কান্দুপট্টি যৌনপল্লীসহ কয়েকটি যৌনপল্লী উচ্ছেদ ও নানা কারণে ভাসমান যৌনকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার, বাড়ি ও হোটেলনির্ভর যৌনকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বহু শ্রেণি বিভাগে নির্ভর হচ্ছে যৌন কর্মীরা। তাদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমন তারা সচেতনতা সৃষ্টির বলয়ের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ‘যৌনকর্মীদের অধিকার আন্দোলন সমর্থনে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা।
তারা বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ মৌলিক অধিকার আদায়ের ঝুঁকিতে পড়ছেন যৌনকর্মীরা। পেশাগত কারণেই ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তারা কর্মহীন হয়ে পড়ে কিন্তু সমাজসেবা অধিদপ্তরের বয়স্কভাতা দেওয়া হয় ৬২ বছর বয়সে। ফলে তারা এর আওতায় আসতে পারে না।
তাদের জন্য বিশেষভাবে ভাতা প্রদানের আহ্বান জানান মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বক্তারা।
তারা বলেন, নিজেদের ইচ্ছে মতো ইন্টারনেট ব্যবহার করে যারা যৌনকর্মী হচ্ছে, তারা জানতে পারছে না যথাযথভাবে কীভাবে নিজেদের নিরাপদে রাখতে হয়। তাদের বাসস্থান, সন্তানদের শিক্ষা, চিকিৎসায় নেই তেমন সুযোগ।
এ সময় যৌনকর্মীর শিশুদের জন্মনিবন্ধন শুধু মায়ের নামে করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান করা হয়।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, যৌনকর্মীদের ১০ জনের মধ্যে ২ জনের এইডস ধরা পড়ছে। কারণ তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন নয়। আবার তারা চিকিৎসা করাতেও পারছে না, মারা গেলে যৌনকর্মীদের কবর দিতে সমস্যা হয়। এক সময় তাদের ভাসিয়ে দেওয়া হতো। নারায়ণগঞ্জের টানবাজার, কান্দুপট্টি যৌনপল্লি উচ্ছেদের পর সারা শহরেই ভাসমান যৌনকর্মীদের দেখা যায়। তাদের পুনর্বাসন ও অধিকার আদায়ে কাজ করা জরুরি। পুলিশ ও মাস্তান দ্বারা যৌনকর্মীরা আরও বেশি সহিংসতার শিকার হয়। যৌনকর্মীর ছেলেমেয়েদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার তাগিদ দেন বক্তারা।
নারীপক্ষের সদস্য মাহবুবা মাহমুদ লীনার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নারী পক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী শিরীন হক, সভানেত্রী গীতা দাস, মাহবুবা মাহমুদ লীনা, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের খায়রুজ্জমান কামাল, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ সংবাদদাতা এনামুল কবীর রূপম, বাংলাদেশ ওমেন্স হেলথ কোয়ালিশনের নির্বাহী পরিচালক শরীফ মুস্তাফা হেলাল, যৌনকর্মী ও উল্কা নারী সংঘের হেনা আক্তার, কল্যাণময়ী নারী সংঘের রিনা আক্তার, ট্রান্স জেন্ডার ও সম্পূর্নার জয়া সিকদারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।
শ্যামল দত্ত বলেন, যৌনকর্মীদের কাজ থেকে আমরা একটু দূরে সরে গেছি। আমাদের পরিকল্পিতভাবে কাজ করে তাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মন্তব্য করুন