মোস্তফা কামাল
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৪২ এএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৩২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

চেক মানুষের, চেকিং প্রতিমন্ত্রীর?

চেক মানুষের, চেকিং প্রতিমন্ত্রীর?

বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে, তাদের হাতে টাকা এখন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়ে গেছে বা মানুষ চাইলে এখন তিনবেলাই মাংস খেতে পারে। এগুলো মহোদয়-মহাশয়দের কথা। মন্ত্রী হলে এ ধাঁচের কথা বলতেই হয়? নইলে বলেন কেন? মন্ত্রী হওয়ার আগে তো বলেন না। মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পরও বলেন না। বরং মন্ত্রিত্বের আগে-পরে জনদরদি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন। নতুন কেবিনেটের মধ্যে প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে নতুন মুখ আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি নিজে ব্যবসায়ী ছাড়াও আলোচনায় থাকার আরেক কারণ তাকে দেওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী নেই। সেই দৃষ্টে মন্ত্রীর ফাংশন তাকেই করতে হয়।

এ মন্ত্রণালয়ের আগের মন্ত্রী টিপু মুনশি নিয়মিতই ছিলেন আলোচনায়। তিনিও দেশের তারকা ব্যবসায়ী। এখন আছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরই সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে। তার আলোচনায় থাকার কারণ ছিল কিছুটা ক্রিয়াকর্মের জেরে। কিছুটা মুখদোষের কারণে। মুখের কারণে নিয়মিত ভাইরাল থেকেছেন তিনি। তিনি কোনো পণ্যের দাম কমবে বলে আশ্বাস দেওয়ার পরপরই সেটার দাম বেড়ে যেত। বলতে বলতে একপর্যায়ে বলেই ফেলেছিলেন বাংলাদেশের ১৭ কোটির মধ্যে ৪ কোটি মানুষ ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ডে জীবন কাটায়। বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সরকারের ক্ষতি হয়ে যাবে এমন কথা বলেও আলোচনার ভিন্ন উচ্চতায় উঠেছিলেন টিপু মুনশি। আহসানুল ইসলাম টিটু প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর কথা বলছিলেন মেপে মেপে। বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা-তদবিরে দৌড়াদৌড়িতে নামেন। নিজে আলোচিত ব্যবসায়ী হয়েও ব্যবসায়ীদের নিয়মিত হুমকি-ধমকি, অভিযান জোরদারের পদক্ষেপে তিনি বেশ ভাইরাল হচ্ছিলেন। একপর্যায়ে জানালেন, কিছুদিনের মধ্যে সিন্ডিকেট দমিয়ে দেবেন। আরেক পর্যায়ে বলেছেন, জুন-জুলাইতে সিন্ডিকেট নামটিই থাকবে না।

এখন শোনালেন আচানক কথা—দেশে মানুষের হাতে টাকা বেশি হয়ে গেছে। বৃহস্পতির তুঙ্গে এসে ২২ জানুয়ারি মানুষের পকেট চেকিংয়ের তথ্যটি দিলেন তিনি। সেদিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে চিনি-খেজুরসহ রমজানের অপরিহার্য পণ্যের দাম কমার কোনো আশ্বাস আদায় করতে পারলেন না বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু মানুষের পকেট চেকিংয়ের তথ্য দিলেন। নিত্যপণ্যের দর নিয়ন্ত্রণে একের পর এক বৈঠকেও যখন সুফল মিলছে না, তখন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বৈঠকটি করেন রাজধানীর পাইকারি মোকাম—মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। সেখানে ব্যবসায়ীরাই তাকে পেয়ে বসেন। বেগতিক অবস্থায় পড়ে উল্টো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হঠাৎ অভিযান বন্ধের দাবি মেনে নিতে হয়েছে তাকে। এটাই বাস্তবতা। কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের দাম। বৈঠকটিতে ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যার কথাও শোনান। দেন ভোগান্তির ফিরিস্তিও। সেইসঙ্গে দাম কমার বদলে চিনি-খেজুরসহ রমজানে জরুরি কিছু পণ্যের দর উল্টো বাড়ার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন তারা। দাম নিয়ন্ত্রণের নামে নিত্যপণ্যের দোকানে অভিযান চালানো হবে না মর্মে ব্যবসায়ীদের অভয় দেন প্রতিমন্ত্রী। ধর্মের ভয় দেখিয়ে হেদায়েতের চেষ্টায় ব্যর্থ তো হয়েছেনই।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর এ অবস্থার মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি আছে, কিন্তু মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে না। বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে বলে মন্তব্য করে বছরখানেক আগে ভাইরাল হয়েছিলেন তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এর কিছুদিন পর ওই কেবিনেটের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে ৪ কোটি মানুষ আছে যাদের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মানুষের সমান। এই ৪ কোটি মানুষ দাম দিয়ে ভালো জিনিসপত্র কিনতে পারে। কাছাকাছি সময়ে দেশের মানুষ চাইলে এখন তিনবেলা মাংস খেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

