বিশ্বে এবং এশিয়ায় শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হলো সিঙ্গাপুরের সরকারি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর (এনইউএস)। সিঙ্গাপুরের ফ্ল্যাগশিপ বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র ২৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চালু হয়েছিল ১৯০৫ সালে। স্থানীয় অধিবাসীদের চাহিদা পূরণে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ট্যান জিয়াক কিমের নেতৃত্বে একদল ব্যবসায়ী। ১৯০৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল স্ট্রেইটস সেটেলমেন্টস অ্যান্ড ফেডারেটেড মালয় স্টেটস গভর্নমেন্ট মেডিকেল স্কুল হিসেবে। সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টি দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় নাম পরিবর্তন করতে করতে ১৯৮০ সালে ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর এবং নানইয়াং ইউনিভার্সিটি একত্র হয়ে নামধারণ করে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর।
ক্যাম্পাস : বিশ্ববিদ্যালয়টির রয়েছে তিনটি ক্যাম্পাস। এগুলো হলো কেন্ট রিজ, বুকিত তিমাহ ও আউটরাম। অধিকাংশ ক্লাস পরিচালিত হয় কেন্ট রিজ ক্যাম্পাসে অথবা অনলাইনে। এনইউএসে আছে আটটি লাইব্রেরি যেগুলোর মধ্যে সাতটি কেন্ট রিজ ক্যাম্পাসে আর একটি বুকিত তিমাহ ক্যাম্পাসে।
শিক্ষার্থী ও শিক্ষক : ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশি, যাদের মধ্যে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে রয়েছে শতকরা ৮২ এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেলে ১৮ ভাগ। তাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আট হাজারের বেশি যার ৫৩ ভাগ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং ৪৭ ভাগ পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেলের। এ পর্যন্ত বিশ্বের একশরও বেশি দেশের শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে।
এটিতে মোট ফ্যাকাল্টি স্টাফ রয়েছে চার হাজারের বেশি, যাদের মধ্যে স্থানীয় শতকরা ৩৭ এবং আন্তর্জাতিক ৬৩ ভাগ।
র্যাঙ্কিং : ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (কিউএস) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বে ১১তম এবং এশিয়ায় প্রথম স্থান অর্জন করে। ২০২৩ সালের টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থান ১৯তম। ইউএসনিউজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্টে ২০২২-২৩ বেস্ট গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিজ র্যাঙ্কিংয়ে এটির স্থান ২৬তম।
বিখ্যাত শিক্ষার্থী : বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়াশোনা করেছেন এরকম বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—মালয়েশিয়ার চতুর্থ ও সপ্তম প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট বেনজামিন শিয়ার্স, সিঙ্গাপুরের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টং, মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী আবদুল রাজাক হুসেইন, ২০১০ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কন্সতানতিন নোভোসেলভ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের সাবেক চেয়ারম্যান চিউ চুন সেং প্রমুখ।
যেসব বিষয়ে পড়া যাবে : মেডিসিন অ্যান্ড ডেন্টিস্ট্রি, ডিজাইন অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, ল, আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস, কম্পিউটিং, পাবলিক হেলথ ও মিউজিক বিভাগে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট লেভেলে অনেক বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
বৃত্তি : আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেল—আসিয়ান আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ, ফ্যাকাল্টি অ্যাডমিনিস্টার্ড স্কলারশিপস, এনইউএস কলেজ স্কলারশিপস, বেনজি গ্রিনবার্গ স্কলারশিপ, সিআইএমবি আসিয়ান স্কলারশিপ, ড. গোহ কেং সোয়ে স্কলারশিপ, ইভলভ ওয়ারিয়র স্কলারশিপ, গামুদা স্কলারশিপ, জিআইসি স্কলারশিপ, কুউক ফাউন্ডেশন আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ডস, সৌদি আরামকো স্কলারশিপ।
গ্র্যাজুয়েট লেভেল—এনইউএস রিসার্চ স্কলারশিপ, কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, প্রেসিডেন্টস গ্র্যাজুয়েট ফেলোশিপ, লি কুয়ান ইউ স্কলারশিপ, এনইউএস সিংহ স্কলারশিপ, এ স্টার গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ, এ স্টার কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স স্কলারশিপ, ডেটা-সায়েন্স স্কলারশিপ, সিকিউরিটি স্কলারশিপ, সিএসআই সিঙ্গাপুর পিএইচডি গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ, এনইউএস ইন্ডাস্ট্রি-রিলেভেন্ট পিএইচডি স্কলারশিপ, এনইউএস মেডিসিন গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অ্যাওয়ার্ড, এলকেওয়াই স্কুল অব পাবলিক পলিসি পিএইচডি স্কলারশিপ, এনইউএস সুঝাউ রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্কলারশিপ, তিয়ানজিন ইউনিভার্সিটি-এনইউএস জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ইন ফুঝাউ স্কলারশিপ, এনইউএস চোংকিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্কলারশিপ, এমবিআই পিএইচডি রিসার্চ স্কলারশিপ, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব ডিজিটাল ফিন্যান্স স্কলারশিপ, এআই সিঙ্গাপুর স্কলারশিপ, এনইউএস-ডিএসও স্কলারশিপ, ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স ডিনস গ্র্যাজুয়েট ফেলোশিপ।
ভর্তি : ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরে ভর্তি সম্পর্কিত বিস্তারিত জানা যাবে www. nus.edu.sg ওয়েবসাইট থেকে।
মন্তব্য করুন