ভারতের অরুণাচল ও আকসাই চীনকে নিজেদের দাবি করে চীনের নতুন মানচিত্র প্রকাশের ঘটনায় নয়াদিল্লির আপত্তির জবাব দিয়েছে বেইজিং। চীন বলছে, আইন মেনেই সার্বভৌমত্বের স্বাভাবিক প্রয়োগ করেছেন তারা।
আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনের ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত প্রকাশ করেন ভারতে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ওয়াং জিয়াওজিয়ান। ব্রিফিংয়ে ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, আমরা আশা করি, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো বস্তুনিষ্ঠ ও শান্ত থাকবে এবং অতিরিক্ত ব্যাখ্যা থেকে বিরত থাকবে।
এর আগে গতকাল এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভারতের অরুণাচল ও আকসাই চীনকে নিজেদের দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে চীন। শুধু ভারতের দুই প্রদেশই নয়, এবারের মানচিত্রে তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকে নিজেদের বলে দাবি করেছে বেইজিং। দক্ষিণ চীন সাগরের যে অংশ চীন নিজেদের বলছে, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেই সেই অংশের দাবিদার।
চীনা সংবাদমাধ্যমের বরাতে এনডিটিভি জানায়, জাতীয় জরিপ ও মানচিত্র প্রচার দিবস উপলক্ষে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নতুন মানচিত্রের ছবি পোস্ট করে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীন ও অন্যান্য দেশের সীমারেখা মেনেই এই মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে।
চীনের এই মানচিত্রের খবর সামনে আসতেই এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, এটা চীনের পুরোনো অভ্যাস। চীনাদের এমন দাবিতে কিছু যায়-আসে না।
তিনি বলেন, তাদের ভূখণ্ড নয়, এমন জমি নিয়ে চীন মানচিত্র তৈরি করেছে। এটি তাদের পুরোনো অভ্যাস। ভারতের অংশ নিয়ে মানচিত্র তৈরি করলে... এতে কিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে না। আমাদের অঞ্চল নিয়ে আমাদের সরকারের ধারণা খুব স্পষ্ট। অযৌক্তিক দাবি করলেই অন্যের অঞ্চল আপনার হয়ে যাবে না।
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তাৎক্ষণিক এমন প্রতিক্রিয়ার পর একই দিন এক বিবৃতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ভারতের ভূখণ্ড নিজেদের দাবি করে চীনের তথাকথিত ‘স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ’ নিয়ে আজ (গতকাল) আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে চীনা পক্ষের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বত বলে থাকে বেইজিং। গত এপ্রিলে অরুণাচলের ১১টি এলাকার নাম চীনা ভাষায় পরিবর্তন করেছিল বেইজিং। তখনো চীনের এমন পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে দেয় ভারত সরকার। তখন ভারত জানিয়েছিল, অরুণাচল তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সব সময় থাকবে।
মন্তব্য করুন