ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪৬ এএম
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উচ্চশিক্ষার সেকাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উচ্চশিক্ষার সেকাল

উপমহাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনের ধারা প্রচলন হয়েছে ব্রিটিশদের হাত ধরেই। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এতদঞ্চলের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়। যার কাজ ছিল কলেজগুলোর অনুমোদন দান এবং পরীক্ষা পরিচালনা করা। ম্যাট্রিকুলেশন বা মাধ্যমিক পরীক্ষাও সে সময় এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং উচ্চশিক্ষা পরিচালনার পেছনে ছিল ১৮৫৪ সালে স্যার চার্লস উডের শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত। প্রতিষ্ঠালগ্নে এদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর এবং সরকার মনোনীত সদস্য দ্বারা গঠিত সিনেটের ওপর। কিন্তু শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় নানা ধরনের ত্রুটি ছিল। ফলে এই ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখার জন্য ১৮৮২ সালে উইলিয়াম হান্টার কমিশন গঠিত হয়। উইলিয়াম হান্টার কমিশনের সভাপতি হলেও সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আনন্দ মোহন বসু (যার নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ), ভূদেব মুখোপাধ্যায়, স্যার যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরসহ আরও কয়েকজন।

হান্টার কমিশনের কাজ ছিল ঔপনিবেশিক ভারতে একটি আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার গোড়াপত্তন করা ও একটি নতুন শিক্ষানীতি প্রস্তাব করা। এ কারণে কমিশনটি পূর্ববর্তী ১৮৫৪ সালে প্রণীত উডের শিক্ষানীতি পর্যালোচনা করে এবং এর ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেয়। যাতে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে করণীয় ঠিক করতে পারে। কিন্তু হান্টার কমিশন উচ্চশিক্ষা নিয়ে তেমন কোনো সুপারিশ দেয়নি। যদিও এরপর উচ্চশিক্ষায় বেশকিছু সংস্কার সাধিত হয়। এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ছিলেন লর্ড কার্জন। এদেশের শিক্ষার অগ্রগতির জন্য তিনি ১৯০১ সালে শিক্ষা সম্মেলন আহ্বান করেন। ওই সম্মেলনে গৃহীত ১৫০টি প্রস্তাব দিয়েই তিনি একটি শিক্ষানীতি প্রস্তুত করেন। তবে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তার পদক্ষেপের মধ্যে ছিল ১৯০২ সালে গঠিত ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন। এ ছাড়া ১৯০৪ সালে তিনি শিক্ষানীতি সরকারি সিদ্ধান্ত আকারে প্রকাশ করেন, যেটা Government of India’s Resolution of Education Policy, 1904 নামে পরিচিতি লাভ করে। বলাবাহুল্য, লর্ড কার্জনের গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সুপারিশ দিয়েই অবিভক্ত ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের (Universities Act,-1904) বিধিবদ্ধ হয়, যা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় আইনের উত্তরসূরি হিসেবে চিহ্নিত। এই কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম নির্ধারণ, স্নাতকোত্তর স্তরের পঠন-পাঠন ও গবেষণার ব্যবস্থা করা, বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সদস্য সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে এবং সিন্ডিকেটের সদস্য সংখ্যা ৩ থেকে ১৫ এর মধ্যে উন্নীত করা, কলেজগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য পরিদর্শনের ব্যবস্থা করার জন্য সুপারিশ করে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এফিলিয়েটিংয়ের সীমা নির্ধারণ করা ছিল লর্ড কার্জনের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। তিনি মনে করলেন, সত্যিকার অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দরকার। এজন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে সিনেট, সিন্ডিকেটের ক্ষমতা বৃদ্ধি, উপযুক্ত সদস্য নির্বাচন, তাদের মেয়াদকাল ও দায়িত্ব-কর্তব্য নির্ধারণ করলেন। সব শ্রেণি-পেশার মধ্য থেকে উপযুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সিনেট গঠিত হলো। বিশ্ববিদ্যালয় আইনে স্পষ্ট বলে দেওয়া হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে সিনেট এবং সিন্ডিকেটকে সচল, সক্রিয় ও আধুনিক করে তুলতে হবে।

