অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ সংক্রান্ত বিষয়ে ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, তা ব্যক্তিগত মতামত বলে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। শুক্রবার (২৩ মে) বিকালে একই আইডিতে পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন নতুন পোস্টে লেখেন,
‘ডিসক্লেইমার— মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। ধন্যবাদসহ।’
এদিকে এ-সংক্রান্ত আগের পোস্টও তিনি আইডি থেকে সরিয়ে ফেলেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার ফেসবুক আইডির টাইমলাইনে আগের পোস্ট দেখা যায়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়াতে থাকে। পরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বিবিসিকে জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আজ দুপুরে তার অবস্থানের কথা জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রাঞ্জিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে।’
‘বরং কেবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরো বেশি ফাংশনাল হতে হবে, উপদেষ্টাদের আরো বেশি কাজ করতে হবে, দৃশ্যমান অগ্রগতি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে- এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত থাকতে পারে না।’
‘আমাদেরকে দেখাতে হবে যে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনতার সম্মতিতে ক্ষমতায় এসে প্রফেসর সাফল্য দেখিয়েছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর সম্মান আছে, এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমি মনে করি, সরকারকে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আরও নিবিড়ভাবে আলোচনা বসতে হবে। নিয়মিত বসে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত চাইতে হবে। বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়।’
সেনাবাহিনী রাজনীতিতে নাক গলাতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজকের দুনিয়ায় কোন সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বক্তব্যে সেনাপ্রধান জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস রক্ষা করতে পারেননি। তবে সেনাবাহিনীকে প্রাপ্য সম্মান দেখাতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনী প্রশ্নে হুট করে কিছু করা যাবে না, হঠকারী কিছু করা যাবে না।’
ইনক্লুসিভনেসের নাম করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনও চাওয়া যাবে না উল্লেখ করে বিশেষ সহকারী বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব এবং আস্থার জায়গা- সেটা কেউ ভঙ্গ করবে না। সব দরকারি প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল- মের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি। এ সময়ে সকল যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে, করতে হবে জুলাই সনদ।’
জুলাই-আগস্ট-২৫ এ আমরা জাতীয়ভাবে দুমাস জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির উদযাপন করবেন জানিয়ে ফাইজ তাইয়েব আহমেদ বলেন, ‘আগস্টের মধ্যেই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচারের প্রথম রায়টি আলোর মুখ দেখতে পাবে বলেও আশা প্রকাশ করি। ইনশাআল্লাহ আমরা হারব না, আমাদের হারানো যাবে না। ইনকিলাব জিন্দাবাদ। প্রফেসর ইউনুস জিন্দাবাদ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।’
মন্তব্য করুন