আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০০ এএম
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের খপ্পরে

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের খপ্পরে

আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক মশিউর রহমান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও তার সময়ে এবং বিগত আওয়ামীপন্থি উপাচার্যদের সময়ে সুবিধাভোগী সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয় রয়েছে। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। সিন্ডিকেট ভাঙার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছেন। সিন্ডিকেটের সদস্যরা নিজেদের ও সহযোগীদের বদলি, পদোন্নতি, কলেজের কমিটি সবই করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ আমলে সুবিধাভোগী এই সিন্ডিকেট সে সময়ে বঞ্চিত হয়েছেন দাবি করে নিজেরা বসেছেন লোভনীয় সব পদে। সূত্র বলছে, বিগত সরকারের সময়ে তারা সহকারী রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, এই সিন্ডিকেটের অন্যতম হলেন উপাচার্যের সচিব ও অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিনুল আক্তার, শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক শফিউল করিম শফিক, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জসিম উদ্দিন, এস্টেট দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসলেম উদ্দিন, অতিরিক্ত কলেজ পরিদর্শক সানাউল্লাহ মিঞা, আঞ্চলিক কেন্দ্র সমন্বয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বেলাল হোসাইন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এস এম মাসুদ রানা (আতাউর)। তাদের সহযোগী হিসেবে রয়েছেন পরিবহন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রফিকুল ইসলাম, আইনবিষয়ক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান পদত্যাগ করেন ১১ আগস্ট। এর আগে ৮ আগস্ট ৬২ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। সেই তালিকায় সিন্ডিকেট ও সহযোগী কয়েকজনের নামও ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, এ তালিকায় সাবেক উপাচার্য মশিউর রহমান স্বাক্ষর করেননি। সিন্ডিকেটের লোকজনই তালিকা তৈরি করে রেজিস্ট্রারকে দিয়ে জোর করে স্বাক্ষর করিয়েছেন। রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর করার কারণ হিসেবে এই সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ আমলে নিয়োগ পাওয়া রেজিস্ট্রারকে রাখাই হয়েছে এই সিন্ডিকেটের স্বার্থসিদ্ধির জন্য।

উপাচার্য দপ্তরের সাবেক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শুদ্ধাচার দপ্তর এবং রেজিস্ট্রার অফিস থেকে বদলি ও পদোন্নতির ফাইল যায় উপাচার্যের দপ্তরে। তার অনুমতি ও স্বাক্ষরের পর সেখানে স্বাক্ষর করেন রেজিস্ট্রার। এরপর সেটি অফিস আদেশ আকারে জারি হয়। কিন্তু খোদ উপাচার্য জানিয়েছেন, তিনি এ আদেশে স্বাক্ষর করেননি। ৫ আগস্টের পর কোনো বদলি কিংবা পদোন্নতির ফাইলেই তিনি স্বাক্ষর করেননি। উপাচার্য এটিকে জালিয়াতিও বলেছেন। এই কর্মকর্তা জানান, অফিসিয়াল ফাইল নোটের মাধ্যমে না দিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভুয়া বদলি আদেশে সিন্ডিকেটের সবাই যে যার মতো বিভিন্ন পদে বসে গেছেন। অজ্ঞাত কারণে নতুন উপাচার্যও এই সিন্ডিকেটের বাইরে যেতে পারছেন না।

এদিকে সবকিছু নিয়মমাফিকই হয়েছে বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনের। তিনি বলেন, এই বদলিতে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। চাপের মুখে এসব করেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি আর কোনো উত্তর দেননি।

গত ৮ আগস্টের বদলি তালিকা থেকে জানা গেছে, সানাউল্লাহ মিঞাকে উপ-কলেজ পরিদর্শক থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর করা হয়েছে। সহকারী রেজিস্ট্রার আমিনুল আক্তারকে স্নাতকপূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুল শাখা থেকে উপাচার্যের সচিব পদে এবং সহকারী রেজিস্ট্রার বেলাল হোসাইনকে স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে আঞ্চলিক কেন্দ্র সমন্বয় দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। তবে গত ২১ অক্টোবর সানাউল্লাহকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত কলেজ পরিদর্শক পদে বদলি করা হয়েছে।

এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর বেলাল, জসিম, আমিনুল ও মোসলেম পদোন্নতি পেয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার থেকে উপরেজিস্ট্রার হন। পাঁচ দিন পরই বদলির আদেশ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবার শফিককে শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, জসিমকে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, বেলালকে আঞ্চলিক কেন্দ্র সমন্বয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, রফিকুলকে পরিবহন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, মোসলেমকে এস্টেট দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এবং আমিনুল আক্তারকে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) করা হয়। এ ছাড়া, মিজানকে ১ সেপ্টেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী করার পর একই মাসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। মোস্তাফিজকে উপাচার্যের দপ্তরের উপপরিচালক থেকে জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে, শফিক আওয়ামী লীগের টানা চার মেয়াদের প্রথম মেয়াদে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার হয়েছিলেন। একই সরকারের সময়ে হয়েছেন উপরেজিস্ট্রার। তিনি আগের দুই উপাচার্যের সময়ে তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। মশিউর রহমানের ব্যক্তিগত কাজও করে দিতেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি চাকরিজীবনের বেশিরভাগ সময়েই অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন।

উপরেজিস্ট্রার থেকে উপাচার্যের সচিব হওয়ার রেওয়াজ থাকলেও আমিনুল আক্তার হয়েছেন সহকারী রেজিস্ট্রার থেকে। অধ্যাপক আমানুল্লাহ গত ২৬ আগস্ট দায়িত্ব নিতে ক্যাম্পাসে যেতেই নিজেকে উপাচার্যের সচিব পরিচয় দিয়ে সবার আগে এগিয়ে যান আমিনুল। ধীরে ধীরে উপাচার্যের বিশ্বস্ত হতে শুরু করেন। এ সুযোগে সিন্ডিকেটের জাল বিছিয়ে দেন। উপাচার্যকে কবজায় নিয়ে তার বাসভবন ও অফিসে কে কে আসবেন, কারা দেখা করতে পারবেন, তা নির্ধারণ করেন আমিনুল আক্তার। এখানে তার সঙ্গে অন্যদের আধিপত্য বিস্তারে প্রতিযোগিতাও রয়েছে।

সহকারী রেজিস্ট্রার থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর উপ-রেজিস্ট্রার হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই পদোন্নতি পান জসিম উদ্দিন। আমিনুল ও জসিম আওয়ামী লীগের আমলে সহকারী রেজিস্ট্রার হলেও উপ-রেজিস্ট্রার হতে পারেননি। আবার যোগ্যতা থাকলেও বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সহকারী রেজিস্ট্রারকে উপ-রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। ২০ বছরের জ্যেষ্ঠতা এবং বঞ্চিত বিবেচনা করলে এরাই উপ-রেজিস্ট্রার হওয়ার জন্য বেশি যোগ্য।

সানাউল্লাহ মিয়া বিএনপির সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে যোগ দিলেও পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। আওয়ামী লীগের আমলেই তিনি সহকারী ও উপ-রেজিস্ট্রার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে সহকারী রেজিস্ট্রার হয়েছিলেন মোসলেম উদ্দিনও। হারুন-অর-রশিদ বা মশিউর রহমানের সময় প্রকৌশল দপ্তরের এমন কোনো কাজ নেই, যা করেননি মিজানুর রহমান। তিনি উপ-রেজিস্ট্রার হয়েছিলেন মশিউর রহমানের সময়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য মূনাজ আহমেদ নুরেরও সবচেয়ে বড় সহযোগী ছিলেন এই মিজান। ১৮ সেপ্টেম্বর বেলাল হোসাইন উপ-রেজিস্ট্রার হওয়ার পর পাঁচ দিনের মাথায় আঞ্চলিক কেন্দ্র সমন্বয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হয়ে যান। রফিকুল ইসলামও একইভাবে হয়ে যান পরিবহন দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক।

