মস্কোর বিরুদ্ধে জয়ী হতে কিয়েভকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। যুদ্ধের ময়দানে লড়তে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জন্য বিভিন্ন সামরিক ঠিকাদারকে কয়েক কোটি ডলার পরিশোধ করেছে ইউক্রেন। নিজেদের কেনা এসব অস্ত্রের বেশিরভাগই এখনো সরবরাহ করা হয়নি। আবার সহায়তা হিসেবে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে যেসব অস্ত্র পাচ্ছে, তার অনেকগুলোই বিকল। সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা মিত্রদের দেওয়া অনেক সমরাস্ত্র কেবল খুচরা যন্ত্রাংশ হিসেবে ব্যবহারের যোগ্য। এ ছাড়া গত বছর সমরাস্ত্র সরবরাহকারী ঠিকাদারদের ৮০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে কিয়েভ। ঠিকাদারদের সঙ্গে করা এসব চুক্তি অনুযায়ী অনেক যুদ্ধাস্ত্রই সরবরাহ করা হয়নি। মূলত অনেক চুক্তির অর্ধেক পরিমাণ সমরাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।
এসব অস্ত্র কেনার সঙ্গে জড়িত দুটি সূত্র জানায়, কিছু অস্ত্র পরে সরবরাহ করা হলেও অনেক ক্ষেত্রে চুক্তিকারকরা টাকা ফেরত দিয়েছে। দেশটির উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী ভলোদিমির হ্যাভরিলভ জানান, অর্থ পরিশোধ করার পরও অনেক অস্ত্র হাতে পায়নি তার দেশ। এ সময় ত্রুটিপূর্ণ ঠিকাদারদের বাদ দেওয়ার বিষয় বিবেচনা করছে জেলেনস্কি সরকার।
ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রমাণ হয়েছে। তবে অন্যান্য মিত্রদের দেওয়া অস্ত্রের একটি বিশাল মজুদ মেরামত করা ছাড়া ব্যবহারের অযোগ্য। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা জানান, কিয়েভের অস্ত্রাগারে থাকা ৩০ শতাংশ অস্ত্র যে কোনো সময় মেরামতের প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিনিয়ত পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুত—এমন সেনাবাহিনীর জন্য এ পরিমাণ অনেক বলে মন্তব্য বিশ্লেষকদের।
সম্প্রতি ইউক্রেনকে ৩৩টি স্বয়ংক্রিয় হাউইটজার দিয়েছে ইতালি। এসবের একটির ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে এবং অপর একটি ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ ছিদ্র হয়ে গেছে। ইতালির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এসব হাউইটজার কয়েক বছর আগেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, কিন্তু ইউক্রেনের অনুরোধে এগুলো পাঠানো হয়।
ইউক্রেনের সরকারি নথিতে দেখা যায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৩৩টি স্বয়ংক্রিয় হাউইটজার মেরামতের জন্য মার্কিন এক সমরাস্ত্র ঠিকাদারকে ১৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। তার মধ্যে ১৩টি ইউক্রেনে পাঠানো হলে দেখা যায় সেগুলো যুদ্ধে ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। গত গ্রীষ্মে ২৯টি হামভি সাঁজোয়া যান ইউক্রেনে পাঠায় আমেরিকা। পরে দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে ২৬টি হামভি যুদ্ধে মোতায়েনের জন্য অনুপযোগী। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের তৈরি বেশ কিছু সমরাস্ত্র যুদ্ধে ব্যবহারের উপযুক্ত নয় বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে আসে।
মন্তব্য করুন