

প্রাথমিক শিক্ষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদসহ ৪২ শিক্ষককে মধ্যরাতে বদলির আদেশ জারির পর কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা এসেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলি আদেশ দেওয়া হয়। পরে প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘তিন দফা দাবি আদায় বাস্তবায়ন পরিষদ এবং সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর সমন্বয়ক শামসুদ্দিন মাসুদ জানান, প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন তারা। তিনি বলেন, নৈতিকতা, মানবিকতা ও শিশু শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে রবিবার থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া না পর্যন্ত সারা দেশে শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। রোববার থেকে সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা চলবে। গতকালও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করলেও বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সেই কর্মসূচি স্থগিত করেন। শিক্ষকদের অভিযোগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে ২২ দিন অতিবাহিত হলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে এই কঠোর কর্মসূচিতে গেছেন। কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন এবং সবশেষে কমপ্লিট শাটডাউন শুরু। এদিকে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বছরের এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কর্মবিরতি ও তালাবদ্ধ কর্মসূচিতে শিশুদের পড়াশোনায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এবং তারা মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন তারা। কিছু জায়গায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্কুলের তালা ভেঙেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফেরার চূড়ান্ত নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে কর্মবিরতি বা শাটডাউন অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়। তার আগে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ায় পরিষদের চারজন আহ্বায়কসহ কয়েকজন শিক্ষককে শোকজ করা হয়। শিক্ষক নেতারা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তারা দ্রুত প্রতিশ্রুত দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়ে অচলাবস্থা নিরসন করে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, আমাদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কর্মসূচি থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই। বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান বলেন, গতকালও শিক্ষকরা সর্বাত্মক কমপ্লিট শাটডাউন করেছেন। তিন দফা দাবি পূরণের প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
মন্তব্য করুন