সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর রচিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে প্রবন্ধ ছাড়াও রয়েছে অনুবাদ ও কথাসাহিত্যের রচনা। তার সাম্যবাদী রাজনৈতিক দর্শন সবার কাছে স্পষ্ট। তিনি সবসময়ই তার এ অবস্থানে অবিচল ও অনড়। কোনো রাষ্ট্রীয় প্রলোভন তার অবিচল অবস্থান থেকে টলাতে পারেনি। সমাজ বিপ্লবের প্রয়োজনীয়তার কথা তার প্রত্যেক প্রবন্ধের মধ্যে যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রবন্ধগুলোর সমষ্টিগত উপস্থাপনার মধ্যেও। সাহিত্যিক জীবনে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী লিখেছেন মূলত দুটি বিষয়ে। একটি সাহিত্য, অন্যটি সংস্কৃতি। তিনি যে বিষয়েই লেখেন না কেন, তাতে আদর্শিক বিবেচনাকে কখনোই উপেক্ষা করেন না। তার লেখা এবং বক্তব্য যেমন গভীর, তেমনি উপস্থাপনায় প্রীতিপদ। পেশায় তিনি শিক্ষক কিন্তু তার রচনা এবং বক্তব্যে কোনো শিক্ষকতা নেই। যা আছে তা হলো গভীর দার্শনিকতা ও ইতিহাস চেতনা।
শিক্ষক হিসেবে তিনি ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সবার কাছেই তিনি প্রিয় সিক স্যার (SIC)। লেখক হিসেবে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। দেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয় থেকে রাষ্ট্র, সমাজ, সরকার, ইতিহাস, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, জাতীয়তাবাদ প্রতিটি বিশ্লেষণধর্মী রচনা পাঠকদের চিন্তা-চেতনাকে শাণিত করে। প্রবন্ধ সাহিত্যে অসম্ভব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি। সত্তরের দশকের থেকে বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিকে নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি। তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে তার কলামগুলো।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অনেকের অনুসরণীয় ব্যক্তি, আদর্শ লেখক ও প্রিয় সাহিত্যিক। অনেক বিজ্ঞজনেরই অভিমত, তার কাব্যিক ছন্দময় গদ্য লেখার ক্ষমতার সঙ্গে একমাত্র বুদ্ধদেব বসুর তুলনা চলে। তার গদ্যরীতি অসাধারণ এবং পাঠককে অন্যরকম আকর্ষণে টানে। উপস্থাপনা ভঙ্গি, বক্তব্য, বিন্যাস সবকিছু মিলিয়ে বলা যায় অসাধারণ ছন্দময় গদ্যের রূপকার। এ জন্যই তিনি অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে আজ বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে তার একক বক্তৃতা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বক্তৃতার বিষয় : ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। সভাপতি এ এস এম কামালউদ্দিন। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
মন্তব্য করুন