শিরোনাম দেখে অবাক হতে পারেন। সিরিজ নিয়ে আলোচনা বাদ দিয়ে কেন তামিম ইকবালের কথা! তিনি তো এতক্ষণে ‘সাবেক’ হয়ে যাওয়ার কথা। বুঝেশুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পরও আলোচনার মধ্যমণি বাঁহাতি এ ওপেনার। যেখানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ বাঁচানোর আলোচনা হওয়ার কথা, সেখানে শুধুই তামিম আর তামিমকে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো চলমান নাটকীয়তা।
আর সেই নাটকের শেষ অঙ্ক … প্রধানমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় তামিমের অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার। আর তাতে বিসিবি সভাপতির মতো আর সবাই যেন স্বস্তিতে…
সিরিজের মাঝপথে তামিমের অবসরের সিদ্ধান্ত আবার সিদ্ধান্ত বদল … এ দুটো ঘটনা দলে কতটা প্রভাব ফেলেছে, সেটা মাঠে বুঝতে দেননি সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্তরা। তবে তামিম ইস্যু যে সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সিরিজ বাঁচানোর আজকের ম্যাচের কয়েক ঘণ্টা আগে জানা গেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে অবসরের সিসদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তামিম। আপাতত দেড় মাস ছুটি নিলেও বিশ্বকাপ পর্যন্ত তিনিই ক্রিকেটেই থাকছেন। এমন নাটকীয় ঘোষণায় স্বস্তি মিলতে পারে এই ভেবে, আজ দুপুর ২টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে চাঙ্গা মনোবল নিয়েই মাঠে নামবেন
সাকিব-লিটনরা।
যদিও বাংলাদেশ দলের গতকালের অনুশীলনের ছবি বলছে, তামিম প্রসঙ্গ আপাতত দলের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি। সকাল ১০টায় অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও খানিক আগেই অনুশীলনে নেমে পড়েন সাকিব-লিটন-শান্তরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অনুশীলনের পুরো অংশজুড়েই তারা সবাই ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে। সাকিবের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতেছিলেন শান্ত, নাসুমরা। উইকেট দেখা থেকে শুরু করে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক ও দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরণের সঙ্গে হাসিঠাট্টা ও পরিকল্পনা সাজাতে ব্যস্ত ছিলেন এ সিরিজের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অনুশীলনে তামিমকে অনুপস্থিতি বোঝা না গেলেও স্কোর বোর্ড থেকে শুরু করে সবখানে ছায়া হয়েছিলেন তিনি।
তামিম থাকবেনও না কেন! এ দলটাকে তো এতদিন আগলে রেখেছিলেন তিনি। ২০২০ সাল থেকেই ওয়ানডে দলের নেতা তিনি। তার এমন সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে বদলে দিয়েছিল দলের ভেতরকার চিত্র। সংবাদ সম্মেলনে আসা লিটনই তো বারবার উত্তর দিতে গিয়ে মেজাজ হারিয়ে বসেন। এতদিনে দলকে এতটাই আগলে নিয়েছিলেন তামিম, যে তার না থাকার প্রশ্ন বারবার আসায় নিতে পারেননি লিটন। অবশ্য বাংলাদেশ দলের যখন এ অবস্থা, তখন স্বস্তির বাতাস বয়ে যাচ্ছিল আফগানদের। প্রথম ম্যাচে জিতে সিরিজ এগিয়ে ছিল তারা। বাংলাদেশ দলের এ অবস্থা সিরিজ জেতার একটা সুযোগ মনে হয়েছে আফগান অধিনায়কের। গতকাল হাসমতউল্লাহ শহিদী যেমন বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের একজন; তিনি অতীতেও ভালো করেছেন এবং দলের অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তি ও লম্বা সময় ধরে এ সংস্করণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সুতরাং এটি (তার না থাকা) আমাদের জন্য একটি ভালো সুবিধা হবে। আগামীকালের (আজকের) খেলার জন্য অপেক্ষা করছি, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’ অর্থাৎ বাংলাদেশ দলের ভেতর ঘটে যাওয়া ঘটনায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছিলেন শহিদী। তবে তামিমের ফেরার পর সেটা হয়তো ভিন্ন মোড় নিতেও পারে বলা তো যায় না।
মন্তব্য করুন