মাসুদ রানা আওয়ামী লীগ আমলে পদোন্নতি পেয়েছেন। উপ-কলেজ পরিদর্শকের পদে ছিলেন। তবে ১ সেপ্টেম্বর তাকে অতিরিক্ত কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) পদে বদলি করা হয়। ২১ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর হন তিনি। সাবেক উপাচার্য মশিউর রহমানের সময় পদোন্নতি পেয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার থেকে উপ-রেজিস্ট্রার হন নজরুল ইসলাম। এখন তিনি আইন শাখার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক। বিগত সময়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়া নজরুল ইসলাম এখন নিজেকে বিএনপি মতাদর্শী বলে দাবি করেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে সুবিধাভোগী মুস্তাফিজ গত ২২ বছর উপাচার্যের দপ্তরের উপ-পরিচালক ছিলেন। মশিউর রহমানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সবাই তাকে ‘ভিসির মুখ্য সচিব’ বলে ডাকতেন। সম্প্রতি তিনি জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হয়েছেন। সাধারণত গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের এই দপ্তরে নিয়োগ বা বদলি করা হলেও এক্ষেত্রে তা হয়নি। তাকে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরাই চেনেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, গত ১ সেপ্টেম্বর আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকারকে ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক করা হয়; কিন্তু তাকে পুতুল করে রেখেছে এই সিন্ডিকেট। এ দপ্তরের সব কাজ আমিনুল আক্তারের নির্দেশে করে কলেজ পরিদর্শন শাখার উচ্চমান সহকারী মাহমুদুল হাসান ওরফে সনেট।

অভিযোগ রয়েছে, উপাচার্য যেখানে যান, সিন্ডিকেটের সদস্যরা সেখানেই চলে যান। এমনকি সম্প্রতি উপাচার্য ভারত ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেখানেও সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্য গিয়েছিলেন। গাজীপুরে মূল ক্যাম্পাসে উপাচার্যের দপ্তর এবং ঢাকা অফিসের বাসভবনে সার্বক্ষণিক সিন্ডিকেটের সদস্যরা থাকেন। সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস ও নগর অফিসে ঘুরে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০২২ সালের অক্টোবরে ১০০ সহকারী রেজিস্ট্রারকে ষষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্তির তারিখ থেকে ছয় বছরপূর্তিতে পঞ্চম গ্রেডে বেতন দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বেলাল, জসিম, মোসলেমকে ২০১৯ সালের ১৯ জুন এবং আমিনুলকে ২০২১ সালের ২২ জুন তারিখ ধরে এ সুবিধা দেওয়া শুরু হয়। যদিও তারা বলছেন, তারা বৈষম্যের শিকার।

অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সেকেন্ডম্যান ছিলেন শফিক। তবে তার দাবি, তিনি বিগত সময়ে বঞ্চিত ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘদিন বসার চেয়ার পাইনি, দাপ্তরিক কাজও ছিল না। সে কারণে মশিউর রহমানের নির্দেশে তার পার্সোনাল কাজ করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ আমলে পদোন্নতি পেলেও তদবির ছাড়া সেটি সম্ভব হয়নি বলে জানান শফিক। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সিন্ডিকেট নেই বলে দাবি তার। উপাচার্যের দপ্তরে সার্বক্ষণিক থাকার বিষয়টিও সত্য নয়।

আমিনুল আক্তার প্রথমে ৮ আগস্টে বদলির বিষয়টি তার জানা নেই বলে এড়িয়ে যেতে চান। নথিপত্র আছে জানালে বলেন, ৮ আগস্ট তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেকেরও বদলি হয়েছে এবং এই বদলি যথা নিয়মেই হয়েছে। সহকারী থেকে সরাসরি উপাচার্যের সচিব হননি বলে দাবি তার। মশিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন। প্রশ্নের একপর্যায়ে তিনি বলেন, আপনি বায়াসড হয়ে এসব বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন। উপাচার্যের দপ্তরে কে কোন কলেজের বিষয়ে আসে, সেটিও জানেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।

জসিম উদ্দিন বলেন, আমার চেয়ে জুনিয়ররা যখন পদোন্নতি পেয়েছে, তখনো আমি শুধু জাতীয়তাবাদী আদর্শের কারণে পিছিয়ে ছিলাম। যাদের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক করা হয়েছে, তাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই বলে দাবি তার।

বিএনপি আমলে চাকরি পাওয়ায় আওয়ামী লীগ আমলে নানা কাটখড় পুড়িয়ে পদোন্নতি পেতে হয়েছিল বলে দাবি সানাউল্লাহ মিয়ার। পরবর্তী সময়ে বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগের প্রোগ্রাম করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চাকরি রক্ষার্থে এমনটা করেছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলাম। ৮ আগস্টের বদলি যথানিয়মে হয়েছে বলে দাবি তার। সিন্ডিকেট বলে কিছু আছে বলে বিশ্বাস করেন না তিনি।

