পরপর দুই ম্যাচে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ বাংলাদেশের। এখন পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই ভালো লড়াই দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা; কিন্তু ব্যাটাররা বরাবরই ছিলেন ব্যর্থ। বিশেষ করে দেড় যুগের বেশি সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলা মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পারফরম্যান্স ছিল অপ্রত্যাশিত। দুই সিনিয়রের এমন ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের নানা প্রান্তের ক্রিকেটবোদ্ধারাও মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের সমালোচনা করতে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছেন না। তবে জাতীয় দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন শুধু সিনিয়রদেরই দোষ দেখতে চান না। টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার দায় পুরো দলেরই বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষ্যমতে, একাদশে থাকা সবার দায়িত্ব সমান। এখানে কারও কম, কারও বেশির সুযোগ নেই। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিন এসব মন্তব্য করেন।
বৃষ্টিতে পাকিস্তান ম্যাচের অনুশীলন পণ্ড হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তদের। গ্রুপের শেষ ম্যাচটা তাই খেলতে হবে এখন আগের অনুশীলন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই। তবে দলের সবচেয়ে চিন্তার জায়গা থেকে গেল ব্যাটিংয়ে। পরপর দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ—দুজনই দলকে চাপ থেকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। তাদের দিকেও তাই অভিযোগের তীর বেশি। তবে সালাহউদ্দিন সেটা মানতে চান না। তিনি বলেন, ‘যেটা বললেন সিনিয়রদের বাড়তি দায়িত্ব আছে; আমার মনে হয় যে ১৫ জন স্কোয়াডে আসছে, বা যে ১১ জন খেলে একাদশে তাদের সবারই সমান দায়িত্ব।’ এক্ষেত্রে বেশকিছু উদাহরণও টেনে আনলেন জাতীয় দলের এ কোচ, ‘সিনিয়রদের তো বাড়তি টাকা দেওয়া হয় না। সুতরাং এখানে সবারই সমান পারফর্ম করতে হবে। এটা জাতীয় দল, এখানে সবারই সমান দায়িত্ব। এখানে প্রত্যেকেরই সমান রোল আছে, কারও জন্য অতিরিক্ত নেই। আমার মনে হয় তাদের সবাইকে সমানভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
টুর্নামেন্টে কেউ ভালো নাও খেলতে পারে, তবে আলাদা করে দোষারোপ করতে চান না জানিয়ে সালাহউদ্দিন যোগ করেন, ‘একটা টুর্নামেন্টে কেউ ভালো নাও খেলতে পারে। এখানে এক-দুজনকে দোষ না দিয়ে বলতে হবে, পুরো দল হিসেবেই আমরা খারাপ খেলেছি বলেই ম্যাচ হেরেছি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়ে কোনো লাভ নেই। তাওহীদ হৃদয় ১০০ মেরেছে, কিন্তু দিন শেষে তো আমরা ম্যাচ হেরেছি।’ দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা হারের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বোলিংয়ে নিজেদের সেরাটা দিয়ে গেছেন তাসকিনরা। এখানেই ইতিবাচকতা খুঁজচ্ছেন সালাহউদ্দিন, ‘আমরা হয়তো খুব বেশি রান করতে পারিনি। তবে এ ধরনের উইকেটে দুটি দলকে আমরা যেভাবে চাপের মধ্যে রেখেছিলাম, শেষ পর্যন্ত আমার কাছে মনে হয় এটা বড় ইতিবাচক দিক।’
অথচ টুর্নামেন্টে আসার আগে কোচ ফিল সিমন্স বলেছিলেন সেমিতে খেলার কথা। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন বলেছিলেন শিরোপা জেতার স্বপ্নের কথা। দুই ম্যাচ যেতেই সব শেষ! সালাহউদ্দিন একটু বিরক্ত হয়েই উত্তর দিলেন, ‘আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি এখানে কেন আসছি? উত্তর কী দেব? আমি এখানে অংশ নিতে এসেছি? তাহলে? একজন অধিনায়ক হিসেবে, বাংলাদেশের নেতা হিসেবে সে যদি স্বপ্ন না দেখে, আমরা কীভাবে স্বপ্ন দেখব? আমাকেও যদি জিজ্ঞাসা করেন, আমি বলব আমি এখানে চ্যাম্পিয়ন হতে এসেছি। পারি বা না পারি, আমি কি বলব অংশ নিতে এসেছি? এটা তো সাধারণ ইস্যু।’
মন্তব্য করুন