আর কে চৌধুরী
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৭ এএম
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সড়কে মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

সড়কে মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায় তা জানা নেই। ট্রাফিক শৃঙ্খলার অভাবে ঘটছে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা। সব সম্ভবের এই দেশে মহাসড়ক বা হাইওয়েগুলোতেও চলে নসিমন, করিমন ও অটোরিকশার মতো যানবাহন। সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে যেসব কারণ দায়ী তার মধ্যে অন্যতম হলো—আইন অমান্যের প্রবণতা। যানবাহন চালক, পথচারী সবার মধ্যে এ প্রবণতা ক্রিয়াশীল।

সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টানতে হলে যেমন ইচ্ছা তেমন চলার প্রবণতায় বাঁধ সৃষ্টি করতে হবে। মোটরসাইকেলের ফ্রি-স্টাইল চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা দরকার। সবচেয়ে আগে কী কারণে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তা উদঘাটন করে মূল জায়গায় হাত দিতে হবে। আমাদের বিশ্বাস, সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা গেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এজন্য লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা দরকার। যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ যাতে যান্ত্রিক যানবাহন চালাতে না পারে সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে হবে। যানবাহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের সম্পর্ক নিয়ে যে রটনা রয়েছে তার ইতি ঘটানোও জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানিকে শুধুই দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দেশের সড়ক-মহাসড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ড বলা যায়। অনেক দুর্ঘটনাই চালকের কারণে ঘটে থাকে। অনেক চালক রাত-দিন গাড়ি চালান। অত্যধিক ক্লান্তি এবং গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। লাইসেন্সহীন অদক্ষ চালকের হাতে, এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। দেশে চালকদের আরেকটি বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা। চালকদের মাদকাসক্তিও দুর্ঘটনার বড় কারণ। মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধে চালকদের ডোপ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা কি মেনে চলা হচ্ছে?

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও চালকের বেপরোয়া মনোভাব। এ ছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়কের পাশে হাটবাজার বসা, চালকদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব ইত্যাদি কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়কে যান চলাচলের সর্বোচ্চ গতি বেঁধে দিয়ে এবং গতি পরিমাপক যন্ত্র ব্যবহার করে চালকদের ওই নির্দিষ্ট গতি মেনে চলতে বাধ্য করা হলে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইনের প্রয়োগ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ চালক এবং সড়কে চলাচল উপযোগী ভালোমানের যানবাহন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে একই সঙ্গে জনগণকেও হতে হবে সচেতন। বাংলাদেশ এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অপরিহার্য। আর্থসামাজিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ ছাড়া উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা সভ্যতার পরিচয় বহন করে। সুতরাং উন্নত দেশের উপযোগী পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা ও কাজ এখনই শুরু করতে হবে।

লেখক: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান

সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শাপলা প্রতীক না পাওয়ার প্রশ্নে যা বললেন সারজিস আলম

দুই গোলে এগিয়ে থেকেও জাপানের কাছে ব্রাজিলের হার

ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী

শিক্ষা উপদেষ্টাকে আইনি নোটিশ

বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা

সরিয়ে দেওয়া হলো শিক্ষার ডিজিকে 

ভিকারুননিসার ছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবকের যাবজ্জীবন

গাজাকে নতুন করে নির্মাণ নিয়ে কী বলছেন ট্রাম্প

সিজেএফবি বিশেষ সম্মাননা পাচ্ছেন  / বেবী নাজনীন, পূর্ণিমা এবং কাজী জেসিন

শিশুশ্রম নিরসনে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে

১০

টিকটক বানাতে গিয়ে প্রাণ গেল হৃদয়ের

১১

সেপ্টেম্বরে সড়কে ঝড়ল ৫০২ প্রাণ

১২

ধবলধোলাই এড়ানোর ম্যাচে বোলিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে চার পরিবর্তন

১৩

ট্রেনে টিকিট ছাড়া ভ্রমণ  / সাত দিনে জরিমানাসহ ১৭ লাখ টাকা আদায় 

১৪

ভারতে বিশাল বিনিয়োগের পথে গুগল

১৫

বিদেশি কর্মী নিয়োগে যে সুবিধা দেবে মালয়েশিয়া

১৬

টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

১৭

আরও ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

১৮

অন্তঃসত্ত্বা শ্রমিকের মৃত্যুতে ৩ কারখানায় অসন্তোষ

১৯

ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে ধূমপান ছাড়তে বললেন এরদোয়ান, অতঃপর...

২০
X