মুহাইমিন ইসলাম
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

প্রাকৃতিক আজাব কখন, কেন হয়

প্রাকৃতিক আজাব কখন, কেন হয়

মানুষের পাপাচার বেড়ে গেলে এবং ইমান-আমল কমে গেলে আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব-গজব নেমে আসে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি তাদের কোনো কোনো কাজের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রূম: ৪১)। মানুষের অবাধ্যতা, কুফরি ও পাপাচারের কারণে কখনো কখনো মহান আল্লাহ তাদের এসব দুর্যোগ দিয়ে সতর্ক করেন। অর্থাৎ জমিনে ও সমাজে মানুষের নাফরমানির ফলে বিভিন্ন বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। যেমন মহামারি, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প ইত্যাদি।

জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা: হজরত নুহ (আ.)-এর কওমের অধিকাংশ লোক আল্লাহর অবাধ্যতা ও পাপাচারে লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ সতর্ক করার পরও তারা সতর্ক হয়নি। অবশেষে আল্লাহর আজাব নেমে আসে এবং ভয়ংকর প্লাবন ও জলোচ্ছ্বাস অবাধ্য লোকদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়। হজরত নুহ (আ.)-এর নৌকায় যারা আশ্রয় নিয়েছিল, তারাই রক্ষা পেয়েছিল। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তার (নুহের) বংশধরদের অবশিষ্ট রেখেছি বংশপরম্পরায়।’ (সুরা: সাফফাত, আয়াত: ৭৭)। মানুষ যখন আল্লাহর নাফরমানি থেকে ফিরে আসবে, মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিয়ে দুর্যোগ থেকে নিস্তার দেবেন।

ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাত: মানুষের মন্দ কৃতকর্ম বজ্রপাতের অন্যতম কারণ। ঘূর্ণিঝড়, বিজলি-চমক ও বজ্রপাতের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে সতর্ক করেন এবং এর মাধ্যমে যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। কোরআনে এসেছে, ‘বজ্র তারই তাসবিহ ও হামদ জ্ঞাপন করে এবং তার ভয়ে ফেরেশতারাও (তাসবিহরত আছে)। তিনিই গর্জমান বিজলি পাঠান, তারপর যার ওপর ইচ্ছা একে বিপদরূপে পতিত করেন। আর তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের) অবস্থা এই যে, তারা আল্লাহ সম্পর্কেই তর্কবিতর্ক করছে, অথচ তার শক্তি অতি প্রচণ্ড।’ (সুরা রাদ: ১৩)। আল্লাহর নাফরমানি, ব্যভিচার, পরকীয়া, অন্যায়-অত্যাচার যত বাড়বে, ততই দুনিয়ার বুকে বিভিন্ন ধরনের আজাব-গজব নাজিল হবে।

ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও ভূমিধস: আল্লাহর পাঠানো অন্যতম কঠোর আজাব হলো ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও ভূমিধস। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তোমাদের সাগরে বিপদ স্পর্শ করে, তখন তিনি ছাড়া যাদের তোমরা ডাকো, তারা (তোমাদের মন থেকে) হারিয়ে যায়; অতঃপর তিনি যখন তোমাদের রক্ষা করে স্থলে আনেন, তখন তোমরা বিমুখ হয়ে যাও। আর মানুষ তো খুব অকৃতজ্ঞ। তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গিয়েছ যে তিনি তোমাদেরসহ স্থলের কোনো দিক ধসিয়ে দেবেন না অথবা তোমাদের ওপর শিলা বর্ষণকারী বাতাস প্রেরণ করবেন না? তারপর তোমরা তোমাদের জন্য কোনো কর্মবিধায়ক পাবে না। অথবা তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গিয়েছ যে তিনি তোমাদের আরেকবার সমুদ্রে ফিরিয়ে নেবেন না, অতঃপর তোমাদের ওপর প্রচণ্ড বাতাস পাঠাবেন না এবং তোমাদের ডুবিয়ে দেবেন না, তোমরা কুফরি করার কারণে? তারপর তোমরা আমার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোনো সাহায্যকারী পাবে না।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৬৭-৬৯)। এসব আজাব-গজব থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে তওবা ও ইস্তেগফার করা এবং বেশি বেশি নেক আমল করা। আল্লাহ তওফিক দিন।

লেখক: মাদ্রাসা শিক্ষক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খেলাফত যুব মজলিসের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত

নতুনভাবে কাউকে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে দেব না : রিফাত রশিদ

সড়কের পাশে যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

অজয়কে নিয়ে ঠাট্টা করলেন কাজল

‘সবাই বলে দুইটা বাচ্চা বেইচা দিতে, মা হয়ে কি বেচতে পারি’

শহীদ হালিমের কন্যা সুমাইয়াকে কলেজে ভর্তির দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান 

শিক্ষক-ম্যানেজিং কমিটির সরাসরি আবেদন বন্ধে কড়া নির্দেশনা

সিন্ডিকেশন ফাইন্যান্সিংয়ে পরামর্শ সেবায় খুশি কম্পোজিট ও কমিউনিটি ব্যাংকের চুক্তি

কিউবার প্রেসিডেন্ট ও বিলাসবহুল হোটেলগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

‘ফেনীতে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প সেনাবাহিনীকে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার’

১০

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পাল্টা প্রশ্ন / আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর না হলে পাঁচজনকে কীভাবে গ্রেপ্তার করল

১১

মিটফোর্ডের ঘটনায় সরকারের নীরবতা নিয়ে বাঁধনের ক্ষোভ

১২

সৌদিতে অবৈধভাবে মাছ ধরায় বাংলাদেশি আটক

১৩

টেস্ট ক্রিকেটে ডিউক বল নিয়ে কেন এত বিতর্ক?

১৪

নড়াইলে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১

১৫

বিতর্কিত কিছু বলে ম্যাচ ফি হারাতে চান না বুমরাহ

১৬

মেসিকে সম্মান জানিয়েই ক্যাম্প ন্যু উদ্বোধনের পরিকল্পনা বার্সার

১৭

ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে বলেন, ‘বিমানে বোমা’

১৮

বাংলাদেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘AI & Security’ সেমিনার অনুষ্ঠিত

১৯

জোতার ‘২০’ নম্বর জার্সিকে অবসরে পাঠাচ্ছে লিভারপুল

২০
X