এম আবদুল্লাহ
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ এএম
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বিপ্লবের চেতনা অভিন্ন

বিপ্লবের চেতনা অভিন্ন

যে কোনো দেশের, যে কোনো জাতির সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ও বাঞ্ছিত ধন স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। যথার্থভাবেই কবি প্রশ্ন করেছেন, ‘স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়?’ ইতিহাসে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে দেখা যাবে যারা আত্মমর্যাদাহীন, যাদের মনুষ্য বোধের অভাব আছে; শুধু তারাই স্বাধীনতার মতো পরম ধনের মূল্য দেয়নি। তাদের স্বাভাবিক পরিণতি ঘটেছে ঘৃণা ও বিস্মৃতিতে। অন্যদিকে যারা আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন, ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্র্যকে রক্ষা করা যাদের জীবনবোধ, দায়িত্ব কর্তব্যের অংশ, তারা জাতি হিসেবে ইতিহাসের উজ্জ্বল অধ্যায়ের নায়ক।

শত বাধাবিপত্তি, হাজারো প্রতিকূলতা-অন্তরায়ের মধ্যেও যারা দেশ-জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে নিজ নিজ রক্ত ধমনির প্রবাহে অনুভব করেছেন, এই পবিত্র অনুভূতি এবং উপলব্ধির জন্য অকুণ্ঠচিত্তে সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের কেউ পরাজিত করতে পারেনি। না কোনো বহিঃশত্রু, না কোনো আভ্যন্তরীণ দুঃশাসক। যে কোনো দেশ, যে কোনো জাতি একটি অনন্য সূত্রের ওপর দাঁড়িয়ে এক ও অভিন্ন কণ্ঠ সোচ্চার করে তুলতে পারে এবং সে সূত্রটির নাম জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। শোষণ ও লাঞ্ছনা-বঞ্চনায় বহুবিধ সমস্যা এখানে জমে আছে। কিন্তু জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এই দেশ, এই জাতি গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য ও কীর্তির ধারক। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে এ জাতি কখনো আপস করতে শেখেনি। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সেটাই প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরেও এ জাতি সেটাই প্রমাণ করেছে। যে কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আধিপত্যবাদী শক্তির নাগপাশ থেকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তিকামী সিপাহি-জনতা অভাবনীয় ভূমিকা পালন করে।

বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনে ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লবকে ভুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছে। এতে অনেকটা সফলও হয়েছিল দুর্বিনীত হাসিনা সরকার। কিন্তু ইতিহাস অমোচনীয় কালিতে লেখা। চাইলেই মুছে ফেলা যায় না। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী শাসকের পতনে ১৬ বছর পর এবার পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে দিবসটি পালিত হচ্ছে। যদিও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার দিনটিকে সরকারিভাবে পালন করেনি। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।

দেশকে একদলীয় শাসনমুক্ত করতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর একদল মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা রক্তাক্ত অভ্যুত্থান ঘটান। এতে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম নেতা ও একদলীয় বাকশালী শাসনের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। ক্ষমতায় আসেন আওয়ামী লীগেরই জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ। আর সেই মোশতাক সরকারকে উৎখাতে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ৩ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থান করা হয়। চেষ্টা করা হয় বাকশালী শাসন ফিরিয়ে আনার। গৃহবন্দি করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, সেক্টর কমান্ডার ও বীরউত্তম সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। কয়েক দিনের জন্য দেশ সরকারহীন হয়ে পড়ে। প্রতিবেশী দেশের ইন্ধনে অস্ত্রের মুখে খন্দকার মোশতাকের কাছ থেকে পদোন্নতি আদায় করে নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এটা মানতে পারেনি।

মূলত সেনাবাহিনীর সিপাহিসহ দেশপ্রেমিক বড় অংশ জিয়াউর রহমানকে খুব ভালোবাসতেন। জিয়ার অপরিমেয় দেশপ্রেম, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব ও অতুল্য সততা মুগ্ধ করে সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সদস্যকে। তারা বিদ্রোহ করে খালেদ মোশাররফকে পরাস্ত করেন। ৬ নভেম্বর রাতে জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন সৈনিকরা। জাসদ নেতা কর্নেল আবু তাহেরের অনুগত বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা এ সময় জেনারেল জিয়াকে সমর্থন জানিয়ে দলটির অনুসৃত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করে। তবে জিয়াউর রহমান সে পথে না গিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আবেগ অনুভূতিকে সম্মান জানান।

