প্রাথমিক ট্রান্সফার মূল্য ৫৫ মিলিয়ন ইউরো। ম্যাচ সংখ্যার ওপর নির্ভর করে বাড়তে পারে ৩ মিলিয়ন, বিভিন্ন শিরোপা জয়ে যোগ হতে পারে আরও ৭ মিলিয়ন। সব মিলিয়ে দানি ওলমোকে কিনতে বার্সেলোনা খরচ প্রায় ৬০ মিলিয়ন ইউরোয় ঠেকতে পারে। টাকায় যা প্রায় ৮০৬ কোটি। ব্যয়বহুল এ খেলোয়াড় ইস্যুতে বুকের ওপর যেন পাহাড়সম পাথর সরল বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তার!
আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। লা লিগা কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যে খরচ রাখতে না পারায় খেলোয়াড় নিবন্ধন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে জটিলতায় ভুগছে বার্সেলোনা। সে জটিলতার মধ্যে জার্মান ক্লাব আরবি লাইপজিগ থেকে দানি ওলমোকে কিনেছে কাতালান ক্লাবটি। ২০২৪ সালের আগস্টের ওই ট্রান্সফার ছিল এ ফুটবলারের ঘরে ফেরা। প্রতিবেশী ক্লাব এসপানিওল থেকে ৯ বছর বয়সে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন। বার্সার যুব উন্নয়ন প্রকল্প দিয়ে উঠে আসার পর ডায়নামো জাগরেব হয়ে যোগ দিয়েছিলেন লাইপজিগে। ঘরে ফেরার পর লা লিগা কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ওলমোকে ছয় মাসের চুক্তির অনুমোদন দেয়। এ সময়ের মধ্যে আয়ের উৎস বৃদ্ধি করতে পারলে চুক্তি নবায়নের সুযোগ ছিল; কিন্তু বার্সেলোনা আয়ের উৎস বৃদ্ধি করতে না পারায় ৮০৬ কোটি টাকার এ ফুটবলার হারানোর শঙ্কায় ছিল ব্লুগ্রানাররা। ২০২৫ সালের শুরু থেকে ওলমোর লা লিগায় খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে লিগ কর্তৃপক্ষ। এ ফুটবলারকে রক্ষায় স্প্যানিশ সরকারের দ্বারস্থ হয় কাতালান জায়ান্টরা। সরকারের ক্রীড়া শাখা বার্সেলোনার পক্ষে রায় দিয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে যে, হ্যান্সি ফ্লিক বাকি মৌসুমের জন্য দানি ওলমোর সার্ভিস পাবে। ২৬ বছর বয়সী এ ফুটবলারের মতো বার্সার একাডেমি গ্র্যাজুয়েট পাউ ভিক্টরকে নিয়েও একই জটিলতায় ছিল ক্লাবটি। ওলমোর মতো ২৩ বছর বয়সী উইঙ্গার পাউ ভিক্টরও চলতি মৌসুমে খেলার বিষয়ে সবুজ সংকেত পেয়েছেন।
ওলমো ও ভিক্টর ইস্যুতে বার্সেলোনা এবং স্প্যানিশ ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে উত্তপ্ত যে লড়াই চলছিল; তার আপাতত সমাপ্তি রেখা দেখা গেল। গত গ্রীষ্মে দুই ফুটবলারকে স্কোয়াডভুক্ত করে কাতালান জায়ান্টরা। লা লিগার বাজেটে তাদের বেতন অন্তর্ভুক্ত করার মতো জায়গা না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে নিবন্ধিত করা সম্ভব হয়নি। দলের অন্য সদস্যদের দীর্ঘমেয়াদি ইনজুরির কারণে বার্সেলোনা দুই ফুটবলারকে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিবন্ধন করানোর অনুমতি পেয়েছিল। সময়সীমা ছিল ২০২৪ সাল পর্যন্ত। মেয়াদ শেষে ওলমো এবং ভিক্টরকে লা লিগার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কার্যত বার্সেলোনার লড়াইটা শুরু হয়েছিল সেখান থেকেই।
লা লিগা এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনে করা ক্লাবটির একাধিক আপিল খারিজ হওয়ার পর বার্সেলোনা স্পেনের সর্বোচ্চ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে যায়। জটিল মামলা বিবেচনা করার সময় ওলমো এবং ভিক্টরকে আরেকটি অস্থায়ী নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। লা লিগা কর্তৃক আরোপিত আর্থিক সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরিবর্তে বার্সেলোনা যুক্তি দেয় যে, ওলমো এবং ভিক্টরের কাজের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। রায় বার্সেলোনার পক্ষে না এলে ওলমো এবং ভিক্টর বাকি মৌসুমে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেতেন না।
এ জটিলতার সাময়িক সমাধান মিলেছে বটে, ২০২৫-২৬ মৌসুমে কিন্তু একই মাথাব্যথা পোহাতে হবে বার্সেলোনাকে। সে মৌসুমে শুরুর আগে লোকসান কমিয়ে আয়ের উৎস বৃদ্ধির পাশাপাশি ফুটবলারদের বেতন কাঠামোয় কাটছাঁট করতে হবে।
মন্তব্য করুন