রাশিয়ার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘোষণার পর পিছু হটে এসেছে ওয়াগনার বাহিনী। ওয়াগনার বিদ্রোহে সৃষ্ট রাশিয়ার সংকটে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে পুরো বিশ্ব। বিদ্রোহে ওয়াগনার পিঠটান দিলেও এ থেকে চীন ও উত্তর কোরিয়া শিক্ষা নেবে বলে মনে করছেন সিউলের ইওয়া ওমেনস বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লিফ-এরিক ইজলি।
তিনি বলেন, মস্কোর ক্ষমতা কাঠামো পরিবর্তনের সক্ষমতা ওয়াগনারের নেই। তবে এ বিদ্রোহ পুতিনের নীতি যে টেকসই না, তা নির্দেশ করছে। রাশিয়া-চীন-উত্তর কোরিয়া বলয়ের ওপর এর প্রভাব থাকবে। মস্কোর মতো ভুল এড়াতে নিঃসন্দেহে এ থেকে শিক্ষা নেবে বেইজিং ও পিয়ংইয়ং।
এ ছাড়া ওয়াগনার বিদ্রোহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করে আসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরে দুদেশের সম্পর্ক নবযুগে নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হন তিনি।
এর আগে রক্তপাত এড়াতে শনিবার যোদ্ধাদের মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়া স্থগিত করে ওয়াগনার গ্রুপ। এক অডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। তিনি জানান, যোদ্ধারা সেনাশিবিরে ফিরে আসছেন।
এর কিছুক্ষণ আগে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানিয়েছিলেন, ওয়াগনার বাহিনীর মস্কো অভিমুখী পদযাত্রা স্থগিত করতে তিনি প্রিগোজিনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় প্রিগোজিন তার প্রস্তাব গ্রহণে সম্মত হন বলেও জানায় লুকাশেঙ্কোর কার্যালয়।
শনিবার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের শহর রোস্তভ-অন-দন দখলের পর রাজধানী মস্কোর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল ওয়াগনার বাহিনী। মস্কো অভিমুখী পথের অর্ধেকের বেশি অতিক্রমও করে তারা। রুশ সেনারা তাদের গতিরোধ করতে চাইলেও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। এরই মধ্যে মস্কোমুখী যাত্রা স্থগিতের কথা জানালেন প্রিগোজিন।
গত শুক্রবার রাশিয়ার সামরিক নেতাদের উৎখাত করার হুমকি দেন ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। এরপর রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের একটি সেনা সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানায় ওয়াগনার। ওয়াগনারের বিদ্রোহকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট বলে মনে করেছিলেন বিশ্লেষকরা। সাড়ে ২৪ বছরের ক্ষমতায় পুতিন এ ধরনের সংকটের মুখোমুখি হননি।
মন্তব্য করুন