স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মেসির ছায়ায় ঢাকা ডি মারিয়ার কীর্তি

ডি মারিয়া। ছবি : সংগৃহীত
ডি মারিয়া। ছবি : সংগৃহীত

আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের রোজারিও শহর। বুকে স্বপ্ন নিয়ে যে শহরে জন্ম নেয় হাজারো শিশু। স্বপ্নটা একটাই বড় মাপের ফুটবলার হওয়া। ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮, ভ্যালেনটাইন্স ডেতে মা ডায়ানা হার্নান্দেজ ও পিতা মিগুয়েল ডির ঘর আলো করে জন্ম নেন তেমনই এক শিশু।

ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে ডায়ানা-মিগুয়েলের ছেলেটা। ‍দিন যত যেতে থাকে ছেলের দুরন্তপনা ততোই বাড়তে থাকে। অবশ্য দেখতে রোগা পাতলা হলেও গায়ে জোর ছিল প্রবল। তবে বাবা মায়ের মন বলে কথা। অনেকটা উদ্বিগ্ন হয়েই বাড়ির পাশের এক চিকিৎসকের পরামর্শ নেন বাবা-মা।

ছেলেকে দেখে ডাক্তার সাব বলেন, ‘ওকে ফুটবলে দিয়ে দাও। দুরন্তপনাটা ওখানেই দেখাক।’ যেই কথা সেই কাজ। বাবা-মা পরামর্শ করে দিয়ে ছেলেকে দিয়ে দিলেন ফুটবল খেলতে। সেই থেকেই ছেলেটাও স্বপ্ন দেখতে শুরু করল বড় হয়ে নামী ফুটবলারই হবেন তিনি।

তবে যে ঘরে নুন আনতেই পান্তা ফুরোয় সে ঘরে বসে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখা যে পিচঢালা রাস্তায় তপ্ত রোদে পানি দেখতে পাওয়ার মতোই মিছে। বাবা যে গরিব একজন কয়লা শ্রমিক। যিনি কিনা সন্তানকে এক জোড়া ভালো বুটই কিনে দিতে অপারগ।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নটা লালন করতে থাকেন মনে। বাবা যেমন কষ্টে ছেলের স্বপ্নটা পূরণ করতে থাকেন তেমনই বাবাকেও কয়লার কারখানায় কয়লা শ্রমিক হয়ে করেছেন সাহায্য। কয়লার কালিমাখা শরীরটা নিয়েই মেতেছেন ফুটবলে।

দুই হাজার সাত সালে অনূর্ধ্ব বিশ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে পুরো বিশ্বকে নিজের আগমনী বার্তা জানান দেন কয়লার কারখানায় হাতকে শক্ত করা সেই ছেলেটায়। তারপরই ছয় মিলিয়ন ইউরো দিয়ে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা কিনে নেয় স্বপ্নবাজ তরুণকে। ইউরোপের ফুটবলে সেই থেকেই পদচারণা শুরু। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখে দুই হাজার পনেরো পর্যন্ত চল্লিশ মিলিয়ন ইউরোতে আবারও চুক্তি নবায়ন করে বেনফিকা। তার পরেই আর্জেন্টিনার ফুটবল ঈশ্বর ম্যারাডোনা তাকে আর্জন্টিনার সুপারস্টার বলেও আখ্যা দেন।

স্পেনের জায়ান্ট ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা কিংবা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইতালিয়ান ক্লাব যুভেন্তাস, ফ্রান্সের জায়ান্ট পিএসজি সব বড় বড় ক্লাবের জার্সি উঠেছে তার গায়ে।

ম্যারাডোনা-পরবর্তী যত সাফল্য আছে আর্জেন্টিনার তার প্রায় বেশিরভাগেই অবদান আছে তার। ২০০৮ সালে অলিম্পিকে ফাইনালে ওঠা ও অলিম্পিকে স্বর্ণ জেতাতে একমাত্র গোলটিও তার।

শুধু কি তাই, স্মৃতির পাতায় তরতাজা ২০২১ এর কোপাতেও একমাত্র গোলটা তারই। আর লিওনেল মেসির বিশ্বকাপ জিততে পারার আসল নায়ক তো তিনিই।

জাতীয় দল, ক্লাবে অসংখ্য সাফল্য এসেছে তার হাত ধরেই। তবুও ফুটবল বিশ্বে তিনি পান না তার প্রাপ্য সম্মান। আলোচনার ক্ষেত্রে আলোচনা হয় তবে থেকে যান নিভৃতেই। যে জন্য তাকে বলা হয় সাইলেন্ট হিরো। অনেকে তাকে ডাকেন দ্য মোস্ট আনডাররেটেড ফুটবলার হিসেবেও।

এত কিছুর পরেও নিজের কাজটা করে গেছেন করে যাচ্ছেন নীরবে। কোনো অভিযোগ নেই, নেই কোনো অনুযোগ। জন্মদিনে আপনাকে সালাম। শুভ জন্মদিন আর্জেন্টিনার সাইলেন্ট হিরো, গ্রহের অন্যতম সেরা ফুটবলার আনহেল ফাবিয়ান ডি মারিয়া।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মোদি ও শেহবাজের প্রশংসা করলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রেমিককে মারধর করে প্রেমিকাকে অপহরণের ঘটনায় আটক ৩

মার্চ টু যমুনার ঘোষণা হাসনাতের

যুদ্ধবিরতির পর আগামী সপ্তাহেই মাঠে গড়াচ্ছে আইপিএল

বিএনপি নেতা হানিফ ১৫ বছর পর দেশে ফিরলেন

ছোট ভাইয়ের বাসায় যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

‘সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তায় মিডিয়া ফেলোশিপ’ পেলেন যুগান্তরের ইমন রহমান

লিটনদের আমিরাত সফরে বাধা নেই

কুমিল্লার সিনিয়র জেল সুপারকে গ্রেপ্তারের হুমকি এডিসির, অডিও ভাইরাল

জরুরি বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদ

১০

বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত : হাসনাত

১১

চট্টগ্রাম ওয়াসাকে ২৮ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

১২

গণতন্ত্র যাতে কারও হাতে জিম্মি হতে না পারে : আমীর খসরু

১৩

ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে বিএনপি নেতার হুমকি

১৪

‘নান অব আওয়ার বিজনেস’ বলেও মধ্যস্থতায় কেন যুক্তরাষ্ট্র?

১৫

সংবাদ সম্মেলন চলাকালে প্রেস ক্লাবে ছাত্রদল নেতার হামলা

১৬

জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কে চ্যাম্পিয়ন ঢাবির জসীমউদদীন হল

১৭

একনজরে আজকের ভারত-পাকিস্তান ঘটনাপ্রবাহ

১৮

বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে পূজা উদযাপন পরিষদের শুভেচ্ছা

১৯

কেন জরুরি বৈঠক, জানালেন প্রেস সচিব

২০
X