

৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১-এর এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াই আর মুক্তিকামী জনতার দুর্বার প্রতিরোধে পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হয় পীরগঞ্জ উপজেলা। সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির উল্লাস। আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে হাতে প্রিয় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন সবাই। দিবসটি পালনে প্রতি বছরের মতো এবারও র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর। তাদের প্রতিরোধ করতে সারা দেশের সঙ্গে পীরগঞ্জবাসীও গড়ে তুলেছিল দুর্বার আন্দোলন। স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন, থানা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করাসহ মুক্তিযুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
এ অবস্থায় ৭১-এর ১৭ এপ্রিল পীরগঞ্জে প্রথম হানা দেয় পাকিস্তানি বাহিনী। তারা কয়েকটি সাঁজোয়া মটরযানে করে পীরগঞ্জে এসে বিভিন্ন এলাকায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং তৎকালীন পীরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. সুজাউদ্দীন, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আব্দুল জব্বার, আতিউর রহমানসহ ৭ জনকে ধরে নিয়ে গিয়ে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও পাকা সড়কের জামালপুর ফার্ম (ভাতার মারি ফার্ম) এলাকায় মেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এবং ব্রাশফায়ারে হত্যার পর মরদেহ ফেলে রেখে যায়। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়। দীর্ঘ সংগ্রামের পর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ৩ ডিসেম্বর ভারতের মালন হয়ে পীরগঞ্জে প্রবেশ করে স্বদেশের পতাকা উড়িয়ে দিয়ে উল্লাস করে।
দিবসটি স্মরণে ২০১৪ সাল থেকে পীরগঞ্জ প্রেস ক্লাবের আয়োজনে মুক্তির শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। এবারও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় সকাল ১০টায় শোভাযাত্রা, স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন