বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৫ পিএম
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘বাংলাদেশে ৮৭ শতাংশ নারী ঘরে নির্যাতনের শিকার’

শনিবার সকালে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে নারীদের নেটওয়ার্ক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা। ছবি : কালবেলা
শনিবার সকালে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে নারীদের নেটওয়ার্ক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা। ছবি : কালবেলা

নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ও জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দ্রুত সরকারি পরিপত্র জারি করা, বার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তি, বাজেট বরাদ্দ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করা জরুরি। এ কাজে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা, নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোসহ ব্যাপকভিত্তিক প্রচার চালানোকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান নারী, শান্তি ও নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় সংলাপে বিশিষ্টজনেরা।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উদ্যোগে ও ইউএন ওমেনের সহযোগিতায় শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নারী শান্তি ও নিরাপত্তায় জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে নারীদের নেটওয়ার্ক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় সভাপ্রধান ছিলেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর। প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (ইউএন উইং) মো. এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী ও বিশেষ অতিথি ইউএন ওমেনের ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ নবনীতা সিনহা। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের শাহনাজ সুমির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অংশ নেন ইউএন ওমেনের প্ল্যানিং, মনিটরিং অ্যান্ড রিপোর্টিং এনালিস্ট তানিয়া শারমিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মো. আরিফুর রহমান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল কাদের শেখ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ওসমান ভূঁইয়া।

সভাপ্রধানের বক্তব্যে রোকেয়া কবীর বলেন, বাংলাদেশের নারীরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হয়। নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রায় ৮৭ শতাংশ নারী ঘরে নির্যাতনের শিকার হয়। এক্ষেত্রে ধর্মও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মসজিদে ওয়াজে নারী বিদ্বেষী কথার্বাতা বলা হয়। নির্বাচনী সহিংসতায় নারী ও শিশু আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, উত্তরাধিকার আইন বাংলাদেশ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এছাড়া জেন্ডার বাজেট সারা বিশ্বে ১ শতাংশ নিচে এমনকি জাতিসংঘের বরাদ্দ ইউএস ওমেনের বরাদ্দের চেয়ে কম। বাংলাদেশের জেন্ডার বাজেট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনতে হবে। এই বরাদ্দ নারী, শান্তি ও নিরাপত্তায় বিনিয়োগ করতে হবে।

নবনীতা সিনহা বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করছে, বাংলাদেশ সরকার নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করেছে। নারী শান্তি ও নিরাপত্তায় অন্যান্য কারণগুলোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনও বড় ভূমিকা রাখছে। বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিয়ে একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করতে হবে। জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সিভিল সোসাইটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মৌলবাদ মোকাবিলা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত প্রতিরোধ এই বিষয়গুলোর ওপর আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন প্রতিরোধও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরকার নারী, শান্তি ও নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে লক্ষ্যে ১৬ মন্ত্রণালয়সহ সুশীল সমাজের সংগঠনকে যুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৯-২২) বাস্তবায়নে সমন্বয় সাধনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সমন্বয় গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। এদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করার দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।

এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। পাশাপাশি সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন, নারী সংগঠন, শিক্ষাবিদ, অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর প্ল্যাটফরম গঠন করা হবে। যারা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে অগ্রসর করে নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

ওসমান ভূঁইয়া বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নারীদের জন্য বিভিন্নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, কিছু কাজ আছে শুধু নারীদের জন্য।

মো. আব্দুল কাদের শেখ বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৭৩ হাজার গণশিক্ষা কেন্দ্রে প্রায় ৮০ শতাংশ নারী কাজ করছে।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নারী, শান্তি ও নিরাপত্তাবিষয়ক কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন নাসরীন বেগম।

জাতীয় সংলাপে বক্তব্য দেন সেকেন্ডারি অ্যান্ড হায়ার এডুকেশনের ঊর্ধ্বতন সহকারী সচিব আম্বিয়া সুলতানা, মানব প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা শেলী, সিডের নির্বাহী পরিচালক সারথী সাহা, অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডনাই প্রু নেলি, প্রগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা, রাসিনের নির্বাহী পরিচালক আসমা আক্তার, পল্লিশ্রী’র নির্বাহী পরিচালক শামিমা আক্তার, মুক্তি কুষ্টিয়ার নির্বাহী পরিচালক মমতাজ আরা বেগম, অর্জন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহুয়া মঞ্জুরী প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১০

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১১

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

১২

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

১৩

ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলম, সম্পাদক প্রকৌশলী চুন্নু

১৪

নানা আয়োজনে গাকৃবিতে মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন

১৫

বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যুতে সতর্ক অবস্থানে তামিম

১৬

রাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু বুধবার

১৭

এবার সিলেটের উৎমাছড়া থেকে ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ

১৮

জমি রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়েরের শেষ সময় সেপ্টেম্বরে

১৯

পায়ের ফাঁকে বালিশ দিয়ে ঘুমালে কী হয়, জানেন কি?

২০
X