ড. কবিরুল বাশার
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ক্ষুদ্র প্রাণী, বড় হুমকি

ক্ষুদ্র প্রাণী, বড় হুমকি

মশা পৃথিবীতে ভয়ংকর প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। ছোট এ প্রাণীটি সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ নিয়েছে। বিজনেস ইনসাইডারের তথ্যমতে, মশা প্রতি বছর ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষের প্রাণ নেয় আর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মানুষ। প্রতি বছর ৪ লাখ ৩৭ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ হয় মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরই মধ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তথ্যমতে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর সংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। ডেঙ্গুর এ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মশা দিবস। ১৯৩০ সাল থেকে প্রতি বছরের ২০ আগস্ট দিবসটি বিশ্ব মশা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

মশাবাহিত রোগ হাজারো বছর ধরে মানুষের ইতিহাসে অসুস্থতা এবং মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। উনিশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত কেউই বুঝতে পারেনি যে, মশা রোগের ভেক্টর ছিল। প্রথম সাফল্য আসে ১৮৭৭ সালে যখন ব্রিটিশ ডাক্তার প্যাট্রিক ম্যানসন আবিষ্কার করেছিলেন যে, একটি কিউলেক্স প্রজাতির মশা মানুষের ফাইলেরিয়াল রাউন্ডওয়ার্ম বহন করতে পারে। পরবর্তী দুই দশকে তিনি এবং ফ্রান্স, ইতালি, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য গবেষক ম্যালেরিয়া গবেষণায় মনোনিবেশ করেন, যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং নাতিশীতোষ্ণ দেশগুলোয় একটি প্রধান ঘাতক। তারা আস্তে আস্তে মানুষ ও মশার মধ্যে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ এবং জীববিজ্ঞানের জটিল সমীকরণ বুঝতে শুরু করেন।

১৮৯৪ সালে ম্যানসন ও ভারতীয় মেডিকেল সার্ভিসের মেডিকেল অফিসার রোনাল্ড রস ম্যালেরিয়া প্যারাসাইটের সম্ভাব্য ভেক্টর হিসেবে মশার বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। বছরের পর বছর নিরলস গবেষণার পর ১৮৯৭ সালে তারা প্রমাণ করেন যে, অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া পরজীবী বহন করতে পারে। তারা তাদের আবিষ্কারের দিন, ২০ আগস্ট, ১৮৯৭ কে ‘মশা দিবস’ বলে অভিহিত করেছিলেন। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন পরে তাদের আবিষ্কারের তাৎপর্য ধরে রাখতে ২০ আগস্ট বিশ্ব মশা দিবসের নামকরণ করে, যা প্রতি বছর পালিত হয়।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মশা দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উষ্ণ আর্দ্রীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মশা প্রজননের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। মশার ঘনত্ব ও প্রজাতির বৈচিত্র্য বেশি থাকার কারণে মশাবাহিত রোগশোকের ঝুঁকিও অনেক বেশি বাংলাদেশে। বিভিন্ন বিজ্ঞানীর গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১২৬ প্রজাতির মশা শনাক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে বর্তমান ঢাকায় আমরা পাই ১৪ থেকে ১৬ প্রজাতির। বাংলাদেশে মশাবাহিত রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া ও জাপানিজ অ্যানসেফালাইটিস।

ঢাকায় প্রথম ডেঙ্গু দেখা দেয় ১৯৬৩ সালে। তখন এটিকে ঢাকা ফিভার হিসেবে চিহ্নিত করা বা নাম দেওয়া হয়েছিল। ডেঙ্গুর প্রথম বড় আউটব্রেক হয় ২০০০ সালে আর তখন বিজ্ঞানীরা একে ডেঙ্গু হিসেবে চিহ্নিত করেন। ওই বছর বাংলাদেশ ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় এবং ৯৩ জন মারা যায়। এরপর প্রায় প্রতি বছরই কমবেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে; তবে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু এপিডেমিক আকার ধারণ করে। ওই বছর সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৭৯ জন মারা যায়। করোনাকালীন বছরগুলোয় ডেঙ্গু কিছুটা নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকলেও ২০২৩ সালে বাংলাদেশের সব ইতিহাস ভেঙে ডেঙ্গুর সর্বোচ্চ রোগী ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন এবং মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২৪ সালও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থেমে নেই। এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৫০০-এরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে এবং ৭৫ জন মারা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন মানুষ ডেঙ্গুর রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৫৭৫ জন মানুষ মারা গেছে।

২০২৫ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা শতাধিক। বাস্তবে আক্রান্তের সংখ্যা হয়তো পাঁচগুণ কিংবা ততোধিক হতে পারে। কারণ ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ অনেক সময় মৃদু থাকে, ফলে অনেকেই হাসপাতালে না গিয়ে ঘরেই চিকিৎসা নেন। এ অনুপস্থিত ডাটা আমাদের বাস্তব পরিস্থিতির গভীরতা বুঝতে বাধা সৃষ্টি করে।

২০০৮ সালে বাংলাদেশে প্রথম চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ে, যেটি ডেঙ্গুর মতো একটি রোগ। এ রোগটি চিকুনগুনিয়া ভাইরাস বহনকারী এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া রোগ শনাক্ত হয়। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয় ২০১৬-১৭ সালে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ের চিকুনগুনিয়া পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্যের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে গড়ে ৭৫ শতাংশ রোগীর দেহে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে, যা এ রোগের ভয়াবহতা ও বিস্তারের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।

