তখনো অনুশীলন শুরু করেনি বাংলাদেশ দল। শ্বেতশুভ্র জার্সি গায়ে নেটের কাছে দাঁড়িয়ে এনামুল হক বিজয়। সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের জন্য ফটোশুট করতেই এত আয়োজন তিন বছর পর টেস্ট দলে ফেরা এনামুলের। এরপর ড্রেসিংরুমে ফিরে নিলেন মাঠে নামার প্রস্তুতি। দেড় ঘণ্টার মতো মাঠে ছিলেন তিনি। সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের কাছ থেকে মিলল নানা টিপস। ব্যাটেও যতটা সম্ভব শান দিয়ে নেন ডানহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটার। সবকিছু ঠিক থাকলে সাগরিকায় দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে সুযোগ মিলতে যাচ্ছে তার। বাকি দুই ওপেনারের ব্যর্থতায় এমন সুযোগ মিলতে পারে তার। আজ সকাল ১০টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচে সে রকম কিছুর দেখা মিলতে পারে বাংলাদেশের একাদশে।
টেস্ট সংস্করণে ব্যাটারদের ঘিরেই যত দুশ্চিন্তা বাংলাদেশের। সর্বশেষ কয়েক টেস্টে বারবার ওপেনার পরিবর্তনেও মেলেনি কোনো সমাধান। উল্টো ঘুরেফিরে লিখতে হচ্ছে ব্যর্থতার একই গল্প। সিলেট টেস্ট হারের পেছনেও বড় দায় তাদের। শুরুতেই দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও সাদমান ইসলামের ব্যর্থতার চাপ আর নিতে পারেননি পরের ব্যাটাররা। সেটাই দলকে ভুগিয়েছে বারবার। তাইতো আবার ব্যর্থদের ছাপিয়ে সুযোগ মিলতে পারে এনামুলের। এক যুগের টেস্ট ক্যারিয়ার; অথচ খেলেছেন মাত্র পাঁচ ম্যাচ। অভিষেকের প্রথম দুই বছরেই খেলেছেন চার ম্যাচ। বাকি ম্যাচ খেলতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল আট বছর। এবার চট্টগ্রামে সুযোগ মিললে ষষ্ঠ টেস্টের অপেক্ষা ফুরাবে ঠিক তিন বছর পর। যদিও এভাবে সাদা বলে পারফর্ম করে এনামুলের লাল বলের দলে ডাক পাওয়াকে আদর্শ হিসেবে দেখছেন না বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। তার পরও উপায় না থাকার যুক্তিই ফুটল তার কণ্ঠে, ‘হয়তো এটা আদর্শ নয়। তবে যেভাবে প্রতিযোগিতা হয় এখানে, চার দিন বা বিপিএল অন্যগুলো। এখানে ওপেনিংয়ের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি আমরা। কাজ করে যাচ্ছি এটা নিয়ে।’
প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন বোলাররাই। বিশেষ করে দুই ইনিংসে স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের ফাইফার স্পর্শ অনেক বড় পাওয়াই বটে। সে হিসেবে খুব কার্যকরী ছিলেন না বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। চট্টগ্রাম টেস্টে যদিও তার বাদ পড়ার শঙ্কা তেমন নেই। তবে বাড়তি স্পিনার প্রশ্নে সুযোগ মিলতে পারে নাঈম হাসানের। অন্তত প্রতিপক্ষে ব্যাটিং লাইনআপ ও মিরাজের পারফরম্যান্সই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করতে পারে টিম ম্যানেজমেন্টকে। অন্যদিকে পেস বোলিংয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়া বাংলাদেশের পরিবর্তন আসাটাও স্বাভাবিক। পিএসএলের জন্য চলে গেছেন নাহিদ রানা। তার পরিবর্তে যদি বাড়তি স্পিনার নেয়। তাহলে খালেদ আহমেদকে বিশ্রাম দিয়ে অভিষেক করানো হতে পারে তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে। অন্তত সিরিজ বাঁচাতে এটাই হতে পারে বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ে অন্যরকম অস্ত্র। সাকিবের ব্যাটিং শক্তিটাও অ্যাডভান্টেজ হিসেবে দেখছেন কোচ সিমন্স, ‘আমার মনে হয় সে যে কোনো ফরম্যাটেই ভালো করতে পারবে। যে লেন্থে সে বল করে, দারুণ পেসও আছে। সাদা বলে স্টাম্পে হিট করে।’ চট্টগ্রামে বাংলাদেশের টেস্ট পরিসংখ্যান মোটেও স্বস্তির নয়। এই মাঠে সর্বশেষ জয়টা এসেছিল সাত বছর আগে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর একটি ড্র ছাড়া বাকি ৬টিতেই হার দেখেছে স্বাগতিকরা। এবার সিরিজ বাঁচাতেই পরিসংখ্যান উল্টে দিতে হবে নাজমুল হোসেন শান্তদের।
মন্তব্য করুন