সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৫২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকায় জলাবদ্ধতা রোধে তিন হাজার কোটি টাকা জলে

তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

প্রতিবছরই জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাজধানীবাসীকে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি হলেই নগরীর অলিগলি ও ছোট পরিসরের রাস্তাগুলোতেও জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। একটু ভারি বর্ষণেই ব্যাহত হয় রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এ ঘটনা যেন স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ নগরবাসীর এ তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে মুক্ত করতে বছর বছর নেওয়া হয় নানা প্রকল্প। ব্যয় করা হয় কোটি কোটি টাকা। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়, এ মৌসুমে চিত্রটির কোনোই পরিবর্তন হয় না।

মঙ্গলবার কালবেলায় ‘জলাবদ্ধতা রোধের তিন হাজার কোটিই জলে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে যে বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে হতাশাব্যঞ্জক। প্রতিবেদন অনুসারে, রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে গত এক যুগে বিভিন্ন সংস্থা খরচ করেছে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। বিপুল এ অর্থ ব্যয় এবং একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়নের পরও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি না মেলায় সব মহলে একটি প্রশ্ন দিন দিন আরও জোরালো হচ্ছে, বর্ষায় রাজধানীবাসীর এ ভোগান্তি থেকে কি মুক্তি নেই?

আমরা জানি, ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংস্থার হাতে ছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৮৮ সালে দায়িত্বটি পায় ঢাকা ওয়াসা। এরপর দীর্ঘ সময় মহানগরীর প্রধান ড্রেন লাইনগুলো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল তাদের কাছে আর শাখা লাইনগুলোর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তবে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ওয়াসার দায়িত্বে থাকা সব নালা ও খাল হস্তান্তর করা হয়েছে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে। এরপর দুই সিটি করপোরেশন খালগুলো দখলমুক্ত করে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছে। তাতে প্রথম দিকে নগরবাসী কিছুটা সুফল পেলেও, তা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। এর বাইরেও একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে রয়েছে আরও ১৭টি খাল।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, শুধু প্রকল্পের মাধ্যমে টাকার অঙ্ক বাড়ালেই জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না। পানি কোন পথ দিয়ে নামবে সেই কাজ আগে করা উচিত। সেইসঙ্গে উন্নয়নকাজ করার পর তা আর রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে খাল ও ড্রেনের মুখ আবার ভরাট হয়ে যায়। সেই দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে পালন করতে হবে।

মঙ্গলবার পাঁচ মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্বাচিতদের উদ্দেশে যার যার এলাকায় সবার সেবা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মতো দেশের জনগণেরও একই প্রত্যাশা, তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সর্বোচ্চ আন্তরিক হন।

আমরা মনে করি, বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্টদের আরও আন্তরিক ও স্বচ্ছ হতে হবে। জনগণের টাকা যাতে সঠিক ও কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিতকরণ জরুরি। কারণ ঢাকা শহরের এ গণদুর্ভোগ নিরসনে যে বৃহৎ পরিমাণ টাকা খরচ হয়, তার পর্যাপ্ত সুফল তো তারা পানই না, উপরন্তু খাল, নর্দমা, ড্রেন সংস্কার, উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের নামে নতুন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রেও নেই কোনো স্বচ্ছতা।

আমাদের প্রত্যাশা, দীর্ঘদিনের এ দুর্ভোগ নিরসনে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্প বরাদ্দের অর্থ তছরুপকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু আজ

ছেলেদের জন্য কিছু স্টাইলিশ আউটফিট কম্বিনেশন

বুয়েট শিক্ষার্থীদের ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ আজ

আর্জেন্টিনার আগেই এশিয়া সফরে আসছে ব্রাজিল, জেনে নিন ম্যাচসূচি

দুর্ভিক্ষের গাজায় পদে পদে বিপদ, নিহত আরও ৬৪

বৃষ্টিতে বাইক চালাতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি

যুবকের কাণ্ডে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ

২০২৬ সালে রোজা শুরু হতে পারে যেদিন থেকে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ আবেদনের শুনানি ফের আজ

সকালে উঠে ভুলেও করবেন না এই ৫ কাজ

১০

উন্নত ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল প্রেরণা কাজী নজরুল : রিজভী

১১

কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

১২

সহপাঠীদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ, কচুরিপানার নিচে মিলল লাশ

১৩

সপ্তাহের ব্যবধানে সাড়ে ৪ হাজার সেনা হারাল ইউক্রেন

১৪

অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে আড়ং

১৫

রাজধানীতে আজ কোথায় কোন কর্মসূচি

১৬

এসিআই-এ নিয়োগ, আবেদন করুন অনলাইনে

১৭

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১৮

বসতভিটা ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি, সন্তানের বিরুদ্ধে বাবার মামলা

১৯

ব্রাজিলের মন্ত্রীর মার্কিন ভিসা বাতিল, দায়িত্বজ্ঞানহীন বললেন লুলা

২০
X