উইকেট বদল হলেও রং কিন্তু বদলাচ্ছে না। প্রথম ম্যাচের মতোই এবারও কালো মাটির উইকেটেই দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বাভাবিকভাবেই স্পিনিং উইকেট হচ্ছে—সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এবার এক ম্যাচ রেখেই সিরিজ নিশ্চিতে চোখ স্বাগতিক বাংলাদেশের। দলে বাড়তি স্পিনার হিসেবে যোগ দিয়েছেন বাঁহাতি নাসুম আহমেদ।
যদিও তার একাদশে সুযোগ পাওয়া ঘিরে কোনো নিশ্চয়তা দেননি সংবাদ সম্মেলনে আসা স্পিন কোচ মোস্তাক আহমেদ। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের চোখে মিরপুরের উইকেটে তিনিও আদর্শই বটে।
তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথমটি জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। আজ দুপুর ১.৩০ মিনিটে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় ম্যাচে তাই সিরিজ নিশ্চিত করতে চান মেহেদী হাসান মিরাজরা। গতকাল মিরপুরের মাঝ উইকেটে কঠোর অনুশীলন করতে দেখা গেছে তাদের। তবে বিশেষ করে স্পিনারদের দিকেই টিম ম্যানেজমেন্টের মনোযোগ বেশি চোখে পড়েছে। সেন্ট্রাল উইকেটের পাশেই দীর্ঘ সময় বোলিং করেছেন মিরাজ, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদরা। স্পিনারদের সেন্ট্রাল উইকেটে অনুশীলন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ফিল্ড পজিশনের ক্ষেত্রে আপনাকে খুবই চতুর হতে হবে। কখনো কখনো শুধু ফিল্ডার ঠিক জায়গায় রাখলেই ব্যাটসম্যানকে আউট করা যায়। কোনো ব্যাটসম্যান সামনের পায়ে বেশি খেলে, নাকি পেছনে, সেটা বুঝে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ৮৫ কিলোমিটারে বল করবেন, নাকি ৯০-এর ওপরে—এসব তথ্য আমরা দিয়েছি, বাকিটা ওদের কাজ।’
স্পিনিং উইকেটে পেসারদের কাজ নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ দায়িত্ব থাকে স্পিনারদের ওপরই। মিরপুরে সেরকমটা হচ্ছে। বড় দায়িত্ব নিতে হচ্ছে স্পিনারদের। সেক্ষেত্রে তাদের ওপর কোনো চাপ হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নে বাংলাদেশের এই স্পিন কোচ বলেন, ‘এমন উইকেটে আপনি রোমাঞ্চিত হবেন; কিন্তু রোমাঞ্চ যেন আপনার প্রক্রিয়া ভুলিয়ে দিতে না পারে। প্রক্রিয়াই সব। উইকেট পেতে হলে ভালো ওভার করতে হয়, শুধু ভালো বল নয়। স্পিনিং উইকেটে আমার বার্তা সহজ—টাইট ও ভালো বোলিং করে যাওয়া—উইকেট আসবেই। তোমরা প্রক্রিয়া ঠিক রাখো এবং বিশ্বাস রাখো।’ শুধু বোলারদেরই নয়। ব্যাটারদের ওপরও রান করা বড় চ্যালেঞ্জ রাখে এ ধরনের উইকেট।
প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ২০৭ রান ম্যাচের পরিস্থিতিই বদলে দিয়েছে। ব্যাটিং উইকেটে যা ২৬০-২৮০ রানের সমান; কিন্তু বাংলাদেশের স্পিনাররা দুর্দান্তভাবেই প্রতিপক্ষকে আটকে দিয়েছিল। ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জটা তাই মাথায় রেখে অনুশীলনে ছোট ব্যাটের ব্যবহার দেখা গেছে। কোচ বলেন, ‘ছোট ব্যাট মানে হচ্ছে, তোমার গ্র্যাভিটি লেভেল নিচে নামানো। স্পিনিং উইকেটে তোমার মাথা বলের খুব কাছে থাকতে হবে। যদি ফুটওয়ার্কে আলসেমি করো, স্পিনার সহজে আউট করে ফেলবে। ছোট ব্যাট দিয়ে অনুশীলনের মানে হলো সামনে বা পেছনে খেলো, মাথা যেন সবসময় বলের কাছাকাছি থাকে।’ বিষয়টির টেকনিক্যাল ব্যাখ্যার সঙ্গে ব্যাটারদের অবস্থানও পরিষ্কার করেন তিনি, ‘যখন ব্যাটাররা এমন ফুটওয়ার্ক ব্যবহার শুরু করে, তখন ভালো বলেও তারা সিঙ্গেল নেয়। আমি জানি, কেউ যদি আমার ভালো বলেও রান নিচ্ছে, তাহলে আমি ওকে পরের বলেই কিছু আলাদা দিতে বাধ্য হবো। তাই এই অনুশীলন খুব দরকারি।’ অনুশীলন তো হলোই। এবার দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজ নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন