শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচ-একাদশে তিনজন করে বিশেষজ্ঞ পেসার ও স্পিনার। তবে বোলারদের নেওয়া ৮ উইকেটের সবকটি নিলেন তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলামরা। দারুণ বোলিং করলেও উইকেটশূন্য থেকেছেন সাকিব আল হাসান, নাসুম আহমেদরা। বাংলাদেশের পেস ত্রয়ীই যে এখন পর্যন্ত এশিয়া কাপে পুরো দলের পারফরম্যান্সের সেরা প্রতিবিম্ব, পরিসংখ্যানই বলছে সে কথা। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের দৌড়েও পাকিস্তানের পরই বাংলাদেশ পেসারদের অবস্থান। তাদের ধারেকাছেও নেই বাকি চার দলের পেসাররা। বিশেষ করে ভারতের পেস ত্রয়ীর চেয়েও অনেকখানি এগিয়ে তারা। আর এমন দুর্দান্ত বোলিংয়ের প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন তাসকিন-শরিফুল-হাসানরা।
লঙ্কান ওপেনার দিমুথ করুনারত্নকে ফিরিয়ে ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন হাসান। তবে শেষটা করলেন তাসকিন; ৯৩ রান করা ব্যাটার সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচবন্দি করেন ডানহাতি এ পেসার। এতেই শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংসও। তবে বাংলাদেশ পেসাররা যে দুর্দান্ত বল করেছেন, সেটি আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন ভারতের সাবেক ব্যাটার ও বর্তমানে এশিয়া কাপের ধারাভাষ্য প্যানেলে থাকা সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার। এক টুইট (বর্তমান এক্স) বার্তায় তাসকিনদের প্রশংসায় ভাসিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ সত্যিই মুগ্ধকর। তিনজন মানসম্মত বোলারের মধ্যে আছেন শরিফুল, তাসকিন এবং বোকা বানাতে দক্ষ হাসান মাহমুদ।’ শুধু মাঞ্জেরেকারই নন, ধারাভাষ্য কক্ষের অন্য সদস্যদেরও পুরো ইনিংসজুড়ে তাসকিন-শরিফুলদের উন্নতি নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। এবারের টুর্নামেন্টে প্রশংসা করার মতোই পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পেসাররা।
টুর্নামেন্টে গতকাল শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস শেষে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া বোলারের তালিকার দুইয়ে ছিলেন তাসকিন। সমান ৯ উইকেট নিয়ে ইকোনমি ও গড়ে এগিয়ে থাকায় তাসকিনের ওপরে ছিলেন পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ। তাসকিনের পরের দুজন আবার পাকিস্তানের নাসিম শাহ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। পাঁচে আছেন আরেক বাংলাদেশি পেসার শরিফুল। উইকেট সংগ্রহের দিক থেকে বাংলাদেশি পেসাররা কতটা সফল, সেটি ছোট একটা পরিসংখ্যানেই ফুটে উঠেছে। ৩ ম্যাচ খেলা পাকিস্তানের নেওয়া মোট উইকেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৪টি উইকেট নিয়েছেন হারিস-নাসিমরা। স্বাভাবিকভাবেই সেখানেও দুইয়ে তাসকিন-হাসানরা। একাদশে অভিজ্ঞ সাকিব-মিরাজদের মতো বিশেষজ্ঞ স্পিনাররা নিয়মিত থাকার পরও ৪ ম্যাচে এখন পর্যন্ত ২৫ উইকেটের মধ্যে ২০টিই নিয়েছেন তারা। এতেই দেখা যায়, কতটা সাফল্যের সঙ্গে পারফর্ম করছেন তাসকিনরা।
শুধু তাই নয়, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকেই পেস বোলিংয়ে চোখে পড়ার মতো উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বলছে, গড় ও ইকোনমিতে পাকিস্তানের পরই সবচেয়ে সফল বাংলাদেশের পেস অ্যাটাক। সাম্প্রতি দেশে কিংবা বিদেশে খেলা বিভিন্ন সিরিজ ও টুর্নামেন্টেও তার ছাপ রেখেছেন তারা। লাহোরের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেট নিয়ে দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে অল্প পুঁজির ম্যাচে পেসারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখে প্রশংসা করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়কও। তাসকিন-শরিফুলদের হারিস-নাসিমদের সঙ্গে তুলনা করে সাকিব বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের মতো আমাদের বোলাররাও কয়েক বছর ধরে ভালো বোলিং করছে।’ তাসকিনরা যে ভালো করছেন, তা এখন তাদের পারফরম্যান্স দেখলেও বোঝা যায়।
মন্তব্য করুন