কৃষিবিদ গ্রুপের ‘কৃষি ফাউন্ডেশন’ দ্বারা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘গ্লোরিয়াস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাভারের বিরুলিয়ায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রথমে কয়েক মাস বেতন পরিশোধ করে। পরে বেতন আটকে রেখে পারিশ্রমিক ছাড়াই শিক্ষকতা করায়। একসময় শিক্ষকরা চলে যেতে বাধ্য হন; কিন্তু তাদের বকেয়া পরিশোধ করা হয় না। নেওয়া হয় নতুন শিক্ষক। এভাবে বহু শিক্ষকের বেতন আটকে প্রতারণা করছে তারা।
বছরের পর বছর ঘুরেও সেই বকেয়া বেতন পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সাবেক আট শিক্ষকের দাবি, গ্লোরিয়াস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর কয়েকমাস নিয়মিত বেতন পেলেও ধীরে ধীরে বেতন অনিয়মিত হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে দু-তিন মাস অন্তর অন্তর বেতন দিতে থাকে। একপর্যায়ে বেতন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বারবার গভর্নিং বডির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কিছু হয়নি। বাধ্য হয়ে একে একে সবাই পদত্যাগ করে চলে যান। স্কুলটিতে এখনো যারা শিক্ষক হিসেবে আছেন, তারাও প্রত্যেকে দু-তিন লাখ টাকা করে পাবেন।
আট শিক্ষকের মধ্যে সাবেক অধ্যক্ষ জোবায়ের হাসান ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা বকেয়া বেতন পাবেন। এ ছাড়া সাবেক সহকারী শিক্ষক শায়লা শারমিন ২ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা, রাশেদুল হাসান ১ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকা, কুমকুম রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৪৩৫ টাকা, মাহমুদা ইসলাম মুক্তা ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪০০ টাকা, মো. মাজহারুল ইসলাম ১ লাখ ৩২ হাজার ২৪০ টাকা, হুমায়রা বিনতে তালুকদার ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬০ টাকা ও মো. আব্দুল আজিজ বকেয়া বেতন বাবদ ৮৯ হাজার ৪৮০ টাকা পাবেন।
শিক্ষকরা জানান, পদত্যাগ করে চলে আসার পরও দুই বছর ধরে পাওনা টাকা আদায়ে বিভিন্ন জনের কাছে গেছেন। গভর্নিং বডির সব সদস্যই সাফ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কারও কিছু করার নেই। এরপর তারা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. আলী আফজালের সঙ্গে। অসংখ্যবার ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দেওয়া হলেও তিনি কারও ফোন ধরেননি বা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের জবাব দেননি।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অধ্যক্ষ জোবায়ের হাসান বলেন, যোগদানের প্রথম এক-দুই মাস ঠিকমতো বেতন পেয়েছি। এরপর তৃতীয় মাস থেকেই বেতন অনিয়মিত। মাঝেমধ্যে দিত, আবার দিত না। এভাবে বকেয়া হতে থাকে। এটি একটি প্রতারণামূলক কৌশল। তারা কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়। কিছুদিন কাজ করিয়ে আর নিয়মিত বেতন দেয় না। তখন বাধ্য হয়ে শিক্ষকরা অন্যত্র চলে যান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্কুলের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম এবং গভর্নিং বডির সদস্য কৃষিবিদ গ্রুপের এমডি ড. আলী আফজালকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ধরেননি। পরে মেসেজ পাঠালেও কোনো সাড়া দেননি।