রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কম খরচে খাঁচায় মাছ চাষে ভরছে লাভের ঝুড়ি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ
কম খরচে খাঁচায় মাছ চাষে ভরছে লাভের ঝুড়ি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ফুলজোর নদীতে প্রায় ১ হাজার ৮০০ খাঁচায় মাছ চাষ হচ্ছে। এতে যুক্ত আছেন ১০০ মাছচাষি। খাঁচায় মাছ চাষ বেকার যুবকদের জীবনে এনেছে আমূল পরিবর্তন। অল্প পুঁজিতে, সহজ প্রযুক্তিতে ও কম সময়ে লাভবান হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এ চাষের জনপ্রিয়তা। এতে যেমন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, অসংখ্য পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আসছে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ফুলজোর নদীতে বকুলতলা, তিননান্দীনা, নলছিয়া, সাহেবগঞ্জ, ফরিদপুর, রামপুর, ঘুড়কা, বিষ্ণুপুর, ধানগড়া, জয়ানপুর ও ভূঁইয়াগাতী এলাকায় খাঁচায় মাছচাষ হচ্ছে। প্রায় ১ হাজার ৮০০ খাঁচায় মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত আছেন ১০০ মাছচাষি। কয়েকজন মাছচাষি জানান, প্রবহমান নদীতে খাঁচায় মাছ দ্রুত বড় হয়। রোগবালাইও অনেকটা কম হয়। খাবারও অনেকটা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়। এসব কারণেই খাঁচায় মাছ চাষে খরচ কম, কিন্তু লাভ বেশি। এ ছাড়া নদীর পানিতে মাছ প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। তাই স্বাদও ভালো, চাহিদাও বেশি।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এ উপজেলা পর্যায়ে সম্মাননা পাওয়া লোকমান হোসেন বলেন, আমার ৪৪টি খাঁচা আছে। এ ছাড়া আমার তত্ত্বাবধানে ১০০ মাছচাষি মিলে প্রায় দেড় হাজার খাঁচায় মাছ চাষ করছে। প্রতিটি খাঁচায় প্রথমে ৫০ গ্রাম ওজনের মাছ ছাড়ি, পরে তা এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত বড় হলে বিক্রি করা হয়। এভাবে বছরে দুইবার মাছ বিক্রি হয়। প্রতি কেজি মাছ উৎপাদনে খরচ পড়ে

১২০ টাকা, আর বাজারে বিক্রি করি

১৮০-১৯০ টাকায়। প্রতি কেজিতে ৫০-৬০ টাকা লাভ হয়।

ফরিদপুর গ্রামের জাকিরুল ইসলাম বলেন, আমার ২০টি খাঁচা আছে। এ থেকে ভালো লাভ করেছি। তাই আরও আটটি নতুন খাঁচা তৈরি করছি। বাঁশ, লোহার পাইপ, ড্রাম আর জাল দিয়ে ৬ ফুট গভীর, ১৬ ফুট প্রস্থ ও ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের খাঁচা বানাতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়। একেকটি খাঁচায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার পিস মাছ ছাড়ি। পাঁচ-ছয় মাস পর বিক্রি করি। একই গ্রামের মিদুল হক বলেন, আগে বেকার ছিলাম, এখন খাঁচায় মাছ চাষ করে আয় করছি। জীবনে পরিবর্তন এসেছে। পরিবারেও আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে।

রামপুর গ্রামের জহুরুল জানান, নদীর প্রবহমান পানিতে মাছের রোগবালাই তুলনামূলক কম। খাঁচায় মূলত মনোসেক্স তেলাপিয়া ও কার্প জাতীয় মাছ চাষ করি। বাজারে এগুলোর চাহিদা ও দাম বেশ ভালো। খামারের কর্মচারী শিহাব শেখ বলেন, আমাদের খামারে ২৪টি খাঁচা আছে। প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে খাবার দিই। মাছ এক থেকে দেড় কেজি হলেই বিক্রি করা হয়।

মাছচাষিদের অভিযোগ, শিল্পকারখানার বর্জ্য নদীতে পড়লে মাছ চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাদের দাবি, প্রশাসন যেন ফুলজোর নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। রায়গঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, পুকুরের পাশাপাশি নদী ও খালের উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছর খাঁচায় মাছ চাষের পরিমাণ আরও বাড়বে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্প / দরকষাকষি চলছে, আরও সময় লাগবে

সকালে ঘুম থেকেই উঠেই কি মোবাইল ফোন ঘাঁটেন, হতে পারে যেসব বিপদ

সাগরে মিলল ১২ কোটি টাকার গুপ্তধন

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

বিশ্ব শিশু দিবস আজ 

এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে : সারজিস 

ঢাকার তাপমাত্রা নিয়ে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস

গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ইউরোপজুড়ে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

ঘুম থেকে ওঠার পরই কি সারা শরীরে ব্যথা হয়, ভয়াবহ রোগের লক্ষণ নয় তো?

১০

আকিজ গ্রুপে চাকরি, পাবেন গ্র্যাচুইটিও

১১

ট্রাফিক জরিমানার নামে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে প্রতারণা, ডিএমপির সতর্কতা

১২

আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটালেন নদীপাড়ের মানুষ

১৩

টিভিতে আজকের যত যত খেলা

১৪

সোমবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৫

তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, ডিমলার বন্যা রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে

১৬

৬ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

তিস্তার পানির তোড়ে ভেঙে যেতে পারে ফ্লাইড বাইপাস সড়কটি

১৮

বজ্রপাতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১৯

দুই বাংলাদেশি যুবককে ফেরত দিল বিএসএফ

২০
X