আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ সাবমেরিনটির সন্ধান এখনো মেলেনি। সময় যত গড়াচ্ছে, সাবমেরিন ও এর ভেতরে থাকা পর্যটকদের জীবিত উদ্ধার নিয়ে শঙ্কা তত বাড়ছে। বর্তমানে অভিযানের আওতা আরও বাড়িয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে বিভিন্ন দল।
গত রোববার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় সাবমেরিনে ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন ছিল। সবশেষ গতকাল রাতে সেখানে ২০ ঘণ্টার অক্সিজেন মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন উদ্ধার দলের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাগার। এ তথ্য তিনি দিয়েছিলেন প্রায় ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা আগে। সে হিসাব অনুযায়ী, সাবমেরিনে আর মাত্র ১০ ঘণ্টার মতো অক্সিজেন রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সাবমেরিনের অক্সিজেনের মজুত যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে কী হতে পারে—সে বিষয়ে নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জনসের মেমোরিয়াল ইউনিভার্সিটির হাইপারবারিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. কেন লেডেজের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি।
ডা. লেডেজ বলেন, ‘অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার পর তারা বেঁচে থাকবে কিনা, তা ওই ব্যক্তির মেটাবলিসমের ওপর নির্ভর করছে। কেউ কেউ অন্যদের চেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারেন। এটা লাইট অফ করার মতো নয়। এটি অনেকটা পর্বত আরোহণের মতো।’
তিনি বলেন, অক্সিজেনের ব্যবহার কমাতে তারা সব করবেন। তারা বিশ্রাম নিতে পারেন, যতটা সম্ভব উদ্বেগহীন ও শান্ত থাকার চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত নড়াচড়ার কারণে তাদের মেটাবলিসম বাড়তে পারে। এতে আরও কার্বন ডাইঅক্সাইড নিসঃরণ হতে পারে বলে জানান তিনি।
ডা. লেডেজ বলেন, ‘অতি ঠান্ডাজনিত শারীরিক জটিলতা হাইপোথার্মিয়া তাদের জন্য মন্দের ভালো হতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় তারা চেতনা হারিয়ে ফেলতে পারেন। তবে এমন পরিস্থিতিতেও তারা বেঁচে থাকতে পারেন। ঠান্ডায় হৃদস্পন্দন অনেকটা ধীর হয়ে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার সাত দিন পরও কি তারা বেঁচে থাকবেন? আমার সন্দেহ হয়। তবে কেউ কেউ অন্যদের চেয়ে বেশি দিন বাঁচবেন।’
গত রোববার টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে সাগরের তলদেশে যাওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টা পর সাবমেরিনটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন—পাকিস্তানের ধনকুবের শাহজাদা দাউদ, তার ছেলে সুলেমান, যুক্তরাজ্যের ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিং, ফরাসি সাবমার্সিবল পাইলট পল হেনরি ও টাইটানিক অভিযান সংস্থার সিইও স্টকটন রাশ।
উদ্ধার অভিযান শুরুর পর গত মঙ্গল ও বুধবার সাবমেরিন থেকে দুবার আওয়াজ শোনার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। বর্তমানে আওয়াজের স্থান লক্ষ্য করে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে বিভিন্ন উদ্ধার দল।
মন্তব্য করুন