যেসব নদীর ওপর ভারতের অধিকার আছে, সেসব নদী থেকে পাকিস্তান পানি পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সিন্ধু নদ পানিবণ্টন চুক্তির আওতায় ভারত থেকে আসা তিনটি নদীর মাধ্যমে পাকিস্তানের কৃষি ক্ষেত্রের ৮০ শতাংশ পানি সরবরাহ করা হয়।
এই অবস্থায় বন্ধু পাকিস্তানকে বাঁচাতে তৎপরতা শুরু করেছে চীন। চীনের সহায়তায় খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে নদীর ওপর বাঁধ তৈরির কাজ শুরু করেছে পাকিস্তান। ৭০০ ফুট উঁচু এই বাঁধ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম হতে যাচ্ছে। ভারত সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার পর দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে এই প্রকল্পের কাজ।
খাইবার-পাখতুনখোয়ার রাজধানী পেশোয়ার থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার উত্তরে পাথুরে উপত্যকার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে সোয়াত নদী। এর উপরেই মোহমন্দ বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলছে ইসলামাবাদ। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, বর্তমানে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির কাজ দ্রুত গতিতে শেষ করার চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। এই বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে ১২০ কোটি ডলার খরচ করবে পাকিস্তান। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটিকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছে।
পাকিস্তান জানিয়েছে, মোহমন্দ বাঁধের মাধ্যমে প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এ ছাড়া পেশোয়ারসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ৩০ কোটি গ্যালন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারবে তারা। এই পানি চাষের কাজেও ব্যবহার করা হবে। পাকিস্তানের কৃষি পুরোপুরি নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। এজন্য সংশ্লিষ্ট বাঁধটি খাইবার-পাখতুনখোয়ার অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশাবাদী ইসলামাবাদ।
১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পাকিস্তানের করাচি শহরে গিয়ে এই চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন নেহরু।
চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু অববাহিকার পূর্ব দিকের তিনটি নদী, অর্থাৎ বিপাশা, ইরাবতী ও শতদ্রুর উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে ভারতের। অন্য দিকে পশ্চিম দিকের সিন্ধু, চন্দ্রভাগা ও বিতস্তার পানি ব্যবহার করতে পারবে পাকিস্তান। পানির নিরিখে সিন্ধু এবং তার শাখা ও উপনদী মিলিয়ে ৩০ শতাংশ ভারত ও ৭০ শতাংশ পাবে পাকিস্তান।
মন্তব্য করুন