লর্ড কার্জনের দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনটি আরও যুগোপযোগী করে তোলার জন্য ১৯১৭ সালে নতুন করে কমিশন গঠিত হয়। এবারে নেতৃত্ব দেন ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার মাইকেল স্যাডলার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন নামে গঠিত হলেও এটি পরিচিতি পায় স্যাডলার কমিশন নামেই। কমিশনের সভাপতি ছিলেন লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মাইকেল স্যাডলার। তার নামানুসারেই এ কমিশন ‘স্যাডলার কমিশন’ নামে সুপরিচিত। কমিশনের ভারতীয় সদস্যের মধ্যে ছিলেন স্যার জিয়াউদ্দীন আহমেদ (পরে তিনি আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন) ও স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি), স্যার ফিলিপ হার্টগ (পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য), ড. গ্রেগরি ও অধ্যাপক রামজে মুর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পরিচালনা কেমন হওয়া উচিত—স্যাডলার কমিশন রিপোর্টে এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিচালনায় সিনেট, সিন্ডিকেট, ভাইস চ্যান্সেলর প্রত্যেকের ক্ষমতার সীমারেখা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই কমিশনের রিপোর্টের XXXIII অধ্যায়ে The University of Dacca শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি, পঠন-পাঠন কেমন হবে, তা তুলে ধরা হয়। ১৩টি সেকশনে প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমগ্র কাঠামোর বিষয় উল্লেখ করা হয়েছিল। এরই আলোকে ১৯১৯ সালে স্যাডলার কমিশনের রিপোর্ট পাস হলে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য পি জে হার্টগ প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য নিযুক্ত হন। নতুন আইনে ও অভিজ্ঞ প্রশাসনের কারণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে পশ্চাতে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকে নবগঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর স্যাডলার কমিশনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনাকে স্বশাসিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে অধ্যাপকদের প্রতিনিধি যুক্ত করার কথা বলা হয়। এই কমিশনের সুপারিশমালায় আরও বলা হয়—পাঠ্যক্রম নির্ধারণ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ, ডিগ্রি বিতরণ, শিক্ষক নিয়োগ প্রভৃতি কাজের জন্য একাডেমিক কাউন্সিল, ফ্যাকাল্টি এবং বোর্ড অব স্টাডিজ গঠনের ধারণা যুক্ত করা হয়। পাশাপাশি ছাত্রদের জন্য শারীরিক শিক্ষা বিভাগ, ছাত্রকল্যাণ দপ্তর, বৃত্তি শিক্ষা বিভাগ ইত্যাদি বিষয়ে কমিশনের অভিমত আধুনিককালের শিক্ষা সংস্কারের চেষ্টাকেও হার মানায়। এই কমিশনের সুপারিশ ঔপনিবেশিক সরকারকে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ঔপনিবেশিক সরকার ১৯৪৩ সালে সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা স্যার জন সার্জেন্টকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিশন গঠন করে। সার্জেন্ট কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে সর্বজনীন ব্যবস্থার মধ্যে আনতে সম্মতি দেয়নি। অর্থাৎ চাইলেই কেউ উচ্চশিক্ষা নিতে পারবেন না। তার জন্য নির্বাচনী পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। তবে তারা উচ্চশিক্ষাকে আবার জনগণের চাহিদা হিসেবেও মনে করেছিলেন। তাদের সুপারিশমালায় বলা হয়, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা শেষ করার পর শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে এবং তাদের ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, দরিদ্র অথচ মেধাবী ছেলেমেয়েরা যেন আর্থিক দুরবস্থার কারণে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়। অবশ্য এজন্য বৃত্তির সুপারিশও করা হয়।

সার্জেন্ট কমিটির সুপারিশমালার মধ্যে ডিগ্রি কোর্সের মেয়াদ দুই বছরের জায়গায় তিন বছর, টিউটোরিয়াল ব্যবস্থা, স্নাতকোত্তর শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, অধ্যাপকদের সঠিক বেতন কাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে সুসংহত নীতি অনুসরণে সাহায্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্টস কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হলো।

ঔপনিবেশিক শাসনামলের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পাঠক্রম ও শিক্ষার মান নির্ধারণ, পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষাগত যোগ্যতার পরিমাপ এবং তদানুযায়ী সার্টিফিকেট প্রদানই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ। ঔপনিবেশিক আমলে উচ্চশিক্ষায় সিনেট এবং সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল যথানিয়ম মেনেই চলেছে। তাদের মূল্যবান মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য শুধু ভাইস চ্যান্সেলরই নয়, অনেক সময় শিক্ষামন্ত্রীকেও সিনেট সদস্যদের সমালোচনার মধ্যে পড়তে হতো। কিন্তু আমাদের আজকের সময়ের বাস্তবতা হলো, উচ্চশিক্ষায় এই সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে পড়ছে। মেয়াদবিহীন ভঙ্গুর সিনেট দিয়ে চলছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আবার নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিনেটের বিধান নেই। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহি সুস্পষ্ট করার জন্য একাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি, সিনেট, সিন্ডিকেট প্রতিটি বিধিবদ্ধ পর্ষদে চ্যান্সেলর কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি, ছাত্র সংসদে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার বিধান রয়েছে। কিন্তু কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই। এরকম অবস্থার ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের একটা কথা জরুরিভাবে মনে করতে হবে, আর সেটা হলো—যান্ত্রিক গতিতে শিক্ষা অগ্রসর হতে পারে না। শিক্ষাবিপ্লবের চেতনা যতক্ষণ পর্যন্ত না মানুষের মনে সৃষ্টি হবে, ততক্ষণ বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।

লেখক: প্রফেসর, ইতিহাস বিভাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গোল্ডেন হারভেস্টে বড় নিয়োগ

যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন ভিসার ফি বাড়ছে দ্বিগুণের বেশি

জুম টিভির অফিসে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান

ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঝড়, ৬ লাখ মানুষকে সরানোর নির্দেশ 

হাসপাতালে বাণিজ্যিক নার্সারি, সন্ধ্যায় বসে মাদকসেবীদের আড্ডা

ইহুদিবিদ্বেষ ইস্যুতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করল ফ্রান্স

টিভিতে আজকের খেলা

এমবাপ্পের জোড়া গোলে লা লিগায় রিয়ালের সহজ জয়

ইবনে সিনায় চাকরির সুযোগ

সোমবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১০

জেনে নিন আজকের নামাজের সময়সূচি

১১

এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

১২

ক্যাশমেমো নেই, খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দাম কাঁচামালে

১৩

রামপুরায় ভবনের ৬ তলা থেকে পড়ে রডমিস্ত্রির মৃত্যু

১৪

কুড়িয়ে পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভ্যানচালক

১৫

বুড়িগঙ্গা থেকে লাশ উদ্ধার / ৪ জনকেই হত্যা করা হয়েছে, ধারণা পুলিশের

১৬

ওসির বদলির খবরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে মিষ্টি বিতরণ স্থানীয়দের

১৭

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

১৮

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

১৯

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

২০
X