৫৪ মিনিটে উল্টো গোল হজম করতে হয়েছে। রবসন রবিনিয়োর ডিফেন্স চেরা পাস ধরে আগুয়ান গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান দোরিয়েলতন গোমেজ (৩-১)। ৫৮ মিনিটে আহমেদ জাহুর ফ্রি-কিক থেকে জেরি মাউইমিংথাঙ্গার হেড পোস্টে প্রতিহত হলে রক্ষা কিংসের। ৬৬ মিনিটে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন জেরি লালরিনজুয়ালা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে আসা ক্রস ফিস্ট করেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদি হাসান, বল গিয়ে পড়ে লালরিনজুয়ালার পায়ে। বক্সের মধ্যে থেকে ফাঁকা পোস্টে বল পাঠান এ ডিফেন্ডার (৩-২)।
স্কোরলাইন ৩-২ হয়ে যাওয়ার পর রক্ষণাত্মক হয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। এ সময় কাউন্টার অ্যাটাকে একাধিক গোলের সুযোগও তৈরি করেছিল স্বাগতিকরা। ৬৮ মিনিটে তেমনই একটি প্রচেষ্টা ছিল রবসন রবিনিয়োর; তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের মধ্যে থেকে শট নিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান প্লে-মেকার, বল পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। ৩ মিনিট পর গোলরক্ষক আমরিন্দার সিংকে একা পেয়েছিলেন দোরিয়েলতন গোমেজ, কিন্তু গায়ে মেরে হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন ব্রাজিলিয়ান গোল মেশিন। খনিক বাদে গোল মিসের মহড়ায় যোগ দেন ববুরবেগ ইউলদাশভ। ৮২ মিনিটে বক্সের মধ্যে দূরের পোস্টে বল বাড়িয়েছিলেন মিগুয়েল ফেরেইরা; কিন্তু সেটা দোরিয়েলতন ও রবিনিয়োর নাগালের বাইরে ছিল। ৮৫ মিনিটে সমতার দারুণ সুযোগ এসেছিল ওড়িশার সামনে। লালরিনজুয়ালার ক্রস থেকে রয় কৃষ্ণার হেড ক্রসবারে লেগে বাইরে যায়।
শেষদিকে বসুন্ধরা কিংসকে চেপে ধরলেও সমতায় আসতে পারেনি গেল মৌসুমে সুপার কাপ জয়ী ওড়িশা এফসি। মজার বিষয় হচ্ছে, দারুণ আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের ম্যাচে প্রথম ও একমাত্র অফসাইড হয় অতিরিক্ত সময়ে এসে!
মন্তব্য করুন