কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ০১:২০ পিএম
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ০১:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কেশবপুরে ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কেশবপুরে টানা বর্ষণ ও হরিহর নদের পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ছবি : কালবেলা
কেশবপুরে টানা বর্ষণ ও হরিহর নদের পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ছবি : কালবেলা

যশোরের কেশবপুরে টানা বর্ষণ ও হরিহর নদের পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কেশবপুর পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় মধ্যকুল খানপাড়া এলাকার বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। নলকূপগুলো ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

গবাদি পশু নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয়রা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ায় কৃষকরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। শহরের ধান বিক্রির হাট ও ট্রাক টার্মিনালের পূর্বাংশ তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও হরিহর নদের পানি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

যশোরের কেশবপুর শহরের মধ্যকুল খানপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির মধ্যে জলাবদ্ধ পানির ভেতর দিয়ে প্রয়োজনীয় মালপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে যাচ্ছেন স্থানীয়রা।

এলাকার বাসিন্দা জাহানারা খাতুন জানান, বসতঘরে পানি উঠে গেছে। তাই মালামাল গুছিয়ে অন্যত্র যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, গত বছরও হরিহর নদের পানি ঢুকে আমাদের এলাকা প্রায় ছয় মাস পানির নিচে ছিল। এবারও একই পরিস্থিতির মুখে পড়েছি।

সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল গ্রামের বাসিন্দা রুপালী খাতুন বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির পানি বের হতে না পারায় বাড়ির উঠানে এখন হাঁটুপানি জমে আছে। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

একই গ্রামের মাসুম বলেন, গরু-ছাগল নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি। কোথায় রাখব, কীভাবে রাখব, বুঝে উঠতে পারছি না।

সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল গ্রামের রুপালী খাতুন বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে বাড়ির উঠানে এখন হাঁটুপানি হয়েছে। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই গ্রামের মাসুম বলেন, গরু-ছাগল নিয়ে রয়েছি দুশ্চিন্তায়।

উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী নিয়াজ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে এ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সাড়ে তিন হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে।

কেশবপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল ফজল মো. এনামুল হক বলেন, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডই কমবেশি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত ২ হাজার ৫০০ জলাবদ্ধ পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধ পরিবারের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আলা বলেন, তার ইউনিয়নের মধ্যকুল, আলতাপোল, মূলগ্রাম, মাগুরাডাঙা, সুজাপুর ও ব্যাসডাঙা গ্রামে প্রায় দুইশ পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এলাকায় টানা বৃষ্টি ও নদনদীর পানি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, নদনদীতে পানিপ্রবাহের জন্য কচুরিপানা অপসারণ অব্যাহত রয়েছে। আপার ভদ্রা নদীতে একটি এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে খনন কাজ চলছে। আরেকটি এক্সক্যাভেটর দিয়ে বুড়িভদ্রা ও হরিহর নদেও খনন করা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলায় ৪৬ শিক্ষকের নিন্দা

তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় মাঠের বাইরে সাগরিকা

‘আমি বেঁচে আছি, মৃত্যুর খবর নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে ছাত্রলীগ’

তিন বছরের মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকায় ফ্লাইট চালাতে চায় ইউএস বাংলা

মির্জা গালিবের সঙ্গে স্টেজ শেয়ার করা অনেক গর্বের : জবি শিক্ষার্থী

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সাপ নিয়ে হাজির শত শত ভক্ত

ঢাকা কলেজে ভোক্তা অধিকার বিষয়ে আলোচনা সভা

পাকিস্তান সিরিজের জন্য দল ঘোষণা টাইগারদের

বাংলাদেশিদের ভিসা দিচ্ছে কি না, জানাল ভারত

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যাকাণ্ডে ৩ আসামির দোষ স্বীকার

১০

পিরোজপুরে সংঘর্ষে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু

১১

শিক্ষার্থীদের ভিসা জটিলতা ও ক্রেডিট ট্রান্সফার সমস্যা সমাধান জরুরি : ইউজিসি চেয়ারম্যান 

১২

রাবির তিন কর্মকর্তাকে পুলিশে দিল সাবেক শিক্ষার্থীরা

১৩

গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের প্রতিবেদন

১৪

একই অভিযোগ এনে এনবিআরের আরও ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

১৫

মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৫ ডাকাত গ্রেপ্তার

১৬

৩ জনের ডিএনএ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুরা বংশগত দুরারোগ্য রোগ থেকে মুক্ত

১৭

এসডোর গবেষণা / প্লাস্টিকের খেলনায় সিসা ও ক্রোমিয়ামের অতিমাত্রায় উপস্থিতি

১৮

ষড়যন্ত্র কখনোই টিকে থাকে না : মুরাদ

১৯

গোপালগঞ্জে কারফিউর সময় বাড়ল

২০
X