

ভারতের ‘নো-হ্যান্ডশেক’ নীতির বিরুদ্ধে এবার সরাসরি ও স্পষ্ট অবস্থান জানাল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি বলেছেন, ভারত যদি করমর্দনে আগ্রহ না দেখায়, তাহলে পাকিস্তানেরও তাতে কোনো আগ্রহ নেই। দুই দেশের মধ্যে যেকোনো সম্পর্কই হবে সমতার ভিত্তিতে—এর বাইরে একতরফা কোনো ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
রোববার লাহোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নকভি জানান, ক্রিকেটকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার নীতিতেই অটল রয়েছে পাকিস্তান। তবে একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দেন, ভারতের সিদ্ধান্তের মুখে পাকিস্তান নিজ অবস্থান থেকে সরে যাবে না।
নকভির ভাষায়, “ওরা যদি হ্যান্ডশেক না করতে চায়, তাহলে আমাদেরও বিশেষ কোনো আগ্রহ নেই। যা হবে, সবকিছুই হবে সমান অবস্থানে থেকে। এক পক্ষ যা খুশি করবে আর অন্য পক্ষ মাথা নিচু করবে—এটা কখনোই সম্ভব নয়।”
গত সেপ্টেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে করমর্দন এড়িয়ে চলছে ভারতীয় পুরুষ ও নারী দল। পুরুষদের এশিয়া কাপ থেকে শুরু করে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, এমনকি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ ও দোহায় অনুষ্ঠিত রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপেও একই নীতি অনুসরণ করেছে ভারত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এই অবস্থান নিয়েছে এপ্রিল মাসে পাহালগামে ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনায় নিহতদের প্রতি সংহতি জানিয়ে।
নকভি আরও জানান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও তাকে একাধিকবার বলেছেন—ক্রিকেটে রাজনীতি টেনে না আনার জন্য। শুরু থেকেই পিসিবির অবস্থান পরিষ্কার ছিল যে খেলাকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের হাতিয়ার করা উচিত নয়।
এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মেন্টর সরফরাজ আহমেদ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের আচরণকে ‘খেলাধুলার নীতিবিরোধী’ বলে মন্তব্য করেন। এরপরই বিষয়টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নজরে আনার কথা ভাবছিল পিসিবি।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আইসিসি নাকি বিসিসিআইকে জুনিয়র ক্রিকেটে রাজনীতি এড়িয়ে চলার অনুরোধ করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা ভারতীয় বোর্ডের হাতেই ছিল, আর তারা নিজেদের নীতিতেই অটল থাকে—গ্রুপ ম্যাচ থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত।
হ্যান্ডশেক ইস্যুতে এই অবস্থান যে ভবিষ্যতেও দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে, তা স্পষ্ট। নকভির বক্তব্যে অন্তত এটুকু নিশ্চিত—এই প্রশ্নে আর নীরব থাকবে না পাকিস্তান।
মন্তব্য করুন