কম্বোডিয়ার ছোড়া রকেট হামলায় দুই থাই বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে সীমান্তের ওপারে আঘাত হেনেছে থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী।
বৃহস্পতিবার ভোরে সীমান্তের বিতর্কিত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির পর পরিস্থিতি চরমে পৌঁছে যায়। থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের একটি যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ার ভেতরে ঢুকে গুলিবর্ষণ করেছে এবং সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে থাই বাহিনী বলেছে, এফ-১৬ গুলিবর্ষণ করেছে!
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাই সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কম্বোডিয়ার ‘স্পেশাল মিলিটারি রিজিয়ন কমান্ডস ৮ ও ৯’-এর ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে থাই সেনাবাহিনী জানায়, সীমান্তবর্তী থাই এলাকাগুলোতে দুটি রকেট আঘাত হানার পর তারা ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে।
রয়টার্সের তথ্যমতে, থাই সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানন বলেন, পরিকল্পনামাফিক নির্দিষ্ট সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে বিমান শক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
থাই সামরিক কর্মকর্তা সুরাসান কংসিরি জানান, সীমান্তের ছয়টি এলাকায় এখনো দুপক্ষের সংঘর্ষ চলছে। এতে পাঁচ বছরের এক শিশুসহ তিনজন বেসামরিক আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের এই সংঘর্ষের জন্য উভয় দেশ পরস্পরকে দায়ী করেছে।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, থাইল্যান্ড তাদের সীমান্তে বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে, ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে এবং বিমান হামলার মাধ্যমে জোরপূর্বক কম্বোডীয় ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা থাইল্যান্ডের এই হামলাকে 'বর্বর ও অবৈধ সামরিক আগ্রাসন' হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, থাইল্যান্ডের পদক্ষেপ জাতিসংঘ সনদ, আসিয়ানের নীতিমালা এবং আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লঙ্ঘন।
কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, থাই যুদ্ধবিমান দুটি পৃথক স্থানে বোমাবর্ষণ করেছে, যেগুলো পুরোপুরি কম্বোডিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সওচেতা বলেন, এই বেআইনি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি গুরুতর হুমকি। এটি আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার ভিত্তিকেও লঙ্ঘন করেছে।
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, যে কোনো মূল্যে কম্বোডিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের সামরিক বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
এদিকে থাই এক সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সীমান্তে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে থাইল্যান্ড সব সীমান্ত পয়েন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে।
মন্তব্য করুন