জেনারেল জিয়ার সমর্থনে দেশপ্রেমিক সিপাহি ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ৭ নভেম্বর রাজপথে নেমে খালেদ মোশাররফের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল। এরই মধ্য দিয়ে স্বর্ণোজ্জ্বল দলিলে জনতার প্রাণের অর্ঘ্য দিয়ে লেখা হয় বীর সেনানীদের নাম। আর দলিলের শিরোনামে শোভা পায় একটি নাম—মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বীরউত্তম। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বাংলাদেশ রাইফেলস, পুলিশ এবং আসনার বাহিনীর বীর সিপাহিদের জাগ্রত চেতনা, বৈপ্লবিক সত্তার প্রকাশ ঘটে সেদিন। প্রমাণ করে, এ জাতির স্বাধীনতা খর্ব করার সাধ্য নেই কোনো চক্রের, কারও ক্ষমতা নেই দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করার। সেদিনের সেই নতুন ভোর জাতির জন্য ছিনিয়ে আনে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, পরাভবহীন এক অপূর্ব আত্মপ্রত্যয়। সিপাহি-জনতার মিলিত আবেগ, উল্লাস, জয়োধ্বনি, আনন্দের কল-কল্লোল, সহস্র কণ্ঠের সেই উচ্চকিত নিনাদ সেদিন ঘোষণা করে সৈনিক ও জনতার একাত্মতা।

পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর রাজধানী ঢাকা ছিল উল্লাস আর উৎসবের নগরী। পথে পথে ছিল সে এক অভাবিত দৃশ্য। গাড়িতে গাড়িতে ছিল বিপ্লবী সিপাহি-জনতার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। চারদিকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায় সামরিক বাহিনীর খোলা গাড়ি, হাফ-ট্রাক জিপ আর ট্যাঙ্ক। সশস্ত্র বিপ্লবী সিপাহিদের সঙ্গে এসব গাড়িতে এককার হয় বিপ্লবী জনতা। কণ্ঠে সবার স্লোগানÑবাংলাদেশ জিন্দাবাদ, সিপাহি-জনতা ভাই ভাই, জেনারেল জিয়া জিন্দাবাদ। আর সে সঙ্গে প্রাণের উন্মাদনায় আকাশের দিকে খইয়ের মতো ফুটতে থাকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলি। শহরজুড়ে শোনা যায় শুধু গুলি আর গুলির আওয়াজ। সঙ্গে প্রাণের বাঁধভাঙা উল্লাসধ্বনি।

বিপ্লবোত্তর সেদিনের বাংলাদেশে দেশবাসী যখন আনন্দে উদ্বেলিত, ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত জেনারেল জিয়াউর রহমান তখন শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সবার প্রতি আহ্বান জানান। দেশের সর্বত্র অফিস, আদালত, যানবাহন, বিমানবন্দর, মিলকারখানা পূর্ণভাবে চালু রাখার নির্দেশ দেন। গোটা জাতি তার উদাত্ত আহ্বানকে শিরোধার্য করে। সৈনিক ও জনগণ ফিরে পায় আলোকিত ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা।

বিপ্লব ও সংহতির দিনটি কতটা স্বর্ণোজ্জ্বল ছিল, তা অনুধাবন করতে তখনকার সংবাদপত্রে নজর দেওয়া যেতে পারে। ১৯৭৫ সালের ৮ নভেম্বরের সংবাদপত্র অবিস্মরণীয় সেই বিপ্লবকে কীভাবে তুলে ধরেছিল তাতে দৃষ্টিপাত করা যাক।

