প্রায় ২৩০ খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণের জাতীয় টেবিল টেনিসে খেলা হচ্ছে না নওরীন সুলতানা মাহী ও মো. রিফাত সাব্বিরের। খেলবেন কী করে? তারা যে ফেরারি! নারী ও পুরুষ র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে থাকা দুই প্যাডলারের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। যে কারণে তাদের জাতীয় আসরে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখছে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশেন। শীর্ষ পর্যায়ের দুই খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ করতে না পারার ইস্যুতে ফেডারেশনের ভূমিকা রহস্যজনক! উল্লিখিত দুই প্যাডলার সেনাবাহিনী টেবিল টেনিস দলের সদস্য। দুজন সংস্থা থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। ছুটি শেষে যথাসময়ে সেনাবাহিনীতে রিপোর্ট করেননি। আর্মি অ্যাক্ট অনুযায়ী ৬০ দিন অপেক্ষার পর দুই খেলোয়াড়কে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই প্যাডলারকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ না দিতে ফেডারেশনে পত্র দিয়েছে সংস্থাটি। কিন্তু আইনি জটিলতায় দুই খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ না করার বিষয়টি রহস্যজনকভাবে চেপে যেতে চাইলেন ফেডারেশন কর্মকর্তারা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন, ‘জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ঘরোয়া সর্বোচ্চ আসর। এ আয়োজনে তো র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা সব খেলোয়াড়ই অংশগ্রহণ করবেন।’ সুনির্দিষ্টভাবে দুই খেলোয়াড় সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক সুর বদলে বলেন, ‘হ্যাঁ, তাদের বিষয়ে সেনাবাহিনীর আপত্তি আছে। আমরা দুই খেলোয়াড়কে বলেছি, সংস্থা থেকে অনাপত্তি পত্র নিয়ে আসতে। অনাপত্তি পত্র নিয়ে এলে তাদের খেলার বিষয়ে কোনো জটিলতা নেই।’ মাহী ও সাব্বির সর্বশেষ কমনওয়েলথ ও ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দুই খেলোয়াড়ের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আসরে অংশগ্রহণের অচলাবস্থা কবে নাগাদ কাটতে পাবে—প্রশ্নের উত্তর জানা নেই ফেডারেশন কর্মকর্তাদের। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী থেকে নির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ করা হয়েছে কি না—জানতে চাওয়া হলে শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নেই। দুই খেলোয়াড়ই মার্সি-পিটিশন করেছেন। আশা করছি, এ সমস্যা দ্রুতই সমাধানের পথ খুঁজে পাবে।’ এবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। বন্দর নগরীর রাইফেলস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হবে আসরটির খেলা। পাঁচ বিভাগ, ২৮ জেলা, তিন সার্ভিসেস দল ও একটি বিশ্ববিদ্যালয় এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করছে। দল ও সংস্থাগুলোর ১১৩ পুরুষ, ৪৩ নারী, ৪৬ বালক ও ২৮ বালিকা অংশগ্রহণ করবেন। ২২ লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে আসরের আয়োজক চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা দিচ্ছে ১৩ লাখ টাকা। বাকি ৯ লাখ টাকার মধ্যে ইউসিবি ৫ লাখ ও পোলার আইসক্রিম দিচ্ছে ৪ লাখ। গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়। সম্মেলনে টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন, সহসভাপতি খোন্দকার হাসান মুনীর, সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম, মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান সাইদুল হক সাদীসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন