তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ফের জানিয়ে দিলেন, তিনি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে চান না।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাঙ্গেরি সফর শেষে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এরদোয়ান স্পষ্টভাবে বলেন, আবার নির্বাচিত হওয়া বা প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। দেশের সুনাম বৃদ্ধি করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
শুক্রবার (২৩ মে) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই যুগ ধরে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রিত্ব ও প্রেসিডেন্ট পদে আছেন এরদোয়ান। একাধারে ২৫ বছর দেশ পরিচালনার পর তার এমন ঘোষণা নতুন রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে কেবল নির্বাচন প্রসঙ্গেই থেমে থাকেননি তিনি। দেশের সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথাও জোর দিয়ে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তুরস্ক বদলে যাচ্ছে, বিশ্ব বদলে যাচ্ছে। আমরা একটি নতুন যুগে বাস করছি। অভ্যুত্থানের সময় তৈরি এবং অভ্যুত্থানবাদী মানসিকতা ধারণ করা একটি সংবিধান দিয়ে তুরস্ক আর এগোতে পারবে না।
বিরোধী দলগুলোকেও নতুন সংবিধান তৈরিতে সহায়তার আহ্বান জানান এরদোয়ান। তার ভাষায়, আমাদের এমন একটি সংবিধান দরকার, যা আসবে জনগণের কাছ থেকে, অভ্যুত্থানকারীদের কাছ থেকে নয়।
এরদোয়ান ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ই বলেছিলেন, এটি তার শেষ নির্বাচন। যদিও তুর্কি সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের তারিখ এগিয়ে আনা হলে তার জন্য আরেকবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ রয়েছে।
তবে এরদোয়ানের এই ঘোষণার বাস্তবতা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। কারণ, ক্ষমতা ছাড়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগ বেড়েছে।
বিশেষ করে ইস্তাম্বুলের মেয়র এবং সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী একরেম ইমামোগলুর গ্রেপ্তার ও তার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ এরদোয়ানের ক্ষমতা ছাড়ার প্রতিশ্রুতিকে ঘিরে জনমনে সংশয় সৃষ্টি করেছে।
নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেও, এরদোয়ানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল ও ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এরদোয়ানের এই বার্তা হয়তো রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের চাপে ফেলতেই দেওয়া। এখন দেখার বিষয়, এই ঘোষণা আদৌ বাস্তবে রূপ নেয় কি না।
মন্তব্য করুন