গ্রামের বাতাসে আর্তনাদ। কেউ ভুল করেও সেই গ্রামে ঢুকলে বেরিয়ে আসতে পারে না। পত্রপত্রিকায় সে গ্রাম নিয়ে লেখা হলেও দেশের মানচিত্রে কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে মানচিত্রে খোঁজ না পাওয়া গেলেও কিংবদন্তিতে ‘জীবন্ত’ সেই গ্রাম।
‘ভূতুড়ে গ্রাম’ এই গ্রামের নাম ইনুনাকি। জনশ্রুতি অনুযায়ী, জাপানের ফুকুয়োকা প্রিফেকচারে গ্রামটি অবস্থিত। এর এক দিকে ইনুনাকি পর্বত, অন্য দিকে প্রবাহিত হচ্ছে ইনুনাকি গাওয়া নদী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামটি নিজেই একটা প্রহেলিকা। এটি নিজেই এক ‘প্রেত’।
জানা যায়, ১৯৭০ দশকের শুরুর দিকে হিসায়ামা শহরে যাওয়ার পথে এক তরুণ যুগলের গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর তারা ঘুরতে ঘুরতে এক জঙ্গলে ঢুকে পড়েন। সেখানে তারা একটি পরিত্যক্ত গ্রাম দেখতে পান। এ সময় হঠাৎ তাদের ওপর কাস্তে হাতে এক বৃদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তাদের হত্যা করেন।
জনশ্রুতি থেকে আরও জানা যায়, প্রতি রাতে ইনুনাকি সেতুর কাছের একটি টেলিফোন বুথ থেকে ইনুনাকি গ্রামে ফোন আসে। আর এই ফোন যে ধরে তার জীবনে অভিশাপ নেমে আসে। এমনকি সে ব্যক্তি বাস্তব পৃথিবী থেকে উধাও হয়ে যায়।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ইনুনাকি গ্রামের এত এত জনশ্রুতির পেছনে রয়েছে একটি সুড়ঙ্গ। জনশ্রুতির মূল কারণ একটি সুড়ঙ্গ হলেও সেই গ্রামে রয়েছে দুটি সুড়ঙ্গ। এদের মধ্যে প্রথম সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করা হয় ১৯৪৯ সালে এবং দ্বিতীয়টি নির্মাণ করা হয় ১৯৭০-এর দশকে। অব্যবহৃত এই সুড়ঙ্গ থেকেই সব জনশ্রুতি ছড়াতে শুরু করে। ১৯৮৮ সালে অপহরণের পর এক শ্রমিককে সুড়ঙ্গে হত্যা করা হলে এসব গল্প আরও দ্রুত ছড়াতে থাকে।
বাস্তবে ইনুনাকি গ্রামের অস্তিত্ব আছে কিনা, এ তথ্য জানতেও কম চেষ্টা হয়নি। আজও মানুষজন এ গ্রাম খুঁজে বের করতে চেষ্টা করে চলেছেন। পুরোনো দলিলপত্র থেকে জানা যায়, তোকুগাওয়া আমলে ইনুনাকিদানি নামে সত্যিই একটি গ্রাম ছিল। চিনামাটির জিনিসপত্র তৈরি করাই ছিল এ গ্রামের মানুষের প্রধান কাজ।
কয়েক যুগ পর এই গ্রামটিকে ইয়োশিকাওয়া নামের আর একটি গ্রামের সঙ্গে একীভূত করা হয়। আরও পরে এই গ্রামের সঙ্গে আরও এলাকা যুক্ত হতে থাকলে এক সময় ইনুনাকিদানি গ্রামের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়।
মন্তব্য করুন