

মীর মশাররফ হোসেন বাংলাদেশের ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাড়িতে শিক্ষকের কাছে আরবি ও ফারসি শেখেন মীর মশাররফ। পরে পাঠশালায় গিয়ে বাংলা ভাষা শেখেন। কর্মজীবনে ফরিদপুর নবাব এস্টেটে চাকরি নেন। কিছুদিন পর চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফেরেন। পরে ১৯০৩ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত কলকাতায় ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘গ্রামবার্তা’য় সাংবাদিকতা করেন। এখানেই শুরু সাহিত্যজীবনের। গ্রামবার্তার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ তার সাহিত্যগুরু। মীর মশাররফ ‘আজিজননেহার’ ও ‘হিতকরী’ নামে দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি ছিলেন বঙ্কিমযুগের অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার চার বছর পর মশাররফের প্রথম উপন্যাস ‘রত্নাবতী’ প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি একে একে কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি বিষয়ে বহু গ্রন্থ লিখেছেন। অমর কীর্তি ‘বিষাদ-সিন্ধু’ উপন্যাসে তিনি কারবালার বিষাদময় ঐতিহাসিক কাহিনি তুলে ধরেন। অবশ্য অনেক ঘটনা ও চরিত্র সৃষ্টিতে উপন্যাসসুলভ কল্পনার আশ্রয়ও নেওয়া হয়েছে। তার ‘জমিদার দর্পণ’ নাটকটি ১৮৭২-৭৩ সালে সিরাজগঞ্জের কৃষক বিদ্রোহের পটভূমিকায় রচিত। জনপ্রিয় এই ঔপন্যাসিক ১৯১২ সালের ১৯ ডিসেম্বর মারা যান।
মন্তব্য করুন