কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে হত্যা, বাবা-মায়ের যাবজ্জীবন

নিহত তরুণী ও তার বাবা-মা। ছবি : সংগৃহীত
নিহত তরুণী ও তার বাবা-মা। ছবি : সংগৃহীত

বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মেয়েকে হত্যা করেছেন পাষণ্ড বাবা-মা। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এমন কাণ্ড করেছেন এক দম্পতি। এজন্য তাদের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবারের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেছেন মেয়ে। আর তাতেই চটেছেন বাবা-মা। এমনকি ক্ষুব্ধ হয়ে হত্যা করেছেন মেয়েকে। এমন কাজ করেছেন এক পাকিস্তানি দম্পতি। এজন্য ইতালির আদালত তাদের যাবজ্জীন কারদণ্ড দিয়েছেন।

সামান আব্বাস নামের ওই মেয়েকে ২০২২ সালের নভেম্বরে ইতালির উত্তরাঞ্চলের একটি ফার্মহাউস থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এর আগে ১৮ মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। এরপর তার বাবাকে পাকিস্তান থেকে আটক করা হয়েছিল এবং চলতি বছরের আগস্টে তাকে বিচারের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছিল। তবে বিচার চলাকালে তার মা অনুপস্থিত রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পাকিস্তানে পলাতক রয়েছেন।

সামান আব্বাসের এই অনার কিলিংয়ে বিস্মিত ইতালি। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর দেশটির ইসলামী সংগঠনগুলো ফতোয়া জারি করে যে, জোরপূর্বক বিয়েকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর অনার কিলিং হলো একটি পরিভাষা, যার অর্থ হলো পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে কাউকে হত্যা করা। মঙ্গলবার ইতালির উত্তরের শহর রোজিও এমিলিয়ার একটি আদালত তার বাবা-মাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন সামানের বাবা শাব্বার। তিনি আদালতের কাছে আর্জি জানান যে, এ বিচারকার্য সম্পূর্ণ হয়নি। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারী কে তা জানতে চাই।

বাবা ছাড়াও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সামানের চাচা দানিশকেও ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আওতায় ২০২১ সালে ফ্রান্স থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, সামান কিশোর বয়সে তার পরিবারের সঙ্গে ইতালির নোভেল্লারা আসেন। এরপর তিনি এক ব্যক্তির সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। দেশটির বলোগোনা শহরের রাস্তায় পাকিস্তানি বন্ধুকে চুমু খাওয়ার এক ছবি পরিবারের সদস্যরা দেখে ফেলেন। এরপর তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, সামানের বাবা-মা ২০২০ সালে পাকিস্তানে পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তবে সামান এতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ওই বছরের অক্টোবর থেকে তিনি সামাজিক সংগঠনের নিরাপত্তায় থাকতে শুরু করেন। ২০২১ সালে তিনি পরিবারের কাছে ফিরে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

আইনজীবীরা বলছেন, পরিবার তাকে ছলনা করে বাড়ি ফিরিয়ে আনিয়েছিল।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল সামানের পরিবারের তিন সদস্য শাবল, কোদাল ও একটি নীল ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছেন। এরপরের দিন দেখা যায়, সামান তার বাবা-মার সঙ্গে বাইরে যাচ্ছেন।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গলার হাড় ভেঙে যাওয়ায় সামানের মৃত্যু হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে রিটকারীর পেছনে ‘ভোমা বিড়াল’ : অ্যাটর্নি জেনারেল

ইএমই কোরের সদস্যদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

রাস্তার পাশে পড়ে ছিল ব্যবসায়ীর মরদেহ

টি-টোয়েন্টিতে মালয়েশিয়ার অলরাউন্ডারের বিরল কীর্তি

নামের জটিলতা কাটিয়ে শুরু হচ্ছে খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ

একসঙ্গে জন্ম নেওয়া সেই পাঁচ শিশু হাসপাতালে ভর্তি

কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ আগুন

ভূমিকম্পের সময় ছাত্রদের আগলে রাখা সেই মাদ্রাসা শিক্ষক পেলেন বিশেষ সম্মাননা

তপশিল ঘোষণার সময় জানালেন নির্বাচন কমিশনার

ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার পথে প্রোটিয়ারা

১০

দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জেটেবের ২ নেতা বহিষ্কার

১১

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন নির্বাচনের উপযোগী : মির্জা ফখরুল

১২

মেট্রোরেল কার্ডে অনলাইন রিচার্জ চালু, কীভাবে করবেন

১৩

জুবিন গার্গের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, চাঞ্চল্যকর দাবি আসামের মুখ্যমন্ত্রীর

১৪

‘এত ঋণ নিয়ে শীর্ষ লিগে খেলার যোগ্যই নয় বার্সা’

১৫

রোহিঙ্গাদের আরও ৫০ লাখ ডলার অনুদান দক্ষিণ কোরিয়ার

১৬

যুক্তরাজ্যে ভিসা জালিয়াতি প্রমাণিত হলে যে শাস্তি

১৭

সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পাচারকালে ২৮ জনকে উদ্ধার

১৮

খুমেক হাসপাতালে পরিত্যক্ত নবজাতকের পাশে তারেক রহমান 

১৯

জিনপিংয়ের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপে কী কথা হলো ট্রাম্পের?

২০
X