দৈনিক ইত্তেফাক ৮ নভেম্বর লেখে—“তখনো আকাশে অন্ধকার ছিল। গোলাগুলির শব্দে প্রকম্পিত শেষ রজনীর ঢাকা। শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তগুলি ছিল যুগের মতো। বিনিদ্র রাত্রিতে আতঙ্কিত নগরবাসী হয়তো ভাবিতেছিল একাত্তরের সেই পাষাণ ঢাকার দিনগুলির কথা। এমনি সময়ে রেডিও বাংলাদেশের ঢাকা কেন্দ্রের ঘোষকের কণ্ঠে ধ্বনিত হইল স্লোগান—‘সিপাহী বিপ্লব জিন্দাবাদ’। উৎকণ্ঠ নগরবাসীর শ্রবণেন্দ্রিয়। এই অসময়ে রেডিও কি বার্তা শুনাইবে? ঘোষকের কণ্ঠে ঘোষিত হইল : ‘সিপাহী বিপ্লব সফল হয়েছে। প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের হাত থেকে জেনারেল জিয়াকে মুক্ত করা হয়েছে। অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিবেন।”

ইত্তেফাক আরও লেখে—“ঘোষকের এই ঘোষণার মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটিল চারদিনের অস্বস্তিকর দুঃস্বপ্নের। ভোরের আলো উঠিবার আগেই জনতা নামিল রাস্তয়। প্রচণ্ড গুলির মুখেও নিঃশঙ্ক দুঃসাহসী পদক্ষেপে। রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনীর গাড়ি আর ট্যাংকের ঘরঘর শব্দ। ইহার পর মিছিল, মিছিল আর মিছিল। সিপাহীদের প্রতি উৎফুল্ল অভিনন্দন বা হৃদয় নিংড়ানো আলিঙ্গন। সেনাবাহিনী পরিণত হইল জনগণের সেনাবাহিনীতে। পথে পথে জনতার কলরোল আর সিপাহী জনতার সম্মিলিত শ্লোগান ধ্বনির মাধ্যমে যেন পুনরাবৃত্তি ঘটিল ১৯৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বরের সেই ফেলিয়া আসা স্মৃতি বিজড়িত দিনটির। সকাল মুখরিত হইল জনতার জয়নিনাদে। সামরিক বাহিনীর গাড়িতেই নহে—বাস-ট্রাকে সেই একই দৃশ্য—সিপাহীদের পাশে জনগণ। খন্দকার মোশতাক আহমদ আর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের ছবি লইয়া রাস্তায় রাস্তায় মিছিলের ঢল।”

সেই উত্তাল সময়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভূমিকা বর্ণনা করে ইত্তেফাকে লেখা হয়—“গাড়ীতে করিয়া সেনাবাহিনী প্রতিটি মহল্লায় গিয়া জনগণকে আদব ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানাইয়াছেন, দেশের সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখার জন্য আকুল আবেদন রাখিয়াছেন—কামনা করিয়াছেন জনগণের ঐকান্তিক সহযোগিতা। সিপাহীদের সহিত জনতার আনন্দোচ্ছল প্রাণের স্পন্দন একই লয়ে স্পন্দিত হইয়াছে গতকাল।”

পঁচাত্তর সালের নভেম্বরের ৬-৭ তারিখের অবিস্মরণীয় সেই চিত্রের সঙ্গে অনেকটাই মিল খুঁজে পাওয়া যাবে ২০২৪ সালের ৫-৬ আগস্টের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন একদফার ফ্যাসিবাদের পতন আন্দোলনের রূপ নেয়, তখন সবার দৃষ্টি ছিল দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর দিকে। তারা অচিরেই দেশের মানুষের পালস অনুধাবন করতে সমর্থ হওয়ায় মুক্তি ত্বরান্বিত হয়। বিশেষ করে সিপাহিরা এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নেন বলে চাউর আছে। বস্তুত সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী মুক্তিপাগল জনগণের দিকে বন্দুক তাক করতে অস্বীকৃতি জানানোর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার করুণ পতন ও পলায়নের দলিল লেখা হয়ে যায়। রুদ্ধশ্বাস সময় পেরিয়ে আরাধ্য বিজয় যখন হাতের তালুবন্দি হয়, তখন জনতার সঙ্গে সেনাবাহিনীর সিপাহি ও কর্মকর্তারা বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। সিপাহি-জনতার মিলিত উল্লাস দেখেছে বিশ্ব। পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের। মুহুর্মুহু গুলি ছুড়ে বিজয়োল্লাস করেছেন সৈনিকরা। ট্যাঙ্কের ওপর আরেকবার দেখা গেছে জলপাই রঙের পোশাকি সৈনিক ও ছাত্র-জনতাকে।

