মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের রাজ্য ওয়াক্সাকা-তে আছড়ে পড়েছে শক্তিশালী হারিকেন এরিক। আঘাত হানার সময় ক্যাটাগরি-৩ মাত্রায় রূপ নেয় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) জানিয়েছে, ঝড়টি প্রবল বৃষ্টিপাত, ভূমিধস এবং জীবনঘাতী বন্যার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
হারিকেন এরিক বৃহস্পতিবার ভোরে পুন্তা মালদোনাদো শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্বে মেক্সিকোর উপকূলে পৌঁছায়। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০৫ কিলোমিটার, ফলে এটি ক্যাটাগরি-৪ থেকে কিছুটা দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি-৩ তে নামলেও ধ্বংসযজ্ঞের আশঙ্কা রয়ে গেছে।
ঝড়টি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার গতিতে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং পূর্বাভাস অনুযায়ী এটি ধীরে ধীরে মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করবে এবং শুক্রবার সকালের মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, ওয়াক্সাকা ও গুয়েরেরো রাজ্যে ৪০ সেন্টিমিটার (১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করবে। এছাড়া চিয়াপাস, মিচোয়াকান, কোলিমা এবং জালিস্কো রাজ্যগুলোতেও ১৫ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।
মেক্সিকোর জাতীয় পানি কমিশন কোনাগুয়া জানিয়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলে ১০ মিটার (৩৩ ফুট) পর্যন্ত উঁচু ঢেউ উঠছে।
ঝড়ের আগমন ঘিরে মেক্সিকো সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বুধবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাউম জনগণকে ঘরে থাকার বা নিচু এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান।
গুয়েরেরো রাজ্যের গভর্নর এভেলিন সালগাডো জানিয়েছেন, রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ থাকবে এবং মাছধরা ও পর্যটন নৌযানগুলোকে নিরাপদ অবস্থানে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গুয়েরেরোর জনপ্রিয় পর্যটন শহর আকাপুলকোর বাসিন্দারা ঘূর্ণিঝড় এরিকের আগমনে বিশেষভাবে সতর্ক রয়েছেন। প্রায় ১০ লাখ জনসংখ্যার এই শহর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হারিকেন ওটিসে বিধ্বস্ত হয়েছিল, যেখানে অন্তত ৫২ জন প্রাণ হারান এবং বহু ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যায়।
সূত্র : আল জাজিরা
মন্তব্য করুন