‘সোর্সিং বিয়ন্ড বর্ডার্স’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হলো ‘বিপিও সামিট ২০২৩’। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) এর উদ্যোগে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন আয়োজিত হচ্ছে।
শনিবার (২২ জুলাই) জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আগামীকাল রোববার বিপিও সামিটের পর্দা নামবে।
এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিপিও একটি উদীয়মান ক্ষেত্র। তাই বিপিও’কে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক বিস্তার ও বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে দুই দিনের এই মেলা বড় ভূমিকা রাখবে; বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে সুযোগ দেবে।
বিপিও’তে নারীদের সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিরীন শারমিন বলেন, ঘরে বসেই নারীরা এই পেশায় আসতে পারে। তাদের মেধা ও শ্রম দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আউটসোর্সিং পুল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এআই বিশ্বজুড়েই আলোচিত ও বাস্তবতা। এটা আগামীতে আমাদের নানা ভাবে প্রভাবিত করবে। তবে এর পেছনে রয়েছে একজন মানুষ। তাই মানুষের প্রয়োজন কোনো দিনই ফুরাবে না। এআই আমাদের কাজ খেয়ে ফেলবে না। তাদেরকে এই মানুষরাই সৃষ্টি করবে। তাই নতুন দক্ষতা উন্নয়নে সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাই কোনো কোন ক্ষেত্রে এই রূপান্তরে মনযোগী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে সনদ থেকে কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করছি। প্রাথমিকে কোডিং শেখানোর মাধ্যমে সরকার এখন ‘প্রবলেম সলভার’ তৈরি করছে। ভবিষ্যত স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে স্মার্ট কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই। এ জন্য সাইবার সিকিউরিটি, চিপ ডিজাইনিং, ব্লকচেইন, এআই এর মতো ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে ১ লাখ দক্ষকর্মী গড়ে তুলতে কাজ শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট মহাসড়ক প্রস্তুত করেছে। বিদ্যুতের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। এর ফলে বিপিও খাতে ২০ লাখ কর্মসংস্থান সম্ভব হয়েছে। গত পাঁচ থেকে ১০ বছরে হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক থেকে বড় অংকের রপ্তানি আয় করা সম্ভব হচ্ছে। এখন দেশের ৫৭ বিশ্ববিদ্যালয়েই গবেষণা ও উদ্ভাবন ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিপিও সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল এবং বাক্কো’র সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ এবং সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন।
বিপিও সম্মেলনের প্রথম দিন বিভাগীয় কমিশনারদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বর্ষসেরা বিপিও ব্যক্তি হিসেবে নাজমুল হক মোল্যাকে পুরস্কৃত করা হয়। নাজমুল হক মোল্যা এক হাতেই ডেটা এন্ট্রি করে থাকেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে প্রথম বিভাগীয় সম্মেলনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সহযোগিতার প্রশংসা করেন বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বিপিও খাতের অগ্রিম করপোরেট কর মওকুফ সুবিধা ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।
মন্তব্য করুন