কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

গোপন কারাগারে শিশুদেরও বন্দি রাখতেন হাসিনা, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ

শেখ হাসিনা ও একটি বন্দিশালা। ছবি : সংগৃহীত
শেখ হাসিনা ও একটি বন্দিশালা। ছবি : সংগৃহীত

ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদের দমন-পীড়নের সব ধরনের ব্যবস্থা করেছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাতি পেয়েছে তার তৈরি গোপন বন্দিশালা। সেখানে শিশুদেরও বন্দি রাখতেন হাসিনা। এমনকি তাদের বঞ্চিত করা হতো মায়ের দুধ পান থেকেও।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমপক্ষে অর্ধ ডজন শিশু তাদের মায়েদের সাথে অন্ধকার গোপন জেলে মাসের পর মাস কাটিয়েছে। যখন মায়েদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো তখন শিশুদের অন্যত্র আটক রাখা হতো। এ সময় শিশুর বুক ফাটা কান্নাতেও দুধ খাওয়ানোর অনুমতি মিলত না। এ ছাড়া নির্যাতনের অন্যান্য উপায়ও ব্যবহার করত হাসিনার বাহিনী।

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের অনুসন্ধান বলছে, বাংলাদেশের গোপন আটক কেন্দ্রে বন্দি শত শত মানুষের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও ছিল। বর্তমান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পরিচালিত জোরপূর্বক গুমের ঘটনাগুলোর তদন্তে এমন চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।

বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন (গুম কমিশন) মঙ্গলবার তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কমপক্ষে অর্ধ ডজন শিশু তাদের মায়েদের সাথে ‘ব্ল্যাক সাইট’ জেলে মাসের পর মাস কাটিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিশুদের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত রাখাসহ অন্যান্য উপায়ে নির্যাতন করা হতো।

কমিশন বলেছে, তাদের কাছে এমন একাধিক যাচাইকৃত ঘটনা রয়েছে। যেখানে নারীরা তাদের সন্তানদের সাথে নিখোঁজ হয়েছেন। সম্প্রতি ২০২৩ সালেও কিছু ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে একজন গর্ভবতী নারীকে গুমের ঘটনা তুলে ধরা হয়। ওই নারী তার দুই ছোট শিশুসহ একটি আটককেন্দ্রে বন্দি ছিলেন। সেখানে তাকে মারধর করা হয়েছিল। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না বলেও গুম কমিশন বলেছে।

কমিশন জানিয়েছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী তদন্তকারীদের সেই আটক স্থানের কক্ষটি দেখিয়েছেন। যেখানে তাকে শৈশবে তার মায়ের সাথে রাখা হয়েছিল। এ আটককেন্দ্রটি আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) পরিচালনা করত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তার মা আর ফিরে আসেননি।’

আরেকটি ঘটনায়, এক দম্পতি এবং তাদের শিশুকে আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে বাবাকে চাপ দেওয়ার জন্য মানসিক নির্যাতনের এক রূপ হিসেবে শিশুটিকে মায়ের দুধ পান করতে দেওয়া হতো না।

কমিশন জানিয়েছে, শেখ হাসিনার আমলে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক অপহৃত প্রায় ২০০ বাংলাদেশি এখনো নিখোঁজ।

কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কিছু ভুক্তভোগী তাদের নির্যাতনকারী অফিসারদের সঠিক পরিচয় দিতে না পারলেও তাদের সাক্ষ্য ব্যবহার করে জড়িত বাহিনীকে শনাক্ত করা হবে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, আমরা কমান্ডারকে জবাবদিহি করার সুপারিশ করব।

এদিকে ৭৭ বছর বয়সী হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকা। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন ঘটে। ওই সময় তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানেই অবস্থান করছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপিতে যোগ দিলেন জামায়াত ও আ.লীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মী

ইলিশ কেনাবেচায় সরগরম চাঁদপুরের মাছঘাট

আরএফএল গ্রুপে চাকরির সুযোগ, রয়েছে থাকা-খাওয়ার সুবিধা 

টিভিতে আজকের যত খেলা

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

শুল্ক সংঘাত ঠেকাতে মালয়েশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য বৈঠক

ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত না হলে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক নয় : ট্রাম্প

খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বই বাংলাদেশকে মুক্তির পথে নিয়ে এসেছে : আবু নাসের

২৬ অক্টোবর: কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১০

মৃত্যুর পরও যে ৩ আমলের সওয়াব বান্দার আমলনামায় যোগ হতে থাকে

১১

২৬ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১২

অভিজ্ঞতা ছাড়াই আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে চাকরি, দ্রুত আবেদন করুন

১৩

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ৭ম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

১৪

কানাডার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

১৫

আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কেটরিন কনলির ভূমিধস জয়

১৬

সাফ অ্যাথলেটিকসে বাংলাদেশের ব্রোঞ্জ পদক জয়

১৭

রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের পাসপোর্ট ফি কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার

১৮

বিসিবির কাছে বিচার চেয়ে সোহাগ গাজীর চিঠি

১৯

এগিয়ে গিয়েও ব্যর্থতার হতাশায় পুড়ল বসুন্ধরা কিংস

২০
X