প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইসরায়েলে বিক্ষোভ চলছে। জোটসঙ্গীরা তার সরকারের পতন ঘটাতে চাইছে। কিন্তু নিজের মতো করে ঠিকই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছেন নেতানিয়াহু। এবার তাকে নিয়ে সুদূর মার্কিন মুলুকেও ‘বন্ধু’ জো বাইডেনের ঘরে আগুন লেগেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন হলেও এবার খোদ ডেমোক্রেটদের মধ্যে নেতানিয়াহুবিরোধী মনোভাব প্রবল আকার ধারণ করেছে।
ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রবল সমর্থক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় দিনে দিনে দানবে পরিণত হয়েছে ইসরায়েল। আর ইসরায়েলকে দানব বানানোর পুরো ক্রেডিট নেতানিয়াহুর।
এবার সেই ক্রেডিটের পুরস্কারস্বরূপ মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুকে ভাষণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আর সেই আমন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বাইডেনের ঘরে আগুন জ্বলছে। নেতানিয়াহুর আসন্ন ভাষণকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন অনেকে।
দীর্ঘ সময় মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে স্পিকার ছিলেন ডেমোক্রেট নেতা ন্যান্সি পেলোসি। তবে শুক্রবার সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘ইসরায়েল প্রেমী’ এই প্রভাবশালী বর্ষীয়ান নেতা, নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করেন।
নেতানিয়াহুকে কংগ্রেসে ভাষণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো ‘ভুল’ ছিল বলেও মন্তব্য করেন পেলোসি।
তার ভাষায়, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কারণেই গাজায় শান্তি আসছে না। অবশ্য নেতানিয়াহু আর বেশি দিন টিকবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন পেলোসি।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে পেলোসির ‘দ্বন্দ্বের’ ইতিহাস বেশ পুরনো। ২০১৫ সালেও নেতানিয়াহুর কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। তখন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ছিলেন পেলোসি।
সিএনএনকে সেই কথা উল্লেখ করে পেলোসি বলেন, আমি তখন তার ভাষণের অনুমোদন দেইনি। বর্তমানে স্পিকার থাকলে নেতানিয়াহুকে ভাষণের অনুমতি দিতেন কি না এমন প্রশ্নে পেলোসি বলেন, কখনই না।
পরম মিত্র দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করায় বিবৃতি দিতে হয়েছে ডেমোক্রেট পার্টিকে। তারা বলছে, ইসরায়েলের প্রতি পেলোসির নেতিবাচক মনোভাব নেই। তিনি এখনও ইসরায়েলকে ভালোবাসেন। কিন্তু নেতানিয়াহুর প্রতি তার তিক্ততা এতটুকু কমেনি।
২০১৫ সালে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণ বয়কট করেছিলেন প্রায় ৬০ জন ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতা। এবারও তেমনটা ঘটার শঙ্কা করা হচ্ছে।
সারা বিশ্ব চাইছে, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করুক ইসরায়েল। কিন্তু একরোখা নেতানিয়াহু যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান। গেল মাসে ইসরায়েলের হয়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন বাইডেন। নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দেন তিনি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেননি।
নিরপরাধ মানুষকে হত্যার রক্ত হাতে লাগা নেতানিয়াহুকে ঠিকই ঘরে ডেকে পুরস্কার দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মার্কিন রাজনীতিবিদদের একটি অংশ। এ নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে মার্কিন মুলুকে।
মন্তব্য করুন