টানা চতুর্থ দফায় সরকার গঠনের পর বাজারের আগুনকে অস্বীকার না করে বরং তা দমানোর কথা জানানো হয়। বৈশ্বিক পরিস্থিতি, মানুষের মাথাপিছু আয়-ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা একটু কমই বলা হচ্ছিল। বাজার নিয়ন্ত্রণকে চ্যালেঞ্জ বলা হয়েছে। কিন্তু লক্ষণটা ভালো নয়। ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ শিরোনামে এবারের নির্বাচনী ইশতেহার আওয়ামী লীগের। শিরোনামে কর্মসংস্থান শব্দটি আনা হলেও মূল ওয়াদা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। যে কোনো অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়টি মূলত নির্ভর করে সরকারপ্রধান ও সরকারের কৌশলের ওপর। এর আগে চারবার সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে শেখ হাসিনার। তার আন্তরিকতাও প্রশ্নমুক্ত। দ্রব্যমূল্যের ওয়াদা বাস্তবায়নে বেশি সম্পৃক্ত অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, কৃষিসহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোতে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। লক্ষণীয় বিষয়, নতুন সরকারের শপথের পরদিনই চালসহ কিছু নিত্যপণ্যের দাম হঠাৎ চড়েছে। এ নিয়ে দোকানদার, পাইকার, আড়তদারদের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ ভিন্ন কিছুর বার্তা দেয়। চাল-তেল বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতিতে বড় রকমের ঐতিহাসিক আইটেম। এসবের দাম চড়াতে সরকারকে একটি দিনও পার হতে না দেওয়ার মধ্যে একটি উৎকট গন্ধ অনুমেয়। এটি সরকারকে পেয়ে বসা বা কাবু করার একটি আলামত। দ্রব্যের মধ্যে চাল বড় স্পর্শকাতর। চাল থেকেই হয় ভাত। আর ভাতের অধিকারই একপর্যায়ে ভোটের অধিকারে রূপ নিয়ে অনিবার্য করেছে ঐতিহাসিক একাত্তর তথা মুক্তিযুদ্ধকে। বাংলায় সুদিনের উদাহরণ খুঁজতে এখনো শায়েস্তা খাঁর আমলকে সামনে নিয়ে আসা হয়। তখন এক টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত বলে প্রতিষ্ঠিত। আর পাকিস্তানি শাসকদের দুঃশাসন বোঝাতে পূর্ব পাকিস্তানে প্রতি মণ চাল ৫০ ও পশ্চিম পাকিস্তানে ১৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার তথ্য হাজির করা হতো। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, আর্থসামাজিক অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। পাকিস্তান আমলের দেড় শতাংশ প্রবৃদ্ধি বেড়ে এখন প্রায় ৭ শতাংশে উন্নীত করেছে। নিম্নমধ্য আয়ের দেশ থেকে আমরা মধ্য আয়ের দেশের স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু চাল নিয়ে ‘রাজনৈতিক চাল’ বন্ধ হয়েছে বলে মনে হয় না। স্বাধীনতার পর ৮০ ভাগ মানুষের তিনবেলার খাবার ছিল ভাত। এখন তা কমে ৬৫ শতাংশ হয়েছে। গত ৪০ বছরে ধানের উৎপাদন ১ কোটি টন থেকে বেড়ে ৩ কোটি ৪০ লাখ টন ছাড়িয়েছে। কিন্তু চালের রাজনীতি ঠিকই চলছে। ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চালের কেজি ৪০ টাকা ছুঁয়েছিল বলে মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের দেওয়া ইশতেহারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা ও ২০১৩ সালের মধ্যে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল।

সেই ওয়াদা রাখতে গিয়ে সরকার সার-বীজ-কীটনাশকের ব্যাপারে যথাসম্ভব সতর্ক থেকেছে। এবার নিত্যপণ্য নিয়ে সময়োপযোগী ওয়াদার সঙ্গে রাজনৈতিক-কূটনৈতিক অনেক চ্যালেঞ্জও যোগ হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতা নেওয়ার পরদিনই চালসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনা সরকারের জন্য একটি খারাপ বার্তা। এবার সেটা ঘটল টানা চার মেয়াদের সরকারের নতুন করে শপথ নেওয়ার পরদিনই। বিষয়টি মোটেই স্বাভাবিক নয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ‘গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ’-এর এই দেশে ১৭৭০ ও ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আন্তর্জাতিক খাদ্য রাজনীতির শিকার হয়ে ১৯৭৪ সালেও আরেকবার বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে। সেই অতীত মনে রাখার দরকার আছে।

