ইরান থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে নতুন করে মিসাইলের বহর নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে, ‘হুমকি’ প্রতিহত করার জন্য তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে।’ খবর আল জাজিরার।
বাসিন্দাদের সতর্ক করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, ‘সতর্কতা সাইরেন শুনলেই দয়া করে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান এবং নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করুন।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ‘তেহরান খালি করার’ মতো কড়া হুঁশিয়ারি দেন, তার কিছুক্ষণ পরই ইরানের রাজধানী ও আশপাশের অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইসরায়েলি বাহিনী ৫ম দিনের মতো ইরানে এই হামলা চালায়।
বিবিসির খবরে জানা যায়, তেহরানের আন্দারযগৌ এলাকায় ইসরায়েলি হামলার সম্ভাব্য গোলা আঘাত হেনেছে। একটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা জানায়, শহরে অন্তত দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এদিকে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, তারা আজই (মঙ্গলবার, ১৭ জুন) এমন একটি নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছেন, যা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশই এই প্রযুক্তির মালিক। এটি আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন।
এদিকে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের হার্জেলিয়ার গোয়েন্দা ভবন, মোসাদ এবং আমান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সদরদপ্তর লক্ষ্য করে সফল হামলা চালিয়েছে। মোসাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত কেন্দ্রে এখন আগুন জ্বলছে।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড আরও বলছে, নির্ভুল হামলাগুলো তাদের চলমান অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩ এর অংশ। এই পাল্টা হামলার লক্ষ্য ইরানের শহর এবং অবকাঠামোতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে দখলদারিত্বকে ‘সুনির্দিষ্ট এবং বেদনাদায়ক আঘাত’ প্রদান করা।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তেলআবিব মহানগর এলাকায় কমপক্ষে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে, যার মধ্যে একটি হার্জলিয়ায় পড়েছে বলে জানা গেছে। এটি উপকূলীয় শহর যেখানে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সদরদপ্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, চলমান এই সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং তা একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংঘর্ষ কমানোর আহ্বান জানালেও, এখন পর্যন্ত উভয় দেশই আক্রমণাত্মক অবস্থানে রয়েছে।
মন্তব্য করুন