১৬ বছরের নিপীড়নের শাসনে সাধারণ কুলি-মজুর থেকে শুরু করে সেনাছাউনির সদস্যরা পর্যন্ত নানাভাবে শোষণ, বঞ্চনা, লাঞ্ছনা ও নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। কথায় কথায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। খুন-গুম হয়েছে। সেনাসদস্যরা আওয়ামী সেক্যুলার শাসনে স্বাধীনভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান পর্যন্ত পালন করতে পারেননি। ভোররাতে কার কার বাসায় আলো জ্বলে, ফজরের নামাজে মসজিদে কারা যায়—এসব নজরদারি করে অনেককে শায়েস্তা করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল সব ধরনের স্বাধীনতা। এ দেশের গহিন নদী, নীল বিস্তৃত আকাশ, বৈচিত্র্যময় নিসর্গের মতোই স্বাধীনতা এ জাতির প্রিয় উচ্চারণ, বহুল-বাঞ্ছিত প্রাণের ধন। বারবার আগ্রাসী ফ্যাসিস্ট শক্তি এই দেশের ওপর লোভ-লালসার চকচকে সবুজ চোখ রেখেছে। জাতি কখনো তাদের বিরুদ্ধে একমন একপ্রাণ হয়ে রুখে দাঁড়াতে দ্বিধা করেনি। এ জাতির বহমান ইতিহাসের ধারায় সাময়িক ব্যর্থতা হয়তো আছে। জগতের কোনো জাতির ইতিহাসে তা নেই? কিছুকাল দুঃখ-দুর্ভোগের চিহ্নও হয়তো আছে। কিন্তু এ দেশে আবরার ফাহাদের মতো আধিপত্যবাদীবিরোধী অনেক তরুণের জন্ম হয়েছে। উপযুক্ত সময়ে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের নজির বিরল নয়। জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে এ দেশ-জাতি সময়ে সময়ে নিজেদের ক্ষুদ্র ভেদাভেদ, স্বার্থচিন্তা, আত্মকলহ ও পারস্পরিক হানাহানি ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। পর্বতের ন্যায় অটল ও বজ্রের মতো তীব্র কঠোর হয়েছে। এটাই জাতি হিসেবে আমাদের গর্বের বিষয়। হালে পতিত ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার যে দিবাস্বপ্ন দেখছে, তা প্রতিহত করতে ভেদাভেদ ভুলে সেভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়াই সময়ের দাবি।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সাবেক সভাপতি, বিএফইউজে

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ইনকিলাব মঞ্চ

মোটরসাইকেল চোরচক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের জেলা সহসভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

আওয়ামী লীগের ৮ নেতার পদত্যাগ

দগ্ধ বেলালকে দেখতে লক্ষ্মীপুরে তারেক রহমানের উপহার নিয়ে রিজভী

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মারলেও সরকারের অবস্থান দেখা যায়নি : ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি

সৌদিতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

আহমদ ছফার নামে সড়কের নামকরণ

সীমান্তে সাড়ে ২১ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ

১০

সড়কের এক কিমি যেন মরণফাঁদ, ছয় মাসে প্রাণহানি ১১

১১

‘কোটি মানুষের বুক ভেদ করে তারেক রহমানের ক্ষতি করার শক্তি কারও নেই’

১২

শ্রীলঙ্কায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি বার্তা

১৩

এক রাতে দুই পরিবারের ১০ গরু চুরি

১৪

শরিফ ওসমান হাদির কবরের পাশে চরমোনাই পীর

১৫

স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন / কেবল ডিগ্রি নয়, সক্ষমতা ও শৃঙ্খলাও জরুরি : আসিফ নজরুল

১৬

হিন্দুদের পাশে থাকবে বিএনপি : প্রিন্স

১৭

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

১৮

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থি ৬ ডিনের পদত্যাগ

১৯

কারাগারে বসে মনোনয়নপত্র নিলেন জাপার সাবেক এমপি

২০
X