ডেঙ্গুর চাপে এখন এ রোগটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা খুব বেশি করা হচ্ছে না। বেশিরভাগ হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া পরীক্ষা করার কিট নেই। ডেঙ্গুর পাশাপাশি এ রোগটি চিহ্নিত করার বিষয়েও জোর দেওয়া প্রয়োজন।

২০০০ সালে ডেঙ্গু প্রথম চিহ্নিত হওয়ার পর থেকেই ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা শুরু করি।‌ দীর্ঘ ২৬ বছর ল্যাবরেটরি ও মাঠপর্যায়ে মশা নিয়ে কাজ করছি। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে আমি ও আমার টিম ঢাকার প্রতিটি অলিগলি চষে বেরিয়েছি। যখনই কোনো জেলায় মশা ও মশাবাহিত রোগের আবির্ভাব হয়েছে; আমার টিম নিয়ে ছুটে গিয়েছে সেখানে। বাংলাদেশ ও জাপানে তাত্ত্বিক পড়াশোনা ও মাঠপর্যায়ের জ্ঞান দিয়ে বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করেছি মশা নিয়ন্ত্রণবিষয়ক পরামর্শ দিতে; কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সে পরামর্শের বাস্তবায়ন দেখিনি। মশা ও মশা নিয়ন্ত্রণে পৃথিবীতে ব্যবহৃত প্রায় সব ধরনের কীটনাশক নিয়ে আমার গবেষণা দল কাজ করেছে এবং করছে। বাংলাদেশে মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত অনেক কীটনাশক পরীক্ষা করে দেখেছি, যার মধ্যে বেশ কিছু কার্যকরী নয়।

দীর্ঘ সময় ধরে আমার শতাধিক লেখায় মশা নিয়ন্ত্রণের বিজ্ঞানভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনার বিস্তারিত প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। মশা নিয়ন্ত্রণে গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ২০১৯ সালে বিচার বিভাগীয় কমিটি হয়েছিল, যেখানে বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমার মতামত দিয়েছি।‌ ঢাকা বিমানবন্দরে মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি ২০১৯ সালে আদালতে গড়িয়েছিল। হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে এক্সপার্ট হিসেবে আমি আমার মশা নিয়ন্ত্রণবিষয়ক মডেলটি মৌখিক ও লিখিতভাবে পেশ করি। আদালত আমার প্রস্তাবনা অনুযায়ী ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ একটি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করেন। সেই রায়ে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি স্বতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান করার। আদালত সেই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির নামক প্রস্তাব করেন ‘ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (VCRC)’। আদালতের নির্দেশনা থাকলেও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন ভারত, আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এমন গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মশার নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের। এ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মশা নিয়ন্ত্রণে উপযোগী এবং এখানে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা প্রয়োজন। মশা নিয়ন্ত্রণে অভিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদের কাজে লাগানো দরকার। বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে কীটতত্ত্ববিদদের পদ থাকলেও অজানা কারণে সে পথগুলো ফাঁকা। বিভিন্ন সময়ে এ পথগুলো পূরণের জোর সুপারিশ করলেও সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি।

ডেঙ্গু মৌসুম আসন্ন; তাই এখনই জোরেশোরে কাজ শুরু করা প্রয়োজন। মশাবাহিত রোগ থেকে মানুষের জীবন বাঁচানো, জনদুর্ভোগ ও আর্থিক ক্ষতি ঠেকাতে টেকসই পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো মশাবাহিত রোগ নিয়ে গবেষণা ও নিয়ন্ত্রণ জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান হওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কীটতত্ত্ববিদ, গবেষক এবং অন্যান্য অংশীজনের সম্মিলিত প্রয়াস ঘটাতে পারলে মশাবাহিত রোগ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা সম্ভব।

লেখক: অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৩১ দফার বার্তা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে হবে : সেলিমা রহমান

এসএ২০ নিলামে সাকিব–মোস্তাফিজসহ ১৪ ক্রিকেটার

প্রবাসী বাংলাদেশির মেয়েকে হত্যায় ইতালিতে বিক্ষোভ

সংঘর্ষের ৪৪ ঘণ্টা পর মামলা করতে থানায় চবি প্রশাসন

চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাসহ ১৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হেসে খেলে ডাচদের হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল টাইগাররা

‘জনগণের ভালোবাসা ও আস্থার ভিত্তিতে বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এনসিটিবির কড়া সতর্কতা

উমামা ফাতিমার সংবাদ সম্মেলন বয়কট মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের

মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে ১ কোটি টাকা অনুদান দিল জামায়াত

১০

চবি ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি, সময় বাড়ল আরও একদিন

১১

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা ফ্রি হবে : খসরু

১২

ডাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

১৩

ঘুম থেকে উঠেই বিছানা পরিষ্কার করা ভালো নাকি খারাপ, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

১৪

নৌ-পুলিশের অচল স্পিডবোটের জন্য বরাদ্দ ২০০ লিটার তেল!

১৫

‘আমি নাকি গে!’ গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন অক্ষয় কুমার

১৬

আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ ট্রেন চলাচল শুরু

১৭

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পরীক্ষায় জালিয়াতি, প্রতারক গ্রেপ্তার 

১৮

মুন্সীগঞ্জে একদিনেই মিলল তিন মরদেহ

১৯

ছাত্র মজলিসের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রহমত আলী আটক

২০
X