কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৪ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

আ.লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জে

টেনশনে ১৪ দল ও মিত্ররা
আ.লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটের মাঠে বিচরণ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা। ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে জোটের শরিকদের একটি বাদ দিয়ে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ায় ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীদেরও ঘুম হারাম। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউকে সংসদ সদস্য হওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কৌশলে জমে উঠেছে সারা দেশের কয়েক ডজন আসনের নির্বাচন। এসব আসনে দলের মন্ত্রী-এমপি, ১৪ দলীয় জোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্ররা প্রার্থী হয়েছেন। ভোটের মাঠের খেলা জমে উঠেছে জোটের আসনগুলোতে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমার মাধ্যমে।

ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে শরিকদের আসন বণ্টন এখনো না হওয়ায় ভোটের উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে সারা দেশেই। সেইসঙ্গে বিএনপি থেকে নির্বাচনে আসা নেতা ও মিত্র দলগুলোর সঙ্গে এখনো কোনো বোঝাপড়া না হওয়ায় হেভিওয়েট প্রার্থীদের সঙ্গে হেভিওয়েট প্রার্থীদের লড়াই হতে পারে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে হিসাবনিকাশ।

জানা গেছে, ১৪ দলীয় জোটের জন্য একটি ও জাতীয় পার্টির জন্য একটি আসন বাদ দিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২৯৮ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়। জাতীয় পার্টি সারা দেশে ২৮৯ জনকে মনোনয়ন দেয়, অন্যদিকে বিএনএম ৮২ আসন ও সাবেক এমপিসহ স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন কয়েক ডজন বিএনপি নেতা। এ ছাড়া বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অনেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, ফরিদপুর-৪ আসনে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ। শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে তীব্র লড়াই হবে বর্তমান সংসদ সদস্য এবং যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের সঙ্গে।

পিরোজপুর-১ আসনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কারণ তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিপক্ষ দুবারের সংসদ সদস্য এ কে এম আব্দুল আউয়াল। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আউয়াল। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে শ ম রেজাউল করিমকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।

চট্টগ্রাম-১২ আসনে তিনবারের এমপি বর্তমান সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সঙ্গে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবেন প্রথমবার দলের মনোনীত প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। এখানেও জোর লড়াইয়ে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে গাজীপুরের পাঁচটি আসনেই রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। এর মধ্য গাজীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী রুমানা আলী টুসির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা রয়েছে।

গাজীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমির বিরুদ্ধে প্রার্থী তারই ফুপাতো ভাই কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আলম আহম্মেদ ও কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আরিফ।

বরিশাল-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান এমপি পঙ্কজ নাথ।

ঝিনাইদহের চারটি আসনেই রয়েছে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়জয়কার। এর মধ্যে ঝিনাইদহ-১ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বিশ্বাস বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলাল বিশ্বাস। হাই ও দুলাল বিশ্বাসের মধ্য নির্বাচনী লড়াই জমে উঠবে।

অন্যদিকে ঝিনাইদহ-২ আসনে নৌকার তাহজীব আলম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু।

ঝিনাইদহ-৩ আসনে নির্বাচনী লড়াই সবচেয়ে বেশি জমে উঠবে। কারণ আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দীন মিয়াজীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন বর্তমান এমপি শফিকুল আজম চঞ্চল।

রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া মাহি।

রাজশাহী-৩ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে বর্তমান এমপি আয়েন উদ্দিন। রাজশাহী-৪ আসনে বর্তমান এমপি এনামুল হকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। রাজশাহী-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক এমপি কাজী আব্দুল ওয়াদুদের বিরুদ্ধে বর্তমান এমপি মুনসুর রহমান।

শরীয়তপুর-২ আসনে নৌকার প্রার্থী পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী খালেদ শওকত আলী। খালেদ প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার কর্নেল (অব.) শওকত আলীর ছেলে। এই আসনেও নির্বাচন জমে উঠবে বলেও জানা গেছে। ইতোমধ্যে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ককটেল বিস্ফোরণে দুপক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন এই আসনের সাবেক এমপি গোলাম রাব্বানী। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী মুহা. জিয়াউর রহমান ছাড়াও বিদ্রোহী সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস।

ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক। শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে নির্বাচন জমে উঠতে পারে। অন্যদিকে ফরিদপুর-৩ আসনে শামীম হকের বিপরীতে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কে আজাদ প্রার্থী।

জামালপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলালের বিরুদ্ধে লড়বেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. মুরাদ হাসান।

রংপুর-২ থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু বিদ্রোহী প্রার্থী।

বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াত সাদিক আব্দুল্লাহ। ফলে এই আসনে বড় চ্যালেঞ্জে পড়েছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী।

এদিকে, নেত্রকোনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরুর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। নেত্রকোনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করবেন সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু ও সাবেক সংসদ সদস্য মনজুর কাদের কৌরাইশী।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল মোমিন মণ্ডলের বিরুদ্ধে সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে আভাস মিলেছে।

সিলেট জেলার ছয়টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর দেখা মিললেও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগের সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের লড়াই হতে পারে। একইভাবে সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান এমপি ও মনোনয়নবঞ্চিত ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

হবিগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক এমপি কেয়া চৌধুরী। হবিগঞ্জ-৪ প্রার্থী আসনে ক্ষমতাসীনদের দলীয় বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে বিপদে ফেলতে পারেন বিদ্রোহী প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সমুন।

নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল।

নাটোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রতিযোগী হিসেবে থাকছেন বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার। জমে উঠতে পারে নাটোর-৪ আসনের নির্বাচন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর বিপরীতে আছেন সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবষেণা সম্পাদক আসফি আব্দুল্লাহ শোভন।

কুমিল্লা-৪ আসনে হতে পারে তীব্র লড়াই। এই আসনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এবং বিদ্রোহী প্রার্থী দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের রেষারেষি দীর্ঘদিনের।

সাতক্ষীরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপন এবং বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমানের তীব্র প্রতিযোগিতা হতে পারে।

নরসিংদী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খান এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও তার স্ত্রী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌসী ইসলাম।

বরগুনা-১ আসনে দলের মনোনীত ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু, সাবেক ছাত্রনেতা খলিলুর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম সরোয়ার ফোরকান।

নরসিংদী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।

মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব। মৃণাল ও বিপ্লবের পুরোনো দ্বৈরথ দ্বাদশ নির্বাচনের ভোটেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাঙামাটির একমাত্র আসনে জোর লড়াই হতে পারে আওয়ামী লীগ মনোনীত দীপংকর তালুকদার ও বিদ্রোহী প্রার্থী উষাতন তালুকদারের মধ্যে।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের ফরিদুন্নাহার লাইলীর সঙ্গে ইস্কান্দার মির্জা শামীমের তীব্র লড়াই হতে পারে।

এ ছাড়া, চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে রেদওয়ান খান বোরহান লড়বেন। কুষ্টিয়া-৩ আসনে আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফের সঙ্গে লড়বেন পারভেজ আনোয়ার তনু। নেত্রকোনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদের সঙ্গে বর্তমান এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের ভাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের ভোটযুদ্ধ জমে উঠতে পারে।

এ ছাড়া নানাবিধ কারণে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে ছিটকে পড়াদের মধ্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ২৩ জন সংসদ সদস্য নির্বাচন নৌকার বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করবেন। তাদের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনে নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তার বিরুদ্ধে বর্তমান এমপি মাজহারুল হক প্রধান, গাইবান্ধা-৪ আসনে নৌকার আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বর্তমান এমপি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। একইভাবে নওগাঁ-৩ সৌরেন্দ্র নাম চক্রবর্তীর বিপরীতে ছলিম উদ্দিন তরফদার, নওগাঁ-৪ নাহিদ মোর্শেদের বিরুদ্ধে মুহাম্মাদ ইমাজউদ্দিন প্রামাণিক, মেহেরপুর-২ আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হকের বিরুদ্ধে সাহিদুজ্জামান খোকন, যশোর-৪ এনামুল হক বাবুলের বিরুদ্ধে রণজিত কুমার রায়, সাতক্ষীরা-২ আসনে আসাদুজ্জামান বাবুর বিরুদ্ধে মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, ময়মনসিংহ-৩ নিলুফার আনজুম পপির বিরুদ্ধে নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ময়মনসিংহ-৯ আসনে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন, সুনামগঞ্জ-১ রণজিত চন্দ্র সরকারের বিপরীতে মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-২ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে জয়া সেনগুপ্তা, হবিগঞ্জ-২ ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েলের বিপরীতে আবদুল মজিদ খান, কুমিল্লা-৮ আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিনের সঙ্গে নাছিমুল আলম চৌধুরী, নোয়াখালী-৬ আসনে মোহাম্মদ আলির বিরুদ্ধে তার স্ত্রী বেগম আয়েশা ফেরদাউস, কক্সবাজার-১ সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপির বিরুদ্ধে আছেন জাফর আলম।

ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সাবেক এমপি তৌহিদ জং মুরাদ এবং আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।

এ ছাড়া ১৪-দলের শরীকদের মধ্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর কুষ্টিয়া-২ আসনেই শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগ দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমকে মনোনয়ন দিয়েছে। তবে মেনন ঢাকার পরিবর্তে বরিশাল-২ এবং বরিশাল-৩ এই আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তবে এই দুই আসনে দুজনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বরিশাল-২ আসনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস দলের প্রার্থী। একইভাবে বরিশাল-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরদার মো. খালেদ হোসেন। এখানে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। লড়াই হতে পারে এই দুই আসনের যে কোনো প্রার্থীর সঙ্গে।

আওয়ামী লীগের আরেক শরিক দল জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান বর্তমান সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পিরোজপুর-২ আসনের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম-২ আসনে খাদিজাতুল আনোয়ারকে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

ফেনী-১ আসনে আওয়ামী লীগের অন্য দুই শরিক দলের শীর্ষ নেতা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতারের বিপরীতে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার রাজশাহী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী।

ঢাকা-৬ আসনের জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের আসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন নৌকার প্রার্থী।

ঢাকা-১৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল। তবে এখানে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন বিএনপির জোট থেকে বেরিয়ে আসা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর। এখানে এবার প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার।

ঢাকা-৪ আসনে সানজিদা খানমকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলেও এই আসনের সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। ঢাকা-১৭ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেও এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রার্থী হতে মনোনয়ন তুলেছেন। রংপুর-৩ আসন থেকেও মনোনয়নপত্র তুলেছেন জি এম কাদের, সেখানেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে তুষার কান্তি মণ্ডলকে।

সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, এখানে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফ্রি স্টাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকবে না। জোটের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়েও কোনো সমস্যা হবে না। তবে বিজয়ী হতে পারেন এমন কাউকে বাদ দেওয়া হবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন তৌহিদ আফ্রিদি

তারের পর এবার চুরি হলো সেতুর রিফ্লেক্টর লাইট

‘এবার আমাদের পালা’ স্বরূপ আচরণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে : টিআইবি

ভূমি অধিগ্রহণে আটকে আছে ইউলুপ, ইউটার্নে মরছে মানুষ!

কনে দেখতে যাওয়ার পথে নৌকাডুবি : নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার

থাইল্যান্ডের ক্লাবে আবার ভাইরাল ‘কাঁচা বাদাম গার্ল’ অঞ্জলি

চাকসুতে সমকামিতা সমর্থক ও মাদকাসক্তদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি

১০

ঠাকুরগাঁওয়ের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১

১১

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০ শয্যার এইচডিইউ উদ্বোধন

১২

এবার তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার

১৩

রাকসুতে প্রথম দিনে ৫ জনের মনোনয়ন সংগ্রহ 

১৪

ফিলিস্তিনিদের ৩০০০ জলপাই গাছ উপড়ে ফেলল ইসরায়েলি বাহিনী

১৫

দেশে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে : টুকু

১৬

ভারতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা ১৪ দিনের জেল হেফাজতে

১৭

বিয়ের আসরেই ১৫ লাখ টাকা খোয়ালেন বর

১৮

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে লাগবে কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা

১৯

ইউল্যাবে অনুষ্ঠিত হলো বৃহত্তম মার্কেটিং সামিট 

২০
X