রাফসান জানি
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:০৪ এএম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

গত বছরও কোকেন এনেছিলেন সোকো

বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার
গত বছরও কোকেন এনেছিলেন সোকো

দেশের ইতিহাসে কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছেন পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউর নাগরিক নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো। পেশায় নার্স এই নারী এর আগেও বাংলাদেশে এসেছিলেন। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসার পর ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করেন তিনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) কর্মকর্তারা বলছেন, সেবারও সোকো ঢাকায় কোকেনের চালান নিয়ে এসেছিলেন। তবে পরিমাণ কেমন ছিল, তা জানা যায়নি।

ডিএনসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোকো পেশায় নার্স হলেও তিনি ঢাকা আসেন পোশাক ব্যবসায়ী পরিচয়ে। অন অ্যারাইভাল ভিসা পেতে বাইয়িং হাউসের আমন্ত্রণপত্র ব্যবহার করেন। এবারও তাই করেছেন। কিন্তু ভিসা নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার আগেই ডিএনসি কর্মকর্তাদের হাতে ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম সলিড কোকেনসহ ধরা পড়েন তিনি।

কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছন, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল সোকোর। ঢাকায় অবস্থান করার জন্য বিমানবন্দর সংলগ্ন উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইন-এ রিজার্ভেশনও করা ছিল তার। সোকোকে গ্রেপ্তারের পর ওই হোটেল থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঞ্জানিয়ার নাগরিক মোহামেদি আলি নামে একজনকে ২০০ গ্রাম কোকেনসহ গ্রেপ্তার করেছে ডিএনসি।

ডিএনসি বিমানবন্দর সার্কেলের পরিদর্শক দেওয়ান মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সোকো প্রথমে নিজ দেশ মালাউ থেকে ইথিওপিয়া যান। ইথিওপিয়া থেকে যান কাতারের দোহায়। দোহা থেকে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তার বাংলাদেশ থেকে আবারও মালাউ যাওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশে অবস্থান করা আরেক বিদেশি নাগরিকের কাছে কোকেনের চালানটি পৌঁছানোর কথা ছিল। সেই বিদেশিসহ আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্তত পাঁচজন শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে ডিএনসিসহ অন্য বাহিনীর সদস্যরা। গত দুদিনে বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। তবে জড়িতরা আগেই অবস্থান পরিবর্তন করে আত্মগোপনে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন অভিযান সংশ্লিষ্টরা।

গ্রেপ্তার সোকো ও মোহামেদি দুজনই কোকেন বহনকারী বলে জানিয়েছে ডিএনসি। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, সোকো বাংলাদেশে আরেক বিদেশি নাগরিকের কাছে এই চালান পৌঁছে দিয়ে নিজ দেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। একইভাবে মোহামেদিও তার চালানটি হস্তান্তর করার প্রক্রিয়ায় ছিলেন। এর আগেই গ্রেপ্তার হন তারা।

ডিএনসি পরিদর্শক দেওয়ান মো. জিল্লুর রহমান কালবেলাকে বলেন, দুজনকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী আমাদের অভিযান চলমান।

সোকোকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিএনসির কর্মকর্তারা জানান, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো কোকেনের মূল উৎস। নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য সেসব দেশ থেকে সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে কোকেনের চালান পৌঁছানো বেশ দুরূহ। সেজন্য বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিরা। বাংলাদেশ থেকে কোকেনের প্রাথমিক গন্তব্য পার্শ্ববর্তী একটি দেশ। এরপর মধ্যপ্রাচ্যের এক বা একাধিক দেশ ঘুরে কোকেনের চালান পৌঁছে যায় ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার দেশগুলোতে।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক সংস্থা ইউএনওডিসি বলছে, বাজারে যে পরিমাণ মাদক ঢুকে তার মাত্র ১০ ভাগ ধরা পড়ে। বাকিগুলো বাজারে ছড়িয়ে যায়। বাংলাদেশে যে পরিমাণ কোকেন ধরা পড়ছে তত বড় মার্কেট দেশে নেই বলে জানিয়েছেন ডিএনসির পরিচালক (অপারেশনস ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজ। তিনি কালবেলাকে বলেন, বাংলাদেশে কোকেনের বড় মার্কেট নেই। উচ্চবিত্তদের মধ্যে কোকেনের চাহিদা আছে। কিন্তু সেটি কম। ইয়াবা, গাঁজা, আইসের মতো মাদকের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশকে বাজার নয়, আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সদস্যরা কোকেনের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফেব্রুয়ারির পর নির্বাচন পেছালে সরকারকে এক ঘণ্টাও ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হবে না : ইশরাক হোসেন

পায়রা বন্দর ঘিরে বহুমুখী পরিকল্পনা করেছে সরকার : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

মিরপুরে বাসায় ডাকাতি, পালানোর সময় আটক ৪

যারা মবতন্ত্র কায়েম করতে চায়, তারাই নির্বাচনবিরোধী : টুকু

স্বাধীনতা বিরোধীদের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে : বিএনপি নেতা নীরব

৪৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হলেন সাব্বিরুল আলম

আজ ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’, অনুষ্ঠানমালা থাকছে সারা দিন

সরকারের অভিলাষ নিয়ে আমরা শংকিত : চরমোনাই পীর

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর ধৃষ্ঠতাপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে : লুৎফর রহমান

১০

পিনাকী ভট্টাচার্যসহ বেশ কয়েকজনকে ধন্যবাদ জানালেন জামায়াত আমির

১১

গণমিছিলে গিয়ে বিএনপি নেতার আকস্মিক মৃত্যু

১২

বাহাত্তরের সংবিধানে সব জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি : নাহিদ

১৩

খাদ্যের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত নেতানিয়াহু

১৪

আমরা অনেক ডিফিকাল্টির মধ্যে আছে : নাহিদ 

১৫

সাকিবের জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে কী বললেন মির্জা ফখরুল

১৬

এনআইডি আবেদনে ফের সুযোগ

১৭

সীমিত হতে পারে টেস্ট খেলুড়ে দেশের সংখ্যা!

১৮

মাদ্রাসার শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা, গণপিটুনিতে হত্যাকারী নিহত

১৯

পল্টন মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণ

২০
X