মোসলেম উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সিন্ডিকেট নেই। কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের নামে ষড়যন্ত্র করছে। তবে আওয়ামী লীগ আমলে সহকারী রেজিস্ট্রার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলেননি।

৮ আগস্ট বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে বেলাল হোসাইন বলেন, ‘এই প্রশ্ন আমাকে কেন? কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন। এটি যথা নিয়মেই হয়েছে। আপনি বিষয়টা প্যাচাইতাছেন।’ সিন্ডিকেট নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আপনি একটি পক্ষের হয়ে কাজ করছেন। আমি কোনো সিন্ডিকেটের অংশ নই। রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক গ্রুপ তৈরি হয়েছে। যারা কলঙ্ক লাগানোর জন্য এসব বলছে।

মিজানুর রহমান বলেন, আমি বঞ্চিত ছিলাম। ১৯ বছর পর পদোন্নতি পেয়েছি। আওয়ামী লীগ আমলে পদোন্নতির কথা তিনি অস্বীকার করেন। সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টিও ভিত্তিহীন বলে দাবি তার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুইবার পদোন্নতির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, মন্ত্রণালয়েও এর নজির আছে। মাসুদ রানা বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। আওয়ামী লীগের সময়ে কোনো সুবিধা পাইনি।

নজরুল ইসলাম বলেন, জাসদ ছাত্রলীগ করলেও পরবর্তী সময়ে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই। সে কারণে দীর্ঘ সময় পদোন্নতি পাইনি। মশিউর রহমানের সময় পদোন্নতি পেলেও সেটা খুব সহজে হয়নি। পরীক্ষা দিয়ে পদোন্নতি পেতে হয়েছিল। উপাচার্য দপ্তরে সার্বক্ষণিক থাকা এবং সিন্ডিকেটের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। এসব বিষয়ে জানতে মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, শক্তিশালী এই সিন্ডিকেট সক্রিয় থাকলেও উপাচার্য কিছুই করছেন না। সিন্ডিকেট ভাঙার বিষয়ে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই সিন্ডিকেটেই আবদ্ধ হয়ে থাকায় তিনি কার্যত অসহায় হয়ে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতেও সিন্ডিকেট ভাঙার বিষয়ে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা আশপাশে দুয়েকটা (কয়েকজন) চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। তবে সময় দিতে হবে। সামান্যতম প্রমাণ পেলে একটি লোকও রাখব না। তবে আমিনুলের বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ লেগেছে। অনেকের অনুরোধ না রাখায় এমনটি হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিশ্বকাপ ড্র ফরম্যাটে বড় পরিবর্তন আনল ফিফা

গোলাম রাব্বানীর দুই পদ বাতিল করল ঢাবি

সাভারে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল

দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না সার

দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেলে অটোর ধাক্কা, স্কুলশিক্ষক নিহত

প্রতিটি ইউনিয়নে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের ঘোষণা 

ইসলামেই আসবে সত্যিকারের মুক্তি : চরমোনাই পীর

হাসিনার লকারে শুধু পাটের ব্যাগ, যৌথ লকারে সোনার নৌকা-গয়না

রাজশাহীতে আর কোনো পুকুর ভরাট হবে না : বিভাগীয় কমিশনার

বিপিএলে নোয়াখালীর প্রধান কোচ হচ্ছেন সুজন

১০

ব্যালটে যেমন দেখা যাবে এনসিপির শাপলা কলি প্রতীক

১১

বার্জার অ্যাওয়ার্ড ফর ইন্টেরিয়র ডিজাইন ২০২৫ উদযাপন

১২

এনসিপি জোটের ঘোষণা আসতে পারে আগামীকাল

১৩

মিঠুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১৪

এরদোয়ানকে নিয়ে মন্তব্য করায় সাংবাদিকের ৪ বছর কারাদণ্ড

১৫

এবার মালয়েশিয়ার কাছে হারল বাংলাদেশ

১৬

পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিয়েও বাঁচতে পারলেন না যুবদল কর্মী

১৭

অনলাইন শপিং ও গেমিংয়ে সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়ছে : ক্যাসপারস্কি

১৮

বাউবির ITVET-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হলেন ড. শামীম

১৯

সাবেক সচিব লতিফুল বারির মৃত্যু

২০
X