ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিদ্রোহী রাজপুত্র হিসেবে পরিচিত প্রিন্স হ্যারি এখন চাচ্ছেন পরিবারের কোলেই ফিরে যেতে। রাজপরিবারের নিয়মনীতি ও নিরাপত্তা বিতর্কে জড়িয়ে বহু বছর দূরে থাকার পর, তিনি বলছেন—‘আর না, এবার ফিরতে চাই।’
শুক্রবার (২ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি বলেন, নিরাপত্তার কারণে বাবা (রাজা চার্লস) আমার সঙ্গে দেখা করেন না। কিন্তু আমি আর লড়তে চাই না। আমি জানি না বাবা আর কতদিন বেঁচে থাকবেন। এখন পরিবারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
১৫ মাস আগে ব্রিটেনের রাজা চার্লসের ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং এখন তিনি চিকিৎসাধীন। কিছুদিন আগে চার্লস ব্যক্তিগত এক বার্তায় তার ক্যানসারের অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। এরপরই বাবাকে নিয়ে ওই কথা বললেন প্রিন্স হ্যারি।
যুক্তরাজ্যে সফরকালে হ্যারি ও তার পরিবারের পুলিশি নিরাপত্তা মাত্রা নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায়ে হেরে যাওয়ার পর প্রিন্স হ্যারি এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। শুক্রবার মামলার রায় ঘোষণা করেছে লন্ডনের আপিল আদালত।
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে স্ত্রী মেগানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি। এরপর যুক্তরাজ্য সরকার হ্যারিকে আর আগের মতো সরকার-প্রদত্ত নিরাপত্তা না দেওয়া এবং প্রতিটি সফরের ক্ষেত্রে তা আলাদাভাবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
হ্যারির আইনজীবীরা বলেন, তাকে অন্যদের তুলনায় বৈষম্যমূলকভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আদালত সে অভিযোগ খারিজ করে দেয়। সরকারের পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, হ্যারির নিরাপত্তা কমানোর কারণ হচ্ছে, তার রাজকীয় অবস্থানের পরিবর্তন। তিনি এখন বেশির ভাগ সময় দেশের বাইরে বাস করেন।
রায়ের পরই এএফপির কাছে হ্যারি বলেন, আমি আইনি লড়াইয়ে আর যেতে চাই না। পরিবারই এখন মুখ্য। জীবন খুব ছোট—এখনই সময় একসাথে থাকার।
রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অতীতে তার মতানৈক্য ও দূরত্ব নিয়ে হ্যারি বলেন, হ্যাঁ, পরিবারের কিছু সদস্যদের সঙ্গে ভিন্নমত ছিল। কিন্তু আমি সেগুলো এখন ক্ষমা করে দিয়েছি। সব ভুলে আবার একসাথে হতে চাই।
তবে প্রিন্স হ্যারি স্পষ্ট করেছেন, বর্তমানে তার স্ত্রী মেগান ও দুই সন্তানকে রাজপরিবারে ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, যুক্তরাজ্যে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না থাকলে পরিবার নিয়ে ফেরা ‘অসম্ভব’ বলে জানিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ রাজপরিবারের ছোট ছেলে হ্যারি এক সময় রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে স্বাধীন জীবনের খোঁজে পাড়ি জমিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলেছে হ্যারির উপলব্ধি। আজ তিনি চাইছেন—শুধু রাজপুত্র নয়, একজন ছেলে হিসেবে বাবার পাশে থাকতে।
মন্তব্য করুন