এবারের বইমেলায় আপনার কী কী নতুন বই এসেছে?
দুটি কিশোর উপন্যাস—‘পানিডাঙা গ্রামে যা কিছু ঘটেছিলো’, খড়িমাটি এবং ‘চিরকালের এই রূপকথা’, পরিবার পাবলিকেশন্স। উপন্যাসিকা ‘পুরানা আমলের এইসব ভেদের কোনো মীমাংসা আসে নাই’, বেঙ্গল বুকস। আর একটি গবেষণা পুস্তিকা—‘প্রফেসর শঙ্কুর সাথে, ভিন্ন এক অভিযানে’, পেন্ডুলাম।
বইগুলো সম্পর্কে জানতে চাই...
কিশোর উপন্যাস ‘পানিডাঙা গ্রামে যা কিছু ঘটেছিলো’ আসলে পানিডাঙা নামের এক গ্রামের গল্প। ১৩৫০ বাংলা সনে, জুলহাস আলী নামের একটা ছেলে বাস করত সেখানে। গ্রামটা অতি ছোট, আর গ্রামেও ছিল শুধু বিশ-পঁচিশ ঘর-গৃহস্থের বসতি। গ্রামে লোকজনও তেমন একটা নেই। কারণ প্রতি চৈত্র-বৈশাখ মাসে কলেরা বা গুটিবসন্তে বেধুম লোক মরতে থাকে। বাচ্চারা টপাটপ মরে যায় বিবিধ অসুখে। তেমন দিনে গ্রামের একটা বাড়িতেই শুধু বেঁচে থাকে একটি মাত্র বাচ্চা, জুলহাস আলী। অল্পে অল্পে একা একা বড় হতে হতে কীভাবে তার ভাব হয় ঢোঁড়া সাপ, ডাহুক আর পথ চলতে থাকা নাঙ্গা সন্ন্যাসীর সঙ্গে, কীভাবে মায়ের হুকুমমতো মানত পূরণের জন্য পাঁতিহাস পুষতে-পালতে পালতে দেখা হয়ে যায় অদ্ভুত একটা ছেলের সঙ্গে, সেসবের গল্প আছে এখানে।
দ্বিতীয় কিশোর আখ্যান ‘চিরকালের এই রূপকথা’ ১০০ বছর আগের এক আশ্চর্য রূপকথা। মানুষ ও গাছের মধ্যকার আত্মীয়তার গল্পকথা এটা। মেঘনাপাড়ের সাগাইয়া নামের অদ্ভুত এক গ্রামে আছে শুধু একটি কামরাঙা গাছ। অদ্ভুত ব্যাপার! অনেক চেষ্টা করেও কেউ তার বীজ থেকে চারা করতে পারেনি। তবে নদীভাঙনের আক্রমণ আসার আগে সেই গ্রামে ঘটে একটা আশ্চর্য ঘটনা! কামরাঙা গাছটার বীজ থেকে হঠাৎ জন্মায় একটা চারা। কামরাঙা গাছের একমাত্র বংশধর। সেই চারাটাকে কি না কামরাঙা গাছটা আমানত হিসেবে রেখে যায় ওয়ালি মিয়ার কাছে; যে ওয়ালি মিয়া তার ছোট্টবেলা থেকেই ওই গাছটাকে ভালোবাসত।
‘পুরানা আমলের এইসব ভেদের কোনো মীমাংসা আসে নাই’ উপন্যাসিকা। এই যে পরাবাস্তব কথা, এই কথা সেই কোনো এক পুরানা কালের! সেই কাল হতে পারে এই কি না ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ। আবার কি না সেটা ১৩০৭ বঙ্গ সনও হতে পারে। কাল যেটাই হোক, ভিটিতে ভিটিতে তখন দুইমুখা চুলায় চুলায়, দুপুরে অথবা সন্ধ্যায় অথবা ভোরের বেলায়, গনগনা আগুন ছিল; তেমনি তখন রাতের প্রহরে প্রহরে অনেক আকড়া-পাকড়া রকমের অন্ধকারও ছিল!
এসব অন্ধকার ও আলোর দিন যেখানে এসেছিল, সেই তল্লাটের নাম জালকুড়ি। সেই কালে, সেখানের লোকেদের সঙ্গে বানবাতাসের বসত ছিল। সেখানে অশৈলীরা ছিল। ছিল টনটনা অগ্নিশইলঅলা জিনরা। তারা হাঁটে, কিন্তু মাটিতে তাদের পাও লাগে না। অত অত প্রকারের এর-তার সঙ্গে, একদম চুপ মুখেই তখন, নিজেদের জিন্দেগি পার করে যেত মনিষ্যিগণ। সেখানে একদিন ভয়ানক আজব এক স্বপনের দংশন পায় বিবি কুলসুম নামের নয়া এক বউ।
আর সত্যজিত রায়ের এক দারুণ চরিত্র হলো প্রফেসর শঙ্কু। ওই যে চরিত্রটি, সেটি বাংলা সাহিত্যের বিশেষ কোনো চরিত্রের আদলে তৈরি কি না। কতটা প্রভাবজাত এই শঙ্কু, কেমন সেই প্রভাব—এসব বিষয়ের ওপর বিশদ আলোকপাত করা হয়েছে এই লেখায়।