স্বর্গসুখ-সম্ভোগ এনজয় করার মানুষের অভাব নেই। তারা সংখ্যায় কত, সেই হিসাব তোলাই থাকছে। যুক্তি কড়া সবদিকেই। বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়লে এর ফলন কমের অঙ্ক। আমদানির অনুমতি দিতে না দিতেই দাম অর্ধেক হয়ে যাওয়ার ম্যাজিকও আছে। বাজার পরিস্থিতির জন্য ক্ষমতাহীন বিএনপিকে দোষারোপের একটি প্রবণতা বেশ স্পষ্ট। ক্ষমতাশূন্য বা মাজাভাঙা দলটি সেই চেষ্টা করে থাকলে তা স্পষ্ট করা দরকার। ক্ষমতাসীনরা অহরহ বলছে, বিএনপি শেষ। আবার এও বলা হচ্ছে, গত ১৫-১৬ বছরে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তিনগুণ বেড়েছে। সেখানে পেঁয়াজ-মরিচ-তেল ছাড়াও রান্না করা যায় তত্ত্ব চালালে সিরিয়ালে চাল ছাড়াও ভাত খাওয়া যায়, সবজি ছাড়াও তরকারি রান্না হতে পারে—ধরনের কথা চলে আসার শঙ্কা থাকে। নিজের আয় বেড়েছে বলে সবার পেটে ভাত আছে, মনে করা ঠিক নয়।

রোজার মাসে তেল, চিনি, ছোলা, আদা, ডাল, খেজুরসহ কিছু পণ্যের বাড়তি চাহিদা থাকাই স্বাভাবিক। এ দেশে ঈদ-চান্দ, শীত-গরম সবই মৌসুম। রমজান তো মৌসুমের সেরা। এখন সেই সন্ধিক্ষণে দেশ। হালকা কথায় ভাইরাল-ট্রল না হয়ে বাস্তবতায় আসা দরকার। ‘আজকাল গ্রামে হারিকেন দেখা যায় না; হারিকেন, চেরাগ, কুপি, বাতি এখন ড্রয়িংরুমে সাজিয়ে রাখতে হবে; কবিতায় কুঁড়েঘর থাকবে, বাস্তবে নয়; ভিক্ষা দেওয়ার লোক পাওয়া যায় না—ধরনের কথায় বাজারের আগুনে পোড়া মানুষের সঙ্গে মশকরার লাগাম টানা জরুরি। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মানুষের রাস্তায় না নামার মধ্যে সাফল্য খোঁজা অনর্থক। বরং বোবাকান্নার আওয়াজ উপলব্ধি করলে তা হবে অর্থবোধক। তখন অগাধ অবৈধ টাকাওয়ালা ছাড়া বাকিদের বাজারে কান্নার সময় কাকেরা বসন্তের গীত গাইবে না। বেড়া ফসলি ক্ষেত খেতে ভয় পাবে। কারও গুণে আলু-পেঁয়াজের দোষও তেজ পাবে না।

লেখক: ডেপুটি হেড অব নিউজ, বাংলাভিশন

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাইসির খোঁজে ৩২ সদস্যের দল পাঠাচ্ছে তুরস্ক

ইরানের প্রেসিডেন্টের দুর্ঘটনাস্থল থেকে মিলল সংকেত

কেন এত সময় লাগছে অনুসন্ধানে

টানা চারটি লিগ জয়ীদের এলিট ক্লাবে ম্যানসিটি

হেলিকপ্টার পাওয়ার বিষয়ে যা জানাল রেড ক্রিসেন্ট

রাইসির সঙ্গে হেলিকপ্টারে আর যারা ছিলেন

উন্নয়নের নামে রাতের আঁধারে শাহবাগে গাছ কাটার অভিযোগ

সবশেষ বিহারে ছিলেন এমপি আনার

‘অভিবাসী কর্মীদের জন্য আরও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে সরকার’

ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিখোঁজ, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

১০

স্বামীর মোটরসাইকেলের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু

১১

তবুও প্রার্থী হলেন সেই নাছিমা মুকাই 

১২

গাজীপুরে কারখানার ১০ তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে নারী শ্রমিকের মৃত্যু

১৩

রাজশাহীতে আগুনে পুড়ে ছাই ১০ বিঘার পানের বরজ

১৪

বিয়েবাড়ি থেকে কনের পিতাকে তুলে নিয়ে টাকা দাবি

১৫

ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর , এলাকায় উত্তেজনা

১৬

ঈশ্বরদীতে ফেনসিডিলসহ রেল নিরাপত্তা বাহিনীর সিপাহি আটক

১৭

এমপি আনোয়ার খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ওসিকে নির্দেশ

১৮

উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১১৬ কোটিপতি প্রার্থী : টিআইবি

১৯

রাইসির জন্য দোয়ার আহ্বান

২০
X