গ্রিন পার্ক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাঝখানে পাশাপাশি দুটি পিচ দেখতে প্রায় একই রকম। তেমনি ঘাসের উপস্থিতিও মেলেনি। অর্থাৎ চেন্নাইয়ের চেয়ে ভিন্ন হতে যাচ্ছে কানপুরের উইকেট; তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে কোন পিচে গড়াবে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট—এ প্রশ্নের উত্তর খোদ বাংলাদেশ দলের ম্যানেজমেন্টেরও অজানা। সে উত্তর খুঁজতে সময় ব্যয় না করে দলের ব্যাটিং নিয়েই যত দুশ্চিন্তার কথা শোনালেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। চেন্নাইয়ে ব্যাটিং ব্যর্থতায় চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই গুটিয়ে গেছে খেলা; কানপুরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর দেখতে চান না তারা। অন্তত কোচ হাথুরুর কথায় সেটার আভাস মিলেছে। শিষ্যদের কাছ থেকে সামর্থ্যের সবটুকুই দেখতে চান তিনি।
চেন্নাইয়ে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটাররা মিলে করেছিল ১৪৯ রান, যার খেসারত দিতে হয়েছিল ২৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হার স্বীকার করে। পাকিস্তানে দুই টেস্ট জিতলেও ব্যাটিংয়ে ছন্দপতন ঠিকই ছিল। তবে সেবার লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতে ওই ঘাটতিটুকু আর বোঝা যায়নি। চেন্নাইয়ে তারাও ব্যর্থ হওয়ায় সবকিছু একসঙ্গে ফুটে উঠেছিল। থিতু হয়েও বারবার উইকেট উপহার দেওয়াটাকে চিন্তা মনে করেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ, ‘ভালো শুরুর পর ওরা আউট হয়ে যাচ্ছে, এটা নিয়ে আমরা একটু চিন্তিত।’ তবে কানপুরে ভালো কিছু করতে চান বলেও নিশ্চিত করেন তিনি, ‘তারা (শিষ্যরা) ভালো করতে মুখিয়ে আছে। গত ম্যাচে আমাদের মেধা ও সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি।’ চেন্নাইয়ে যে সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারেনি, তার প্রমাণ মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসদের মতো ক্রিকেটারদের রান না পাওয়া।
কানপুর টেস্টের আগে তাই নেটে যতটা সম্ভব নিজেদের ব্যাটে শান দিয়ে গেছেন মুশফিকরা। পুরোটা সময় নেটে ভাগ করে করে ব্যাটিং করেন মুশফিক। কোচ অবশ্য বড় ইনিংসই প্রত্যাশা করেছেন, ‘ভালো শুরু পেলে ইনিংস বড় করতে হবে। এটাই (করতে না পারাটা) দুশ্চিন্তার বিষয়। ক্রিকেটে কেউ ৩০ বল খেলে ফেললে উইকেটে থিতু হওয়া জরুরি। কীভাবে প্রতিরোধ গড়তে হয় ভারতের এই দলটা তা ভালো করেই জানে। তাই আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে ভালো ব্যাট করে যেতে হবে।’ চেন্নাইয়ে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারানোর পরও ভারতের প্রথম ইনিংস গিয়ে ঠেকেছিল প্রায় ৪০০ রানের কাছে। বাংলাদেশ সেখানেও একবার প্রতিপক্ষের কাছে হেরে যায়। কানপুরে তাই সে চ্যালেঞ্জও নিতে হবে ব্যাটার-বোলারদের।
অবশ্য ভারতীয় স্পিনারদের সামলাতে বিশেষ অস্ত্রেরও দেখা মিলেছিল অনুশীলন নেটে। জিয়াস কারাপ্পাকে হয়তো মনে থাকার কথা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য এই ভারতীয় রিস্ট স্পিনারকে কাজে লাগিয়েছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম। এবারও কানপুরের নেটে দেখা গেল কেরালা রাজ্যের এই রিস্ট স্পিনারকে। অনুমান করে বলাই যায়, কানপুর টেস্টে ভারতের একাদশে পরিবর্তন এলে দেখা মিলতে পারে কুলদীপ যাদবের। কানপুরের ঘরের ছেলে বলে কথা! তাকে সামলাতেই এমন বাড়তি সতর্কতা হতে পারে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের। কানপুরে খেলা সর্বশেষ টেস্টের দুই ইনিংসে ভারতের হয়ে ২০টির মধ্যে ১৮টি উইকেটই নিয়েছিলেন স্পিনাররা। অক্ষর প্যাটেলের ৫ কিংবা রবীন্দ্র জাদেজার ৪টি উইকেট একই ম্যাচের দুই ইনিংসে দেখা মিলেছিল।