গাজায় যুদ্ধবিরতি, হামাসের হাত থেকে জিম্মি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনা এবং সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে এবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো ইসরায়েলি। দেশটিতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে জোর আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ বিক্ষোভ করা হয়।
সোমবার (১৭ জুন) নিজেদের দাবি নিয়ে হাজারো ইসরায়েলিকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়। বিক্ষোভটি রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক সময় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়।
সেখানে তাদের দাবি দাওয়া পেশ করেন। এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তাদের দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। এ সময় জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙের চেষ্টার পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত আটজনকে।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে সোমবার রাতেও গণবিক্ষোভ হয়েছে। ১০ সহস্রাধিক ইসরায়েলি অবিলম্বে নতুন নির্বাচনসহ নানা দাবি আদায়ে এ দিন রাস্তায় নেমে আসেন। তাদের দমনে শক্তি প্রয়োগ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সে সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একাধিক ইসরায়েলি আহত হয়েছেন।
গাজায় চলমান আগ্রাসন নিয়ে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা অব্যাহত রেখেছে প্রধান মিত্র ও অস্ত্রদাতা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। কিন্তু এসব চাপ ও আলোচনাকে অগ্রাহ্য করে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। সেই আগ্রাসনও যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা করতে না পারার অভিযোগ রয়েছে খোদ ইসরায়েলের নাগরিকদের মধ্যে।
তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি গাজায় হামলা বন্ধ করে হামাসের সঙ্গে একটি সমঝোতার মাধ্যমে জিম্মি ব্যক্তিদের অক্ষত অবস্থায় ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা।
তাদের বক্তব্য, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো গোয়ার্তুমি জিম্মি ব্যক্তিদের নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মি নিহত হয়েছেন। এসব বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করেছিল গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এ সময় ২০০ জনের বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে এনেছিল হামাস।
এর জবাবে গত আট মাস ধরে গাজায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। সেই অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ। টানা আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আক্রমণে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতিতে ভুগছে গাজার লাখো মানুষ।
মন্তব্য করুন