জো বাইডেন দলের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ভাগ্য খুলে যায় ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের। প্রথম মার্কিন নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ডেমোক্রেটিক দলীয় কমলার সামনে এখন বাধা ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সম্প্রতি এক টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়ে ট্রাম্পকে হতবিহ্বল করে দিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন নির্বাচনী জরিপেও ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। তাই কমলাকে হারাতে পুরোনো বন্ধুর দিকে হাত বাড়িয়েছেন ট্রাম্প।
নির্বাচনী সভায় গিয়ে বারবার কমলার বর্ণপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প। এবার সেই বর্ণপরিচয়ের সূত্র ধরেই নির্বাচনী তরী পার হতে চাইছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা, ট্রাম্পকে বেশ ভালোভাবেই টক্কর দিচ্ছেন। আর তাই পুরোনো বন্ধু নরেন্দ্র মোদির দ্বারস্থ হয়েছেন ট্রাম্প। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তখনই হবে এই সাক্ষাৎ।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনন্য অবস্থানে পৌঁছেছিল। কিন্তু মঙ্গলবারই এক নির্বাচনী সমাবেশে সেই বন্ধু রাষ্ট্রের বিষোদগার করেছেন ট্রাম্প। তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় অপব্যবহারকারী নয়াদিল্লি। আগামী সপ্তাহে মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের আগে এমন মন্তব্য করলেন ট্রাম্প। তবে কোথায় এই সাক্ষাৎ হবে, সে কথা খোলাসা করেননি তিনি।
চীনের প্রভাব নিয়ে সব সময় উদ্বিগ্ন থাকা যুক্তরাষ্ট্র, এশিয়ায় নিজের প্রভাব বাড়াতে ভারতের সহায়তা চায়। ভারতেরও এ নিয়ে আগ্রহ আছে। চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি ও প্রভাব বৃদ্ধি নয়াদিল্লির জন্যও উদ্বেগের। তবে নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। কেননা মার্কিন মুলুকে ক্ষমতায় যিনিই আসুন না কেন, নয়াদিল্লির জন্য তা হবে ‘উইন-উইন’।
কমলা জিতলে তো অনেকটা ঘরের মেয়েই জিতল। আর ট্রাম্প জিতলেও আখেরে ভারতেরই লাভ। যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ কোটির বেশি নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে। তার মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ২১ লাখ। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয়দের সংখ্যাই সবচেয়ে। আবার টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যেই বেশির ভাগ ভারতীয় বাস করেন। নির্বাচনের খেলায় এসব সমীকরণের বেশ মাইনে রয়েছে।
কয়েকশ’ বছরের ইতিহাসে এখনও নারী প্রেসিডেন্ট পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েও হেরে গিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন। শ্বেতাঙ্গ ও সাবেক ফার্স্ট লেডিকে হারিয়ে ক্ষমতায় বসা ট্রাম্প, এবারও জেতার স্বপ্নে বিভোর কিন্তু জনমত জরিপ বলছে ভিন্ন কথা। যদিও মার্কিন নির্বাচনে আসল খেলোয়াড় ভোটাররা নয় বরং ইলেকটোরালরা। সেই মারপ্যাঁচে পড়েই হেরেছিলেন হিলারি। এখন কমলার ভাগ্যে কি ঘটে, তা জানা যাবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
মন্তব্য করুন